২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জনবল সঙ্কটে মহানগর হাসপাতালে চালু হচ্ছে না করোনা চিকিৎসা

-

দেশে করোনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। সাথে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে সমানতালে। মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসায় সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সঙ্কট চলছে। বেশির ভাগ হাসপাতালেই বর্তমানে আইসিইউতে রোগী ভর্তি রয়েছে। কেউ মারা গেলেই কেবল খালি হচ্ছে আইসিইউ। এমনকি কিছুটা কম আশঙ্কাজনক রোগীদের হোটেলে রেখে চিকিৎসা দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সেখানে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। এমনকি সেখানে পাঁচটি আইসিইউ এবং ১৫টি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) থাকা সত্ত্বেও জনবলের অভাবে তা চালু করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির পরিচালক জানিয়েছেন অনেক আবেদন নিবেদন জানানোর পরও আমরা হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারিনি। জনবল সঙ্কটে আইসিইউ-এইচডিইউও চালু করা যাচ্ছে না।
পুরান ঢাকার নয়াবাজার এলাকার মহানগর জেনারেল হাসপাতালে গত বছর ১৫০ শয্যার হাসপাতালটির ১০০ শয্যা করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়। তখন হাসপাতালের অন্য চিকিৎসাসেবাও বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু এ বছর মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ প্রকট রূপ নিলেও হাসপাতালটির করোনা বিভাগ এখনো চালু হয়নি। জানা গেছে, প্রায় সব প্রস্তুতি থাকার পরেও ডাক্তার ও নার্স চাহিদা মতো না পাওয়ায় চালু করা যাচ্ছে করোনা বিভাগ। হাসপাতালটিতে দায়িত্বরতরা জানান, ডাক্তার ও নার্স চেয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে চাহিদা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালটিকে করোনা রোগীর সেবা চালু করতে ৫৬ জন মেডিক্যাল অফিসার ও ৬০ জন নার্স চাওয়া হয়েছে। এখানে সাধারণ ওয়ার্ডে ৪০ জন ডাক্তার, ৪০ জন নার্স এবং আইসিইউর জন্য ১৬ জন ডাক্তার ও ২০ নার্স কাজ করবেন। এছাড়া কিছু টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ড বয় ও ক্লিনারের চাহিদাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী জনবল পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেই সেবা চালু হবে।
ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল পরিচালনা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের বলেন, হাসপাতালের পক্ষ থেকে চাহিদার বিপরীতে কিছু চিকিৎসক, নার্স দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে করোনার জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসক এখনো দিতে পারেনি। এছাড়া হাই-ফ্লো ন্যাজাল টেকনিশিয়ানও বিশেষায়িত লাগে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। কিন্তু সেই প্ল্যান্ট থেকে আইসিইউ পর্যন্ত যে লাইন সেখানে একটা ফিল্টারিং লাগে, সেটা এখনও বসাতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তিনি আরো বলেন, রেগুলার ডিউটির জন্য ডাক্তার দিয়েছে, কিন্তু আইসিইউ, এইচডিইউ পরিচালনা করার জন্য যেসব বিশেষ ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান এখনও দিতে পারেনি। তাই মহানগর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঝুঁকি নিচ্ছে না, করোনা রোগীসহ পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে যখন সার্ভিস দিতে পারবে না, তখন সমালোচনা বেশি হবে। আবু নাছের আরো বলেন, বিশেষায়িত ডাক্তার চেয়ে ইতোমধ্যে তিনবার বলা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। ডিএসসিসি মেয়র সংশ্লিষ্ট সচিবের সাথে কথাও বলেছেন এ বিষয়ে। চাহিদা অনুযায়ী জনবল পেলেই হাসপাতালটিতে সেবাগুলো চালু হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা: প্রকাশ চন্দ্র রায় নয়া দিগন্তকে বলেন, হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা চালুর জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কয়েক দফা আবেদন করা হয়েছে কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ জন্য এখনো করোনা চিকিৎসা চালু করা সম্ভব হয়নি। আইসিইউ, এইচডিইউ পরিচালনা করার জন্য যেসব বিশেষ ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান প্রয়োজন তা না দেয়ায় চালু করা যাচ্ছে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement