২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ত্ব-হার স্ত্রীর ফোনে মুক্তিপণ চেয়ে চ্যাটিং

-

ইসলামী ইউটিউবার ও বক্তা আহছানুল আদনান ওরফে আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনানের প্রথম স্ত্রী আবিদা নুরের মোবাইল ফোনে আসা মুক্তিপণ দাবিকারী মেহেদি হাসান পরিচয়ধারী ব্যক্তির এখন পর্যন্ত কোনো অস্তিত্ব পায়নি পুলিশ। তবে তার ইমোতে চ্যাটিংয়ের সময় ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। অন্য দিকে ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারটি থেকে মেসেজ রিপ্লাই করা না হলেও সিন করা হচ্ছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, ইন্টারনেটভিত্তিক নম্বর থেকে নিখোঁজ ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের স্ত্রীর কাছে ফোন আসা সেই মেহেদী হাসানকে এখনো ট্রেসিং করা সম্ভব হয়নি। তার কোনো অস্তিত্বও পাওয়া যায়নি। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে মেসেজ সিন হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আদনানের বোন রিতিকা রুবাইয়াত ইসলাম অনন্যা জানান, ‘নিখোঁজ হওয়ার পরের দিন শনিবার সন্ধ্যায় ইন্টারনেটভিত্তিক আলাপ নম্বর ০৯৬৯৬৯৭৭০৬৪৭ থেকে আমার ভাবি আবিদা নূরের মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। (ওই নাম্বারটি আমার ভাইয়া ব্যবহার করতেন, কিন্তু বহুদিন থেকে সেটি বন্ধ ছিল)। ফোনের ওপার থেকে নিজেকে মেহেদি হাসান পরিচয় দেন এক ব্যক্তি। বলেন, আদনানসহ অন্যরা তাদের কাছে আছে। টাকা-পয়সা দিলে ছেড়ে দেয়া হবে। এ সময় তিনি ইমু নাম্বার খুলতেও বলেন। পরে ফোন কেটে দেন। পরে আমরা বারবার ট্রাই করলেও ওই ফোনে কল ঢুকেনি। ভাবির নাম্বারে আমি ইমু খুললেও ইমুতে মেসেজিং করেন এবং সেখানেও তিনি একই ধরনের কথা বলেন ও টাকা চাওয়ার বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বলেন। ইমোর প্রোফাইলে মেহেদী একটি ছবিও ব্যবহার করেন।’
ইমোর চ্যাটিংয়ের স্ক্রিন শটে দেখা যায়, ‘রাত ৮ টা ৭ মিনিটে মেহেদী হাসান প্রথম বলছেন হ্যালো। এরপর তিনি আবারও লেখেন আসসালামু আলাইকুম। এরপর লেখেন ‘আদনান মুহিত ও ফিরোজ সবাইকে পাবেন’। এরপর লেখেন ‘কাউকে বলা যাবে না’। পরে লেখেন ‘হ্যালো’? তারপর আদনানের স্ত্রীর পক্ষ থেকে লেখা হয় ‘জি ইনশা আল্লাহ কেউ জানবে না।’ এরপর মেহেদী হাসান আইডি থেকে লেখা হয়, ‘আমি প্রসেস বলে দেবো, বাট আমি কিছু টাকা নেবো।’ তারপর লেখা হয় ‘কই’। রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলে ওই চ্যটিং। এরপর একটি মেসেস লেখা হলেও সেটি ডিলিট করা হয়।
অনন্যা আরো জানান, ‘রোববার সন্ধ্যায় ঠিক একই সময়ে বেশ কয়েকবার আমার ভাইয়ের টেলিটক মোবাইল ফোন থেকে আবারো ভাবির নম্বরে ফোন আসে। ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা ফোন ধরতে পারিনি। কিছুক্ষণ পর ভাইয়ার ওই টেলিটক ফোনে ভাবির নম্বর থেকে কল ব্যাক করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে রাত ১১টায় ইন্টারনেটভিত্তিক আলাপ নম্বরে ফোন দেই ভাবির ফোন থেকে। অপরপ্রান্ত থেকে মেহেদী হাসান নামের ওই ব্যক্তি ফোনটি ধরেন এবং বলেন আপনাদের টাকা জোগাড় হয়েছে কি? টাকা দিলে আদনানদের ছেড়ে দেবো।’
অনন্যা বলেন, ‘এ সময় আমি ফোনটি আমার মায়ের কাছে দেই। আমার মা তখন ফোনে তাকে বলেন, আমি আমার ছেলের কণ্ঠ চিনি। আপনি আমার ছেলেকে দেন তার সাথে কথা বলি। তারপর টাকা জোগাড় করবো। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে সেটি না করে রাগ করে ফোন কেটে দেয়া হয়। এরপর ওই নম্বর দু’টিতে আমরা বারবার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাচ্ছি।’
অনন্যা আরো বলেন, ওই টেলিটক নম্বরটি দিয়েই আমার ভাইয়ের হোয়াটসঅ্যাপ খোলা। হোয়াটসঅ্যাপে আমি বিভিন্ন ধরনের মেসেজ পাঠাচ্ছি। কিন্তু কোনো রিপ্লাই পাচ্ছি না। তবে আমার মেসেজগুলো সিন করা হচ্ছে। অনন্যা বলেন, সব বিষয়গুলো আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশের কাছে তো সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আছে। যেখানে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ সিন করা হচ্ছে। তাহলে হোয়াটসঅ্যাপের সূত্র ধরে কেন আমার ভাইসহ অন্যদের উদ্ধার করা হচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement