১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আসন্ন বাজেটের জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব আইবিএফবির

-

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি)। এ বিষয়ে সংস্থাটি ‘ন্যাশনাল বাজেট ২০২১-২২ পলিসি রিকমেন্ডেশন’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করে। ওয়েবিনারটি গত শনিবার অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে চলমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সময়োচিত ও উপযুক্ত বাজেটের বিভিন্ন দিকের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। আইবিএফবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওয়েবিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিআইডিএস-এর মহাপরিচালক ড. খান আহমেদ সাঈদ মুরশিদ, আইবিএফবির লিগ্যাল ইকোনমিস্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এস সিদ্দিকী এবং বিএসআরএম গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান আলী হুসেন আকবর আলী, এফসিএসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ওয়েবিনারটিতে এসএমই খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এখানে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরে, বিশ্বব্যাপী এসএমই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক বিষয়ে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। ভবিষ্যতে এসএমই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকে থাকতে ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পর্যাপ্ত তাদের অর্থায়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে সুযোগ পাওয়া জরুরি। জাতীয় বাজেটে ধুঁকতে থাকা পাবলিক খাতের ব্যাংকগুলোর সহায়তায় প্রায় শতকোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়; তবে এ ক্ষেত্রেও তেমন উন্নতি দেখা যায়নি।
ওয়েবিনারে বাজেট থেকে অর্থপ্রাপ্তির জন্য বিবেচিত হওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এই ব্যাংকগুলোর ওপর শর্ত আরোপের সুপারিশ করা হয়। বাংলাদেশের ট্যাক্স পদ্ধতি ও এনবিআরের ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়ের সংস্কারের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। রফতানি ও আমদানির ক্ষেত্রে এআইআর ও অগ্রিম ভ্যাট সংগ্রহের জন্য এনবিআরের সহজ নীতি রয়েছে। কর সংগ্রহের এই সহজ নীতিগুলো কাস্টম শুল্ক, এআইটি ও অগ্রিম ভ্যাটের বিষয়গুলো এনবিআরকে ট্যাক্স বিভাগের সংস্কারকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এআইটি ও কাস্টম শুল্ক অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিকাশকে স্থবির করতে ঐতিহাসিকভাবেই ভূমিকা রাখছে। উৎস এবং সর্বনি¤œ কর পদ্ধতিতে কর হ্রাসের বিষয়টি আয়কর নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। লাভের জন্য ক্রয়ভিত্তিক কর সিস্টেম কিংবা আয়ভিত্তিক ইনকাম ট্যাক্স থেকে রাজস্ব কৌশলকে আলাদা রাখতে হবে। উৎস ও অ্যাডভান্স করের হ্রাসের বিষয়টি যৌক্তিকভাবে করতে হবে; ফলে এর মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরি হবে।
বাজেটে ব্যবসায়িক এবং চলমান ও স্থবির লেনদেনের ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট ভিত্তিক লেনদেন উৎসাহিত করতে ওয়েবিনারে আলোকপাত করা হয়। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার জন্য সব ধরনের পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে পরিশোধ করা উচিত। দুর্নীতি হ্রাসের জন্য বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। কালো টাকা চিহ্নিতকরণ এবং এর মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি বন্ধে বাজেট বিকল্প উপায়। সাধারণত, কালো টাকার মালিকরা তাদের আত্মীয়দের নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে এবং বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে কাজে লাগায়। জরিমানাসহ প্রতিনিয়ত কর প্রদানের পরই এ সুবিধাগুলো দেয়া উচিত। বিভিন্ন শিল্পের জন্য বন্ড সুবিধা, বন্ড লাইসেন্স রক্ষণাবেক্ষণের খরচ এবং শিল্পের কর, ঝুঁকি হ্রাসে কর নিরীক্ষার দক্ষতার কৌশল বৃদ্ধি, এনবিআরের সম্ভাব্য সংস্কার যেমন: ডেটা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, আইটিভিত্তিক সমাধান বৃদ্ধি, এনবিআরের সামগ্রিক গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিসহ আগামী বাজেট যেনো গুণগতমানের হয় সে বিষয়ে পরামর্শ উঠে আসে ওয়েবিনারে।
আইবিএফবির সভাপতি হুমায়ূন রশীদ চৌধুরীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ওয়েবিনারটি শুরু হয়। সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আইবিএফবির ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মাজিদকে তার পেপার প্রেজেন্টেশনের জন্য সাধুবাদ জানানো হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement