১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুন্সীগঞ্জ মোল্লাকান্দিতে গোলাগুলিতে শিশুসহ ১০ জন গুলিবিদ্ধ

প্রশাসনকে দায়ী করেছে উভয়পক্ষ
-

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বিদেশী অস্ত্র নিয়ে গোলাগুলির আতঙ্ক থামছে না। একের পর এক গোষ্ঠী বা দল এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রকাশ্যে বোমাবাজি, গুলি করে মানুষকে আহত ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। এই ঘটনা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশুসহ মহিলারাও।
মুন্সীগঞ্জ সদরের চরাঞ্চল মোল্লাকান্দিতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত সাতজন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মুন্সীকান্দি, ঢালীকান্দি, নোয়াদ্দা ও লক্ষ্মীদিবি গ্রামে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী ও সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনার সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে আহত ফারুক হোসেনকে (২০) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পরান মোল্লা (১২) ও সুমন মোল্লাকে (১৮) ঢাকার চক্ষু হাসপাতালে প্রেরণ করেছে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক। তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আহত রাসেল (২৮), পারভেজ (২৭), শরীফ (২৮), নীরব (২৪) ও সোহেলকে (২৫) স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়।
মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা জানান, সকালে ঢালীকান্দি গ্রামে তার এক সমর্থককে মারধর করে প্রতিপক্ষ ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারীর সমর্থকরা। এ ঘটনার জের ধরে দুপুরে ওই গ্রামে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে অপর গ্রামগুলো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জন্য তিনি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের দায়ী করেন।
মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী সংঘর্ষের জন্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের দোষারোপ করেছেন। তিনি জানান, ঢালীকান্দি গ্রামে তার এক সমর্থককে মারধর করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারী মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অপর দিকে সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা একই কমিটির (বহিষ্কৃত) মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বলে জানা গেছে।


এ বিষয় ইউপি সংরক্ষিত সদস্য (৪,৫,৬) পলি আক্তার বলেন এলাকায় প্রচুর অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষই মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে। আমার ছোট ভাইকেও ছাড় দেয় নাই ওরা। প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে বলে পলি তার সেলফোনে সাংবাদিকদের জানান। কাদের হাতে অস্ত্র নিয়ে নামতে দেখেছেন এমন প্রশ্ন করলে পলি আক্তার বলেন, আমি জানি কারা গুলি করেছেন, সকলকেই আমি চিনি। তবে পরে নাম প্রকাশ করব। এ বিষয় কথা বলেন সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা। তিনি বলেন, বারো বছরের মনু মোল্লা বন্দুক নিয়ে আমাদের লোকদের ওপর হামলা করে। পুলিশকে দায়ী করে তিনি বলেন, পুলিশের সামনে দিয়েই ৩/৪ শত লোক আমাদের লোকদের ওপর হামলা করেছে। যখন বলা হয় মনু মোল্লাও (১২) আহত হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি। তবে সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা বলেন পুলিশ সঠিক কোনো ভূমিকা না নেয়ায় মাসের পর মাস আমাদের লোক মার খাচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
এই বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারীর সাথে আলাপকালে তিনিও থানা পুলিশের ওপর দোষারোপ করে বলেন পুলিশের কারণেই একের পর এক আমাদের ইউনিয়নে মারামারি লেগেই আছে।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেল থানার খাইরুল ইসলাম বলেন, আমিসহ আমার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিলাম। পাঁচজন পুলিশের পক্ষে এত লোক সামাল দেয়া কঠিন। তবে এই বিষয়ে এলাকার সবার সহায়তা প্রয়োজন। নিজ থেকে কেউ এলাকার শান্তি না চাইলে এই ধরনের সন্ত্রাসী কাজ বন্ধ করা সম্ভব নয়। কেউ আটক আছে কি না বা মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সদর সার্কেল থানার খাইরুল ইসলাম বলেন অভিযোগ দিতে কেউ আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement