১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসিসহ ৬ জনকে লিগ্যাল নোটিশ

-

চ্যান্সেলরের অনুমতি ছাড়া ভাইস চ্যান্সেলরের পদ থেকে নিজ বিভাগে যোগদান, আরেকজনকে ভিসির দায়িত্ব দেয়া, নিজ সম্পর্কিত বিষয়ে নিজেই সিন্ডিকেটের সভাপতিত্ব করাসহ কয়েকটি অভিযোগে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানসহ ছয়জনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সাবেক এক শিক্ষার্থী। বুধবার বিকেলে বিশ^বিদ্যালয়ের লিগ্যাল সেলের প্রশাসক ড. শাহিন জোহরা নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে তিনি বলেছেন, ভিসি এখনো অফিসিয়ালি নোটিশের প্রধান কপি গ্রহণ করেননি।
নোটিশ প্রাপ্তদের মধ্যে প্রথমজন রাবি ভিসি অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান। বাকিরা হলেন রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব, রাবির রেজিস্ট্রার ও ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি (বর্তমানে বিলুপ্ত বিভাগ)। বিশ^বিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সালমান ফিরোজ ফয়সালের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহা: মুজাহিদুল ইসলাম এই নোটিশ প্রেরণ করেন।

নোটিশে উল্লেখ করা হয় ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতা রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে ২০১৭ সালের ২১ জুন পূর্বাহ্নে ভিসির পদে থেকে নিজ বিভাগে অর্থাৎ ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে, অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন এবং ওই দিনই অপরাহ্নে ওই পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ওই কারণে পূর্বাহ্ন থেকে অপরাহ্ন পর্যন্ত ভিসির পদে সাময়িক শূন্যতা সৃষ্টি হয়। ভিসির পদের সাময়িক শূন্যতা পূরণকল্পে রাষ্ট্রপতির অনুমতি ব্যতিরেকে ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতা শুধু এক দিনের জন্য ড. আখতার ফারুক, ডিন বিজ্ঞান অনুষদ, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়কে দায়িত্ব প্রদান করেন যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও নীতির বিরোধী। অতঃপর ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতা ভিসি হিসেবে আবার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এ ছাড়া ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতার স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ সংক্রান্ত দলিলাদি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের অসাধারণ (এক্সটা অর্ডিনারি) সভার কার্যবিবরণী থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতা রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ লঙ্ঘন করে এবং প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং ভিসির পদে বহাল আছেন।
নোটিশ গ্রহীতা তার পেনশন ভাতার ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৮৬৯ টাকা সোনালী ব্যাংক, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখা থেকে উত্তোলন করেন। ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতা দ্বিতীয় মেয়াদে পুনরায় চার বছরের জন্য ভিসি হিসেবে ২০১৭ সালের ৭ মে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে হঠাৎ করে তিনি গত ২১ জুন তার নিজ বিভাগ থেকে পদত্যাগের মূল কারণ ছিল অর্থ মন্ত্রণালয়কর্তৃক জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে পাশ কাটিয়ে তার প্রাপ্য পেনশনের শতভাগ টাকা উত্তোলন করা। ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১ জুলাই ২০১৭ তারিখ হতে পেনশনাররা তাদের প্রাপ্য পেনশনের শতকরা ৫০ ভাগ বাধ্যতামূলক সমর্পণ করে অবশিষ্ট ৫০ ভাগের জন্য নির্ধারিত হারে মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। নোটিশ গ্রহীতা প্রতারণার মাধ্যমে এবং রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রপতিকে অসত্য তথ্য প্রদান করে ১ জুলাই ২০১৭ তারিখের পূর্বে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন এবং পুনরায় ভিসির দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার অনুমোদন হাসিল করেন। বর্তমানে ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতা আইন ও রাষ্ট্রপতির সাথে প্রতারণার মাধ্যমে রাজশাহী বিশ^বিদ্যায়ের ভিসি পদে বহাল রয়েছেন। ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য বেআইনি ও অনৈতিক কর্ম সম্পাদন করে ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতা বিশ^বিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভিসির দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা হারিয়েছেন।
এমতাবস্থায় সব নোটিশ গ্রহীতা লিগাল নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে ১ নম্বর নোটিশ গ্রহীতাকে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসির পদ থেকে অপসারণ করে নি¤েœাক্ত অফিসে লিখিতভাবে জানানোর অনুরোধ করেন। অন্যথায় উচ্চ আদালতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement