২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী পিডি নিয়োগ চায় ইউজিসি

-

নিজের মৃত্যুর পর অসুস্থ স্ত্রীকে কে দেখাশোনা করবে এমন চিন্তায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বৃদ্ধ গোপাল চন্দ্র কুড়ি (৭৩)। কারণ গত ১৬ বছর ধরে প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন তার স্ত্রী ছবি কুড়ি (৬০)। নিজের শরীরের অবস্থা যখন বেশি খারাপ হতে শুরু করেছে তখন দুশ্চিন্তা আরো জেঁকে বসে তার মনে। তাই স্ত্রীকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ সময় নিজের হাতও কেটে যায়। এরপর নিজে চলে যান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে পুলিশকে হত্যার বিষয় অবগত করেন। পরে আরামবাগের ১৮২/এ নম্বর বাসা থেকে ছবি কুড়ির রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মতিঝিল থানার এসআই শফিকুল ইসলাম আকন্দ জানান, গোপাল চন্দ্র কুড়ির বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলায়। মতিঝিলে কুড়ি অ্যান্ড কোংয়ের কেমিক্যাল রিচার্জ কোম্পানির মালিক তিনি। তার তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে ভারতে, এক মেয়ে অস্ট্রেলিয়া থাকে। মতিঝিলের ওই ফ্ল্যাটটি তার নিজের। স্বামী-স্ত্রী দু’জন বাসায় থাকতেন। আহতের বরাত দিয়ে তিনি জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জনই অসুস্থ। তার স্ত্রী প্রায় ১৬ বছর বিছানায় পড়ে আছেন। এ জন্য তিনি সব সময় বলতেন, তিনি মারা গেলে তার স্ত্রীকে কে দেখবেন। তিন মেয়েও দেশের বাইরে। এই চিন্তা থেকে গতকাল ভোরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেন গোপাল। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ছবি কুড়ি। এ সময় গোপালের ডান হাত কেটে যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। তাকে চিকিৎসা দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, গতকাল সকালের দিকে হাতে আঘাত নিয়ে মেডিক্যালে চিকিৎসা নিতে আসেন গোপাল চন্দ্র কুড়ি। তার ডান হাত কিছুটা কাটা ছিল। হাত কাটার রহস্য জানতে গেলেই তার স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি প্রকাশ পায়। পরে খবর দিলে মতিঝিল থানা পুলিশ ওই বাসা থেকে বৃদ্ধার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
মতিঝিল থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মনির হোসেন মোল্লা জানান, গত ১৬ বছর ধরে নিহত বৃদ্ধা প্যারালাইজড অবস্থায় রয়েছেন। বৃদ্ধ স্বামীও শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার পরিবার জানিয়েছে, তিনি (গোপাল) মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ছয় থেকে সাত মাস তিনি বাড়ি থেকেই বের হননি। তাদের তিন মেয়ে থাকলেও দেখার মতো কেউ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, মানসিক হতাশা থেকে স্ত্রীকে খুন করেন গোপাল। নিহতের লাশের পাশ থেকে একটি ছুরিও উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement