২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন

প্রাণিখাদ্যের উপকরণ সয়াবিন মিল রফতানি বন্ধের দাবি

-

প্রাণিখাদ্য তৈরির প্রধান উপকরণ ‘সয়াবিন মিল’-এর ‘কৃত্রিম সঙ্কট’ সৃষ্টির অভিযোগ এনে এর রফতানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে সংগঠনটি। তাদের দাবির প্রতি সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশ ফিস ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন। এর আগে সম্প্রতি একই দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ মালিকরা। প্যাকেটজাত হিমায়িত গোশত আমদানি বন্ধ করা, খামারিদের বিদ্যুৎ বিল কৃষি শ্রেণীর আওতাভুক্ত করা, তরল দুধের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা, পশুখাদ্যের দাম কমাতে টিসিবির মাধ্যমে সরবরাহ করারও দাবি জানানো হয় গতকালের সংবাদ সম্মেলনে।
ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, সরকার ‘সয়াবিন মিল’ রফতানির সিদ্ধান্ত নেয়ার পর উৎপাদনকারীরা এর দাম কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। উৎপাদনকারীরা স্থানীয় বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সয়াবিন মিল রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে বাজারে দ্রুত সরবরাহ দেয়া দরকার। নইলে দেশের পোলট্রি, মৎস্যসহ প্রাণিসম্পদ খাতে খাদ্যের দাম বেড়ে যাবে। খামারিরা বড় ধরনের লোকসানে পড়বে।’
অভ্যন্তরীণ সঙ্কট দেখা দিলে কিংবা দাম বেড়ে গেলে ভারত যে চাল, পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের রফতানি বন্ধ করে দেয়, সে কথা তুলে ধরে বাংলাদেশকে সরকারকেও একই পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান ইমরান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অন্য দেশের শিল্পের স্বার্থে রফতানি উন্মুক্ত করে দিয়ে কার্যত দেশীয় ডিম, দুধ, মাছ, গোশত ও ফিড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অতি দ্রুত সয়াবিন মিল রফতানি বন্ধ করে দেশী শিল্পকে রক্ষার জন্য আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি।
ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের এই নেতা জানান, পোলট্রি ও গবাদিপশুর খাদ্যের পেছনেই খামারিদের সবচেয়ে বেশি খরচ করতে হয়; যা মোট খরচের ৬৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা প্রাণীখাদ্যের প্রধান উপকরণ হলো ‘সয়াবিন মিল’ বা ‘সয়াবিন এক্সট্রাকশন’, চালের গুঁড়ো, গমের ভুসি, ডালের ভুসি প্রভৃতি। পোলট্রি ও গবাদিপশুর দেহ গঠনে অন্যতম খাদ্য উপকরণ ‘সয়াবিল মিল’। ডিম, মাছ, মুরগির খামারেও খাদ্যের পেছনে এর খরচ প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফিডের দাম বাড়লে খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়বে। অন্য দিকে খরচের বিপরীতে পণ্যের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় বড় অঙ্কের লোকসানের মুখে পড়তে হবে খামারিদের।’ ইমরান বলেন, পোলট্রি, ডেইরি ও প্রাণিখাদ্য তৈরিতে যে কাঁচামাল ব্যবহার হয়, তার মধ্যে ভুট্টা, সয়াবিন মিল, গম, আটা, ময়দা, ভাঙা চাল, চালের কুড়া, ফিস মিল, সরিষার খৈল, তেল, ভিটামিন, মিনারেল প্রভৃতি অন্যতম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ভুট্টা ও ‘সয়াবিন মিল’।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আলী আজম রমহান শিবলী, সাধারণ সম্পাদক শাহ এমরান, অর্থ সম্পাদক জাফর আহমেদ পাটোয়ারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজিব উল্লাহসহ অনেকে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement