‘কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি’
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৭ মে ২০২৪, ১৯:৩৯
বিশ্বজুড়ে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমিয়ে আনাতে আগামী ১০ বছরের মধ্যেই রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদসহ পুরো সমাজকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন জলবায়ু শীর্ষক কর্মশালার বিশেষজ্ঞরা বক্তরা।
তারা বলেছেন, পরিবর্তনের সাথে উন্নয়নের একটি সংযোগ রয়েছে। যেসব দেশ উন্নতি করেছে, তারা জলবায়ুর ক্ষতি করেই উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করেছে। সুতরাং সেসব দেশের এখন দ্বায়বদ্ধতা খুব বেশি।
সোমবার রাজধানীর দারুস সালাম রোডস্থ নিমকো সভা কক্ষে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিজেএফ) এবং জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের (নিমকো) যৌথভাবে আয়োজিত ‘জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় গণমাধ্যম’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সচিব সত্যব্রত সাহা। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তন্ময় সাহা, দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মা, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিসিজেএফের সভাপতি কাওসার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৪০ জন সংবাদকর্মী অংশ নেন।
সত্যব্রত সাহা বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়। দুর্যোগ হলো জলবায়ু পরিবর্তনের অনেকগুলো অনুষঙ্গের ফলাফল। বিভিন্ন কারণে দুর্যোগের পুনঃপৌনিকতা বেড়েছে। আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। ফলে আমাদের দেশের সাংবাদিকদের দায়িত্বও বেশি। বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, খরা-বন্যা ও বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার খবরগুলো আমরা সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত করছি ও দেখছি। আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে আরো বেশি অনুসন্ধানী ও পর্যালোচনাধর্মী প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘এখন যেভাবে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হচ্ছে সেভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যেই আমাদের কার্বন বাজেট শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ প্রাক-শিল্পায়ন সময়ের তুলনায় বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য আমাদের কাছে ১০ বছরেরও কম সময় আছে। তার মানে বিশ্বজুড়ে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমিয়ে আনার জন্য আগামী ১০ বছরের মধ্যেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদসহ পুরো সমাজকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে নির্ধারিত হবে আগামী ৫০ বছরে পৃথিবীর চেহারা কেমন হতে যাচ্ছে। আমাদের হাতে সময় নেই। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। সাংবাদিকদের বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তাহলে এ বিষয়ে বলিষ্ট ভূমিকা রাখা সম্ভব।’
তন্ময় সাহা বলেন, “সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেছিলেন, ‘পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে রেখে যেতে হবে, আগামী প্রজন্মের কাছে এই হোক অঙ্গীকার।’ জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে উন্নয়নের একটি সংযোগ রয়েছে। যেসব দেশ উন্নতি করেছে, তারা জলবায়ুর ক্ষতি করেই উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করেছে। সুতরাং সেসব দেশের এখন দ্বায়বদ্ধতা খুব বেশি। আগে গ্রামের কৃষকরা বাংলা সনের তারিখ দেখে ফসল বুনতো। এখন ঋতু পরিবর্তন হয়ে গেছে, কৃষকরা এখন আর আকাশের দিকে তাকিয়ে চাষাবাদ করে না।’
তিনি এ সময় ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে সাংবাদিকদের স্টাডি করার আহ্বান জানান।
সন্তোষ শর্মা বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভ ফরেস্ট কমে যাচ্ছে। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে ও সামাজিকভাবে যদিও বনায়ন হচ্ছে।’