অনুমতি ছাড়া মোবাইল কললিস্ট ও কথোপকথন রেকর্ড সংগ্রহ বন্ধে হাইকোর্টের অভিমত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া এবং মোবাইল কোম্পানিগুলোর রিক্যুইজিশন ছাড়া কললিস্ট জব্দ ও কথোপকথন রেকর্ড সংগ্রহ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে বলে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসাথে ডিজিটাল ডকুমেন্টগুলো সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য সাক্ষ্য আইন সংশোধনের ক্ষেত্রেও অভিমত দিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্ট বলেছেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ আইন সংশোধন না করা বা ডিজিটাল ডকুমেন্টকে প্রমাণ হিসেবে আইন করা না হলে কোনো ব্যক্তির কললিস্ট এবং টেলিফোন কথোপকথনের কোনো স্পষ্ট মূল্য থাকতে পারে না। রায়ে প্রত্যাশা করা হয়েছে যে, আইন সংশোধন করতে বা এ লক্ষ্যে একটি নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেবে।
বিচারপতি মো: শওকত হোসেন, মো: রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ শিশু সৈকত হত্যা মামলার রায়ে এ অভিমত দেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ৪৯ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট শিশু সৈকতকে অপহরণের পর হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ছাত্র অলি আহম্মদকে (২২) মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ।
আদালত রায়ে বলেন, আমাদের সাধারণ অভিজ্ঞতা যে, আজকাল নাগরিকদের মধ্যে ব্যক্তিগত অডিও-ভিডিওসহ ব্যক্তিগত যোগাযোগের বিষয়গুলো প্রায়ই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হয় এবং প্রকাশিত হয়। সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে আমাদের নাগরিকদের চিঠিপত্রের এবং যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ে গোপনীয়তার অধিকারের নিশ্চয়তা অবশ্যই ভুলে যাওয়া উচিত নয়।
রায়ে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা বজায় রাখার সাংবিধানিক ম্যান্ডেট রক্ষার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং বাংলাদেশে পরিচালিত ফোন সংস্থাগুলোর একটি বৃহৎ দায়িত্ব রয়েছে। সংবিধানের সাথে মেলে না এমন আইনের অনুমতি না থাকলে তারা (কোম্পানিগুলো) তাদের গ্রাহক ও দেশের নাগরিকদের যোগাযোগ সম্পর্কিত কোনো তথ্য কাউকে সরবরাহ করতে পারে না।
মামলার বিবরণে জানা যায়, এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় সৈকতকে (৭) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানায় ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন সৈকতের বাবা মো: সিদ্দিকুর রহমান। ২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর এই মামলায় প্রধান আসামি নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ছাত্র অলি আহম্মদকে (২২) মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪। এ ছাড়া পলাতক আসামি সবুজ মিয়া ও তাপস বন্ধু সাহাকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। তবে মামলার আরেক আসামি আনিছ মিয়া শিশু হওয়ায় তাকে ১০ বছরের সাজা দেন একই আদালত। আইন অনুযায়ী শিশুর অপরাধের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হতে পারে কি-না, এ নিয়ে আইনগত প্রশ্ন উত্থাপিত হলে হাইকোর্ট বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা