২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
কমিটি গঠনে তারেক রহমানের দিকনির্দেশনা

নারায়ণগঞ্জ জেলার ৭ থানা ও পৌর বিএনপির কমিটি শিগগিরই হচ্ছে না

-

শিগগিরই হচ্ছে না নারায়ণগঞ্জ জেলার সাতটি থানা ও পৌর বিএনপির কমিটি। প্রস্তুতির শেষপর্যায়ে এসে স্থগিত হয়ে যায় কমিটি গঠন। এর আগে কমিটি গঠন নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতরে জমা পড়ে। এ নিয়ে সম্প্রতি বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতারা চাচ্ছেন কোনো বির্তক নয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি যেন হয় নির্ভেজাল। ফলে কমিটি গঠন নিয়ে আরো যাচাই-বাছাই চলছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার গত শনিবার রাতে নয়া দিগন্তকে জানান, ঐক্যমতের ভিত্তিকে আগামী দিনে নারায়ণগঞ্জ জেলার সাত থানা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠন করা হবে। হঠাৎ করে কেন কমিটি গঠন স্থগতি করা হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কিছু অভিযোগ রয়েছে। এটা শীর্ষপর্যায়ের নেতারা জেনেছেন। তবে এটা দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। অনেকে সময় সব কিছু বলাও যায় না।
তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমি চাচ্ছি ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেন কমিটি হয়। তবে অনেক সময় শতভাগ সম্ভব হয় না। রাজপথে যাদের ভূমিকা আছে তা বিচার বিশ্লেষণ করে তাদের নাম কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কমিটি গঠনের ব্যাপারে আমাদের কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সে আলোকে আমরা কাজ করছি। তার নির্দেশনা ছিল রাজপথে যাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি তাদের যেন কমিটিতে সুযোগ দেয়া হয়।
তিনি বলেন, আগামী দিনে চরম সঙ্কট আসছে। সে সঙ্কটের দিনে কারোর সাথে কোনো কম্প্রোমাইজ করার সুযোগ নেই। তারেক রহমান যে নির্দেশনা দিয়েছেন তার আলোকে আমরা এগোচ্ছি। আগামী দিনে সঙ্কট উত্তরণের জন্য রাজপথে সবচেয়ে ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করার চেষ্টা করা হবে।
সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার সাত থানা ও পৌর কমিটি গঠন নিয়ে রাজধানীর একাধিক স্থানে দলের নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়। এর মধ্যে রাজধানীর ৭১ হোটেল ও রাজধানী সিদ্ধিশ্বরীতে সোনারগাঁও বিএনপি নেতা মোশারফের বাসভবনে বসে কমিটি গঠনের কাজ চলে। এ ছাড়া ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব পান্না মোল্লার পল্টনস্থ অফিসে বসে কমিটি গঠনের বিষয় আলোচনা হয়। এসব বৈঠকে কমিটি গঠন নিয়ে অনেকে অভিযোগ আসে।
সূত্র জানায়, রাজনীতির মাঠে নিষ্ক্রিয় কাজী মনিরুজ্জামান ও বিএনপি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা শাহ আলমের অনুগত লোকজনকে কমিটিতে রাখতে জোর চেষ্টা হচ্ছে। সেদিক বিবেচনা করেই তারা দুইজন মামুন মাহমুদের মাধ্যমে রূপগঞ্জ, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ কমিটিতে বিতর্কিত এবং নিজস্ব লোকদের দিয়ে কমিটি বাগিয়ে নিতে চাচ্ছেন। অপর দিকে সোনারগাঁওয়ে মোশারফ নামে একজনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত নিয়ে বির্তক তৈরি হয়। দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, জেলার ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁ ও রূপগঞ্জ থানা কমিটি গঠনে শাহ আলম ও কাজী মনিরের প্রেসক্রিপসন অনুযায়ী কমিটিতে জায়গা করে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন। জেলা বিএনপির রাজনীতিকে কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে মামুন মাহমুদকে দিয়ে নিজেদের ঘনিষ্ঠজনদের কমিটিতে স্থান করে দিতে চাচ্ছেন।

সূত্র জানায়, ফতুল্লা থানা কমিটিতে যাকে আহ্বায়ক করতে চাচ্ছেন সেই রোজেল নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে ওয়ানম্যান শো নেতা হিসেবে পরিচিত। তার শিক্ষাগতযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। রোজেল এক সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের নয়ামাটিস্থ শিল্পী নামক একটি ছাপা কারখানায় কাজ করতেন। সদস্য সচিব হিসেবে যার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে সেই পান্না মোল্লার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এর মধ্যে নিজ দলের নেতাকর্মীদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি করার অভিযোগসহ ফতুল্লা পিলকুনীতে একটি কবরস্থানের জমি দখলের চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জে শাহ আলম হীরাকে সদস্য সচিব করার জন্য লিখিত প্রস্তাব দেয়া হয়। তার বিষয়ে অনেক অভিযোগ করেন নেতাকর্মীরা। আলোচিত নুর হোসেনের সাথে এক সময় তার সম্পৃক্ততা আলোচনায় আসে। হীরার ভাই বরকত আলী বাপ্পা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার আরেক ভাই খোরশেদ আলম মনা শ্রমিক লীগ ও আন্তঃজেলা ট্রাক চালক সাইলো শাখার যুগ্ম সম্পাদক।
সোনারগাঁও থানা বিএনপির সদস্য সচিব হিসেবে মোশাররফের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি উপজেলা নির্বাচনে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কালামের পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে ভোট চেয়েছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement