ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ২৯০ জনের বিরুদ্ধে : বিদ্যুৎ সচিব

বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলের জন্য ২৯০ জনকে দায়ী করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তাদের নাম পাওয়া গেছে। অধিকতর তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল নিয়ে গঠিত ট্রাস্কফোর্সের প্রতিবেদন নিয়ে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ সচিব ড. সুলতান আহমেদ এ কথা বলেন। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, করোনার মধ্যে আমাদের মিটার রিডাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং করতে পারেনি। এ জন্য এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। করোনার মধ্যে ৬০১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে ১২ জন বিদ্যুৎকর্মী মারা গেছেন। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের জন্য গ্রাহকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, আমরা সব সময়ই গ্রাহকবান্ধব। আমরা যে আস্থা হারিয়েছি আশা করছি তা শিগগিরই পুনরুদ্ধার করতে পারব। ভবিষ্যতে বিতরণ কোম্পানিগুলো এ ধরনের সঙ্কট সমাধানে শতভাগ মিটার রিডিং নিয়ে বিল করবে।
বিদ্যুৎ সচিব বলেন, মাশুল ছাড়া জুনের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছিল। প্রয়োজনে তা বাড়ানোর চিন্তুা করা হচ্ছে। তবে সেটি শুধুই আবাসিকের ক্ষেত্রে দেয়া হতে পারে বলে তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, তারা এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৬২ হাজার ৯৬ বিলে অসঙ্গতি পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ৯ লাখ ২৬ হাজার ৬৮৯ জন গ্রাহকের মধ্যে ১৫ হাজার ২৬৬ জনের বিল অতিরিক্ত করা হয়েছে। একইভাবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) দুই কোটি ৯০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৩৪ হাজার ৬১১ জনের, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ১০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৫ হাজার ৬৫৭ জন, নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) ১৫ লাখ ৪৮ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ২ হাজার ৫২৪ জন, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) এর ১২ লাখ ১৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৫৫৬ জন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৫১৫ জনের মধ্যে ২ হাজার ৫৮২ জন অতিরিক্ত বিলের শিকার হয়েছে।
বিতরণ কোম্পানিগুলোর বিষয়ে বিদ্যুৎ সচিব বলেন, ডিপিডিসি অতিরিক্ত বিলের অভিযোগে একজন নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩৬টি ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৩ জন মিটার রিডার এবং ডাটা এন্ট্রি অপারেটরসহ মোট ১৪ জনকে চুক্তিভিত্তিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। নেসকো ২ জন মিটার রিডারকে বরখাস্ত করেছে। একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলি করেছে। ওজোপাডিকো ২২৩ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
বিতরণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে আরইবি মনিটরিং কমিটি গঠন করেছে, তারা খুঁজে বের করছে কারা এ জন্য দায়ী। চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করার কাজ চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আরইবি তাদের চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
সচিব বলেন, যাদেরই অতিরিক্ত বিল এসেছে তার সবগুলো সমন্বয় করে দেয়া হয়েছে। কোনও গ্রাহক যদি এখনও মনে করে তার বিল বেশি এসেছে, তার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা তার বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে ব্যবস্থা নেবো। যাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে তাদের সবার বিষয়ে তদন্ত হবে। সংবাদ সম্মেলনে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইনসহ বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।