২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১২ বছর হলেই পাওয়া যাবে টিকা

১২ বছর হলেই পাওয়া যাবে টিকা - ছবি : সংগৃহীত

টিকা কর্মসূচির লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌‘এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেয়া। ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব সকল ছাত্র-ছাত্রীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসা।’

১২ বছর ও তার বেশি বয়সী সব বাংলাদেশীকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।জাতীয় সংসদে বুধবার টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা জানান সরকারপ্রধান।

প্রশ্নোত্তর পর্বে টিকা গ্রহণের বয়স নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক আরো কিছু বিষয় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।


তিনি বলেন, ‌‌প্রতি মাসে এক কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চীনের সিনোফার্মের দেয়া শিডিউল অনুযায়ী, অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি হিসাবে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।

পিরোজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের উত্তরে সংসদনেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক ক্রয় চুক্তির আওতায় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ৩ কোটি এবং চীনের সিনোফার্ম ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে ৭ কোটি ৭০ লাখ ডোজ টিকা ক্রয়ের চুক্তি সই হয়েছে।’

রাশিয়া থেকে ১ কোটি ডোজ স্পুৎনিক-ভি টিকা কেনার চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ৩ কোটি ডোজ সিনোফার্ম এবং ৭ কোটি ৫০ লাখ ডোজ সিনোভ্যাক টিকা ক্রয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

‘প্রতি মাসে যাতে এক কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সিনোফার্ম হতে দেয়া শিডিউল অনুযায়ী, আগামী অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি হিসাবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৬ কোটি টিকা পাওয়া যাবে৷’

করোনাভাইরাসের টিকা প্রাপ্তি ও প্রয়োগ নিয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

সংসদকে তিনি বলেন, ‌‘১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ ১৩ হাজার ৬৬০ ডোজ টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক ক্রয় চুক্তি এবং উপহার হিসেবে মোট ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৮০ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে।’

তিনি বলেন, ‘১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের ২ কোটি ৯ লাখ ২২ হাজার ৭১৫ জন মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে। আর ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৪৬ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মজুত ভ্যাকসিনের পরিমাণ ৯৬ লাখ ৫৪ হাজার ১১৯ ডোজ।’

সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে বয়সসীমা কমিয়ে ১৮ করা হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

টিকার কর্মসূচির লক্ষ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‌‘এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেয়া। ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব সকল ছাত্র-ছাত্রীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসা। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সুবর্ণ কার্ডের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্নপূর্বক টিকা প্রদান করা। সারা দেশের শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদান করা।’

চলমান টিকা কার্যক্রম জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সব বিভাগীয় সদর, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে ৬৭৩টি টিকা কেন্দ্র করা হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‌‘টিকা প্রদান কেন্দ্র ইউনিয়ন পর্যায়ে বিস্তৃত করা হয়েছে। টিকা প্রদানে প্রয়োজনীয় জনবলকে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আশা করি পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিকা প্রদান সম্ভব হবে।’

করোনা মহামারী মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা চান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি সকলের সহযোগিতায় চলমান এই বৈশ্বিক মহামারিকে সফলভাবে মোকাবিলায় সক্ষম হব। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।’

টিকা নেয়ার পাশাপাশি সবাইকে নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী।


আরো সংবাদ



premium cement