২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উগ্রবাদী গোষ্ঠীতে যোগদানের প্রধান কারণ ধর্ম নয়, জীবিকা

উগ্রবাদী গোষ্ঠীতে যোগদানের প্রধান কারণ ধর্ম নয়, জীবিকা - ছবি : সংগৃহীত

জাতিসঙ্ঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) -এর একটি নতুন প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে যে সাহারা দক্ষিণাঞ্চলের (সাব-সাহারান) আফ্রিকায় সহিংস উগ্রবাদ বাড়ছে। সহিংসতার এই বৃদ্ধি আগামী প্রজন্মের জন্য কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত উন্নয়নকে নষ্ট করে আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার হুমকি তৈরি হচ্ছে।

সাব-সাহারা অঞ্চলের আফ্রিকা সহিংস উগ্রবাদের নতুন বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট মৃত্যুর প্রায় অর্ধেকই এ অঞ্চলে হয়েছে। এর মধ্যে, এক-তৃতীয়াংশের বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে আফ্রিকার চারটি দেশে। দেশগুলো হলো- বুর্কিনা ফাসো, মালি, নিজার ও সোমালিয়া।

ইউএনডিপি'র প্রশাসক আচিম স্টেইনার বলেন, কী কারণে মানুষ দ্রুত বর্ধনশীল উগ্রপন্থী গোষ্ঠীতে যোগ দিচ্ছে, তার সংস্থার তৈরি কার প্রতিবেদন সেই বিষয়ের ওপর নতুন করে আলোকপাত করেছে। এই প্রতিবেদন প্রণয়নের সময় আটটি দেশের প্রায় ২২০০ জন পুরুষ ও নারীর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। দেশগুলো হলো- বুরকিনা ফাসো, ক্যামেরুন, চাদ, মালি, নিজার, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া ও সুদান। সাক্ষাৎকার নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি ওই উগ্রবাদী গ্রুপগুলোর সাবেক সদস্য। এদের কেউ স্বেচ্ছায় যোগ দিয়েছেন, কাউকে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

স্টেইনার বলেন, এই প্রতিবেদনের মূলে রয়েছে, উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিতে মানুষকে প্ররোচিত করার ক্ষেত্রে, কোন উপাদান গুলো সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তারকরী, তা চিহ্নিত করার প্রচেষ্টা।

প্রতিবেদনের প্রধান লেখক এবং আঞ্চলিক শান্তি-প্রতিষ্ঠা (পিসি বিল্ডিং) উপদেষ্টা নিরিনা কিপলাগাট উল্লেখ করেন, ধর্মকে নয়, বরং কর্মসংস্থান মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, স্বেচ্ছায় যোগ দেয়া সদস্যদের এক-চতুর্থাংশ, চাকরির সুযোগ এবং জীবিকার জরুরি প্রয়োজন মেটাতে উগ্রপন্থী গোষ্ঠীতে যোগদানের প্রাথমিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, মাত্র ১৭ শতাংশ মানুষ ধর্মীয় মতাদর্শকে তাদের যোগদানে অনুপ্রাণিত করার প্রাথমিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। ২০১৭ সালে এই হার ছিলে ৪০ শতাংশ।

এটি, ইউএনডিপির ২০১৭ সালের যুগান্তকারী গবেষণার একটি রেফারেন্স। ওই গবেষণাতেই প্রথম সহিংস উগ্রবাদে যোগদানের কারণ বোঝার চেষ্টা করা হয়েছিল।

কিপলাগাট আরো বলেন, উগ্রবাদী গোষ্ঠীতে নারীদের যোগদানের কারণ, পুরুষের যোগ দেয়ার কারণ থেকে আলাদা। তিনি বলেন, নারীরা আদর্শগত কারণে খুব কমই যোগ দিয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই পরিবারের সাথে মিলিত হতে, বিশেষ করে তারা তাদের স্বামীদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য যোগ দিয়েছেন।

ইউএনডিপি জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আফ্রিকায় ৪ হাজার ১৫৫টি হামলার জন্য দায়ী উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো। এসব হামলায় ১৮ হাজার ৪১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইউএনডিপি।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement