১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউনিয়ন ব্যাংকের ‘উধাও’ টাকা ভিভিআইপি গ্রাহকের কাছে!

ইউনিয়ন ব্যাংকের ‘উধাও’ টাকা ভিভিআইপি গ্রাহকের কাছে! - ছবি : সংগৃহীত

ভল্ট থেকে উধাও হওয়া ১৯ কোটি টাকা ভিভিআইপি একজন গ্রাহককে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। রাজধানীর গুলশান শাখার ভল্ট থেকে এই টাকা উধাও হয়ে ছিল। বৃহস্প‌তিবার সাংবা‌দিক‌দের এ তথ্য জানান ব্যাংক‌টির অতি‌রিক্ত ব্যবস্থাপনা প‌রিচালক (ডিএম‌ডি) হাসান ইকবাল।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং আওয়ারের পর একজন ভিভিআইপি গ্রাহককে ওই টাকা দেয়া হয়েছিল। ব্যাংকিং রুলস ভায়োলেট হলেও এমন ঘটনা নতুন নয়। গ্রাহক-ব্যাংক সম্পর্কের খাতিরে এমন লেনদেন হয়। এঘটনায় ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখার তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলের উপস্থিতিতেই ১৯ কোটি টাকার হিসাব সমন্বয় করা হয়।

এ বিষ‌য়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন ব্যাংকের কাছে আমরা ব্যাখ্যা জানাতে চি‌ঠি দি‌য়েছি। যে‌হেতু তাদের ওই শাখায় সান্ধ্যকালীন ব্যাংকিং নেই তাই ব্যাংকিং আওয়ারের পর তারা লেনদেন করতে পারে না। ত‌বে এখনো তারা উত্তর দেয়নি। তা‌দের জবাব পেলে নিয়ম অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।

গত সোমবার ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখার ভল্টে ১৯ কোটি টাকার গরমিল পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিদর্শক দল। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখন ব্যাংকটির সব শাখার ভল্ট পরিদর্শন করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জানা গেছে, ওইদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিদর্শক দল ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখা পরিদর্শনে যায়। সকাল ১০টার আগেই তারা শাখায় গিয়ে উপস্থিত হন। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী শুরুতেই ওই দল শাখাটির ভল্ট পরিদর্শন করে। কাগজে-কলমে শাখার ভল্টে ৩১ কোটি টাকা দেখানো হলেও সেখানে ১২ কোটি টাকা পায় পরিদর্শক দল। বাকি টাকার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কোনো জবাব দিতে পারেননি। উল্টো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন তৎপরতা শুরু করে শাখা কর্তৃপক্ষ। একপর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পক্ষও এ ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়।

প্রতিদিন লেনদেনের শেষ ও শুরুতে ভল্টের টাকা মিলিয়ে রাখার দায়িত্ব শাখা ব্যবস্থাপক, সেকেন্ড অফিসার ও ক্যাশ ইনচার্জের। ভল্টে টাকার হিসাবে কোনো গরমিল হলে তা মিলিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এসব কর্মকর্তার। অনেক সময় হিসাবের ভুলে সামান্য টাকার গরমিল হতে পারে। তবে বড় অঙ্কের টাকার গরমিল হলে তা ফৌজদারি অপরাধ। এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে অদৃশ্য কারণে এক্ষেত্রে কাউকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়নি। এমনকি থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরিও করেনি ব্যাংকটি। উল্টো মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার তৎপরতা চলে। শুধু তাই নয়, পরিদর্শনে গিয়ে যারা এ তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন, তাদের চাপে রাখা হয় বলে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement