২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
এমপির হস্তক্ষেপে ঢামেক বার্ন ইউনিটে প্রেরণ

শাহরাস্তিতে আগুনে ঝলসানো মীরুজাকে নিয়ে থানার সামনে স্বজনরা

-

গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা। কর্মচঞ্চল শাহরাস্তি থানার সামনে পড়ে আছে দুর্বল দেহের ওপর ভন ভন করা মাছি তাড়ানোর সামর্থ্যহীন আগুনে ঝলসে যাওয়া ভিখারিণী মীরুজা বেগম (৫৫)। চিকিৎসার সামর্থ্য নেই বলে পাশে বসে কাঁদছেন একমাত্র কন্যা খাদিজা। অফিসার ইনচার্জ খবর নিয়ে জানতে পারেন ২০ দিন আগে সম্পত্তি বিরোধে নিজের ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা আগুনে ঝলসে দিয়েছে মীরুজার শরীর। ঘটনা অবগত হয়ে তাৎক্ষণিক ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে নগদ ২০ হাজার টাকা পাঠালেন চাঁদপুর-৫ (শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব:) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম।
সন্ধ্যায় এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উঘারিয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অভিযান চালিয়ে মো: আবদুর রশিদ চৌকিদার (৫৬) নামে একজনকে আটক করে।
জানা যায়, চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের চান্দল গ্রামের মরহুম ইউনুছ চৌকিদারের মেয়ে মীরুজা বেগমের ৩০ বছর আগে কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার সাতপুকুরিয়া গ্রামের মোস্তফার সাথে বিবাহ হয়। স্বামী আরেক বিবাহ করে মীরুজাকে তাড়িয়ে দিলে পিত্রালয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতেন তিনি। একমাত্র ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী, অনেক কষ্টে বিয়ে দেয়া মেয়েটিও আজ বিধবা। এমতাবস্থায় পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করায় ২০ দিন আগে মীরুজা বেগমের দেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে ভাই আ: রশিদ চৌকিদার, অপর ভাই আইয়ুব আলী, ভাইয়ের ছেলে আ: মজিদ ও রুবেল এমন অভিযোগ তার কন্যা খাদিজা বেগমের। শরীরের বিভিন্ন স্থান মারাত্মকভাবে দগ্ধ হওয়ায় তাকে রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের বেরনাইয়া বাজারের শাহ্ শরীফ হাসপাতালের সামনে রেখে চলে যায় ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা। পরদিন খবর পেয়ে সেখান থেকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন খাদিজা। সেখানে ভিকটিমের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। চিকিৎসার অর্থের সংস্থান করতে না পেরে খাদিজা মাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। পথে ভাড়ার টাকা ফুরিয়ে গেলে থানার সামনে সিএনজি হতে ভিকটিমকে নিয়ে নেমে পড়েন। সেখানে দুপুরে মুমূর্ষু মীরুজাকে শাহরাস্তি থানা ফটকের অদূরে একটি দোকানের সামনে শুইয়ে দেন তিনি। ঘটনা অবগত হয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ মো: শাহ্ আলম ভিকটিমকে শাহরাস্তি হাসপাতালে পাঠান। আগুনে তার শরীরের অনেকাংশ পুড়ে দীর্ঘদিনের চিকিৎসাহীনতায় জীবনের শঙ্কা থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠানোর পরামর্শ দেন। ভিকটিমকে বিকেলেই ঢামেক বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ভিকটিমের মেয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একজনকে আটক করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement