২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রৌমারীতে ক্ষমতার অপব্যবহারে অধ্যক্ষ বরখাস্ত

-

অধ্যক্ষ অবৈধভাবে বরখাস্ত। অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা। অনুমোদনকৃত শিক্ষক প্রতিনিধি বাদ, নিজের মনগড়া প্রতিনিধি বানিয়ে সভা। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দায়িত্ব অর্পণ করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ। অতঃপর দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন। ১০ অক্টোবর দুপুরে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ডিগ্রি কলেজে এ ঘটনা ঘটে। কলেজের শিক্ষক কমিটির মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় এলাকার সুধীমহলে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, যাদুরচর ডিগ্রি কলেজে গভর্নিং বডির জন্য গত ৩০ ডিসেম্বর ২০ সালে ৬ মাস মেয়াদে একটি এডহক কমিটি অনুমোদন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ গভর্নিং বডি গঠনের লক্ষ্যে তিনজন অভিভাবক, তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধি, একজন প্রতিনিষ্ঠাতা, একজন দাতা, একজন হিতৈষী সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করেন অধ্যক্ষ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ সপ্টেম্বর দুই বছর মেয়াদে পূর্ণাঙ্গ গভর্নিং বডির অনুমোদন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন সভাপতির আব্দুস সালাম মণ্ডলের আহ্বানে প্রথম সভা বসে ২৮ সেপ্টেম্বর। পরিচিতি পর্বে সভাপতি মনমতো সদস্য নির্বাচিত হয়নি মর্মে সভার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেন। পরবর্তী সময়ে অনুমোদনকৃত তার অপছন্দের সদস্যদের বাদ দিয়ে মনগড়াভাবে তার পছন্দের লোককে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেন।
পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম জানান, আইনবহির্ভূতভাবে মনগড়া পরিচালনা বোর্ডের সদস্য ছাঁটাই ও অন্তর্ভুক্ত করে তাকে গত ১০ অক্টোবর পুনরায় সভা আহ্বানের নির্দেশ দেন। সভাপতি নির্দেশনাপত্রে গভর্নিং বডির সদ্যসদের তালিকায় অনিয়ম থাকায় তিনি সভাপতির ডাকা সভা আইনগতভাবে সিদ্ধ হবে না মর্মে তিনিসহ ৯ জন সদস্যের স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে সভাপতিকে দেয়া হয়। এতে তিনি আরো ক্ষিপ্ত হন। তিনি বলেন, এরই জের ধরে সভাপতি আব্দুস সালাম আমাকে না জানিয়ে দাতা সদস্য মজিবর রহমান বঙ্গবাসীসহ তাদের মনগড়াভাবে অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের নিয়ে সভা করেন। সভায় নিয়মবহির্ভূতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে বরখাস্ত করেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করেন অধ্যাপক শফিকুল ইসলামকে। পরে তারা অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ বিষয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে কলেজের সভপতি আব্দুস সালাম মণ্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা যাদের নাম পাঠানোর জন্য বলেছি অধ্যক্ষ তাদের নাম বাদ দিয়ে তার পছন্দের লোকের নাম পাঠিয়ে অনুমোদন নিয়েছেন। তাই আমি অনুমোদিত সদস্যদের বাদ দিয়ে আগের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করেছি।
দাতা সদস্য মজিবর রহামন বলেন, আমি একসময় এই কলেজের সভাপতি ছিলাম। সে সময় অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম আমার স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতি করে কলেজে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান জানান, এ ঘটনায় অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে কলেজ পরিচালনা পর্শদের সভাপতি আব্দুস সালাম মণ্ডল, দাতা সদস্য মজিবর রহমান বঙ্গবাসী, সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, প্রভাষক রফিকুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর আহমেদ ও অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার মুক্তার হোসেনকে নিয়ে দুই সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement