১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাংলাদেশের মানুষ পছন্দের সরকার নির্বাচন করতে পারা উচিত : মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

-

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের নিজেদের পছন্দের সরকার নির্বাচন করতে পারা উচিত। আর এটাই বিশ্বের যেকোনো স্থানের মতো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনুসৃত নীতি।
গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত ইএমকে সেন্টারে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। এতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ গণমাধ্যম কর্মী ও সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের সাথে সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক নির্বাচনের মানদণ্ডের ওপর আলোকপাত করে পিটার হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার জার্জিয়াভিত্তিক কার্টার সেন্টার বিশ্বব্যাপী নির্বাচনের একটি মানদণ্ড প্রকাশ করেছে। আর তা হলো, সম্পাদকীয় স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকবে, যা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হবে। গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করতে পারবে। অন্যের দেয়া বক্তব্য প্রকাশের জন্য গণমাধ্যমকে দায়ী করা যাবে না। অবমাননাকর দাবি করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন করা যাবে না এবং সাংবাদিকরা হয়রানি ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষিত থাকবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি আশা করি নির্বাচনের মৌসুম এবং এর পরবর্তী সময়ে এই পাঁচ নীতি সমুন্নত থাকবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষা করা, ভয়ভীতি, হয়রানি ও সেন্সরশিপ থেকে মুক্ত থেকে সাংবাদিকদের কাজ করা এবং প্রতিবেদন প্রকাশ করতে দেয়ার অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের সবার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। একটি বৈধ ও মুক্ত গণতন্ত্রের অন্যতম উপাদান মুক্ত গণমাধ্যম।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতারা মুক্ত গণমাধ্যমকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন। আর এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে গণমাধ্যমের অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে। তবে তাই বলে মুক্ত গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র নিখুঁত নয়। সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টাস উইথআউট বর্ডারের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ৪২। সত্য কথা হলো, এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আরো ভালো করার প্রয়োজন রয়েছে। অন্য দিকে একই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬২। সূচকে আগের বছরের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান দশ ধাপ নেমে গেছে। আর এর একটি অন্যতম কারণ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ)। এটিকে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন আইন হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
ডিএসএ’র ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র পরিষ্কারভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উল্লেখ করে পিটার হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন এবং বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আমাদের বৈঠকে এই উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। সরকার যদি কোনো প্রতিবেদনকে মিথ্যা, আক্রমণাত্মক, অবমাননাকর বা মানহানিকর মনে করে, তবে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই আইনে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। আমরা ডিজিটাল, সামাজিক গণমাধ্যম এবং ওটিপি প্লাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেরটরি কমিশনের আইনের খসড়া এবং ডাটা সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়েও উদ্বিগ্ন। এই খসড়াগুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে এই আইনগুলোর মাধ্যমে সাংবাদিক ও অন্যদের আরো ভয়ভীতি দেখানোর জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement