২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রাবিতে গবেষণায় স্বল্প বরাদ্দ

গবেষণার বরাদ্দ পাবেন না এক-চতুর্থাংশ শিক্ষক!

-

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৪৩৩ কোটি টাকার বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে গবেষণা খাতে ৬০ লাখ টাকা বিশেষ বরাদ্দসহ গবেষণায় মোট বরাদ্দ হয় মাত্র ৫ কোটি টাকা। যা এক-চতুর্থাংশেরও কম শিক্ষককে গবেষণায় বরাদ্দ দিতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গবেষণায় বরাদ্দের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হতে পারে অনেক বিশেষায়িত গবেষণা। এতে আরো কমতে পারে শিক্ষকদের গবেষণাÑ এমনটাই বলছে সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে মোট শিক্ষক রয়েছে এক হাজার ২৬০ জন। এর মধ্যে একজন গবেষক প্রকল্প প্রতি ২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাবেন। এই হিসাবে ৫ কোটি টাকার গবেষণা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ পাবেন মাত্র ২৫০ জন শিক্ষক। ফলে এক হাজারেরও বেশি শিক্ষক গবেষণায় বরাদ্দ পাবেন না। অনুষদগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অর্থ বরাদ্দ কম হওয়ায় প্রকল্প জমা দেয়া ও আবেদনে আগ্রহ দেখান না শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখা-২ এর পরিচালক আখতার হোসেন জানান, বরাদ্দ হওয়া অর্থ শিক্ষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষদভিত্তিক ভাগ করে দেয় একাডেমিক শাখা। মূলত একক প্রকল্প ও যৌথ প্রকল্পে গবেষণায় বরাদ্দকৃত অর্থ ছাড় দেয়া হয়। এর মধ্যে একক প্রকল্পে দুই লাখ টাকা এবং যৌথ প্রকল্পে ৪ লাখ টাকা দেয়া হয়।
শিক্ষকদের জন্য গবেষণা বরাদ্দ একেবারেই নগণ্য উল্লেখ করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, জ্ঞান সৃষ্টি ও বিকাশের জন্য গবেষণার বিকল্প নেই। করোনাসৃষ্ট পরিস্থিতিতে আশঙ্কা করা হয়েছিল যে পশ্চিমা দেশগুলো গবেষণায় বরাদ্দ কমিয়ে দেবে। কিন্তু তারা আগের চেয়ে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। কারণ তারা বুঝতে পেরেছেন দুর্যোগ ঠেকাতে গবেষণালব্ধ জ্ঞানের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, প্রকল্পের বরাদ্দের জন্য অনেক শিক্ষক আবেদন করেন না। এ ছাড়া দেশে খুব অল্প গবেষণা করেই পদোন্নতি এবং ইনক্রিমেন্ট সুবিধা লাভ করা যায়। এ জন্য সত্যিকার অর্থে যারা গবেষণায় আগ্রহী তারা বাদে অন্য শিক্ষকরা গবেষণায় খুব একটা মনোযোগ দেন না। এ জন্য তিনি ত্রুটিপূর্ণ পদোন্নতির নীতিমালাকে দায়ী করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আকতার বানু বলেন, প্রতিবারই শিক্ষক সংখ্যার চেয়ে অনেক কম বরাদ্দ আসে। এ কারণে অনেকের আগ্রহ থাকলেও গবেষণায় ভূমিকা রাখতে পারেন না। শিক্ষকদের গবেষণায় অনাগ্রহের একটি কারণ এটি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফখরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকরা প্রকল্পের জন্য আবেদন করলে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে উপযুক্ত প্রকল্পগুলোতেই বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে বিদেশী প্রকল্পগুলোতে বড় ফান্ড বরাদ্দ থাকায় শিক্ষকরা ওগুলোতেই কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। দেশীয় গবেষণা প্রকল্পগুলোতে স্বল্প বাজেটের জন্য অনেক শিক্ষকই আগ্রহবোধ করেন বরাদ্দ কম হওয়ার এটিও কারণ হতে পারে বলে জানান তিনি। এর আগে ২৭ জুন ভিসি অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৩২ কোটি ৯৭ লাখ ২০ হাজার টাকা বাজেট পাস হয়। এর মধ্যে গবেষণা খাতে বরাদ্দ দেয়া হয় মাত্র ৫ কোটি টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement