দীর্ঘমেয়াদি আয়কর নীতি চায় বিকেএমইএ
- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ১১ এপ্রিল ২০২১, ০০:৫২
বিনিয়োগ জোরদার এবং হয়রানি বন্ধে দীর্ঘমেয়াদি আয়কর নীতি চেয়েছেন তৈরী পোশাক খাতের অন্যতম সংগঠন বাংলাদেশ নিট ওয়্যার প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) উদ্যোক্তারা। একই সাথে ভ্যাটের আওতামুক্ত রফতানি খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি মাসে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা।
আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) জন্য বাজেটে অর্থমন্ত্রীর কাছে দেয়া বিকেএমইএর ১২ দফা প্রস্তাবনায় এ দাবি জানানো হয়। বিকেএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রস্তাবনায় স্বাক্ষর করেন।
দাবিগুলোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোহাম্মদ হাতেম গতকাল বৃহস্পতিবার নয়া দিগন্তকে জানান, আগে প্রতিটি রফতানি চালানের বিপরীতে উৎসে কর কেটে রাখা হতো। এতে সরকার যেমন সাথে সাথে প্রকৃত মূল্যভেদে রাজস্ব পেতো, তেমনি রফতানিকারকরাও হয়রানি থেকে মুক্ত হতো। কিন্তু এখন উৎসে কর কেটে রাখার প্রথা প্রত্যাহার করে বছর শেষে রাজস্ব কর্মকর্তারা হিসাব-নিকাশ করে বড় অঙ্কের রাজস্ব দাবি করে থাকে। এটা একদিকে রফতানিকারকদের বড় অঙ্কের কর দেয়া যেমন কষ্টদায়ক, তেমনি অনেক সময় তারা হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। এতে সরকার কাক্সিক্ষত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। তিনি মনে করেন, উৎসে কর কাটার বিধান চালু করা হলে বর্তমানের চেয়ে চার গুণ বেশি রাজস্ব আদায় হবে। তিনি বলেন, মূসক ও সম্পূরক শুল্ক নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যেক রফতানি চালানের সাথে মূসক দাখিল করতে হয় এবং প্রত্যেক রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানকে প্রতি মাসে তার মাসিক বিক্রি এবং ভ্যাট প্রদানের তথ্যসংবলিত মূসক দাখিল করতে হয়। তিনি বলেন, শতভাগ রফতানিমুখী পোশাক শিল্প ভ্যাটমুক্ত, তাই এ মূসক দাখিল একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। এ কর্মকাণ্ড থেকে সরকারের কোনো রাজস্ব আদায় হয় না। কিন্তু এ আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এ হয়রানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রফতানিমুখী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে শূন্য ভ্যাট রিটার্ন দাখিল থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানান তিনি। একই সাথে তিনি শতভাগ রফতানিমুখী তৈরী পোশাক শিল্পের রফতানি ও উৎপাদনপ্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট সবপণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানান।
নগদ সহায়তার ওপর আয়কর কাটার হার কমানোর দাবি জানিয়ে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, তৈরী পোশাক শিল্পের দেশীয় ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পকে বিকশিত করা এবং প্রতিযোগী দেশের সাথে রফতানি বাণিজ্যের সক্ষমতা ধরে রাখার জন্য রফতানি আয়ের ওপর নগদ সহায়তা দেয়া হয়। আমরা দেশী শিল্প থেকে তুলনামূলক বেশি দামে সুতা কিনে থাকি। এই প্রণোদনার বিপরীতে প্রাপ্ত নগদ অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে আয়কর কাটা যুক্তিযুক্ত নয়। এ কারণে তৈরী পোশাক খাতের প্রণোদনার জন্য দেয়া নগদ সহায়তার ওপর আয়কর কাটার হার ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা জরুরি বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো বলেন, নিট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবেশ নীতিমালা মেনে ব্যবসা-পরিচালনা করে আসছে। এ জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইটিপি স্থাপন করা হয়েছে। আগে এ ব্যয়বহুল ইটিপি পরিচালনায় আমদানিকৃত কাঁচামালে কোনো শুল্ক নেয়া হতো না। কিন্তু হঠাৎ করে রাসায়নিকের ওপর শুল্ক ও মূসক ধার্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত পর্যায়ে এ ইটিপি পরিচালনা করতে প্রতিদিন ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এ ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে আমদানিকৃত রাসায়নিকের শুল্ক ও মূসক শূন্য রাখার দাবি জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা