২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডেঙ্গু চিকিৎসায় হাসপাতাল নির্ধারণ করে দিবে সরকার

ডেঙ্গু চিকিৎসায় হাসপাতাল নির্ধারণ করে দিবে সরকার - ছবি - সংগৃহীত

প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ডেঙ্গু রোগীদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিশ্চিতে কয়েকটি হাসপাতাল নির্দিষ্ট করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত এক হাজার শয্যার ফিল্ড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে রোববার এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের এমন পরিস্থিতিতে নতুন সংকট তৈরি করেছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই হাসপাতালের বারান্দায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ‌্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের অনেকেই হাসপাতালে এসে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় ডেঙ্গু রোগীদের জন‌্য সুনির্দিষ্ট হাসপাতাল ব‌্যবস্থা করার পরিকল্পনা নিচ্ছি।’

সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল, লালকুঠি হাসপাতাল, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ডেঙ্গু চিকিৎসায় ডেডিকেটেড করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, রোববার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু ধরা পড়েছে ১০৫ জনের শরীরে। এর আগে শনিবার ১০৪ জন ও শুক্রবার ৮৫ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের সবাই ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪৬০। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪৫৪ । অন্যান্য বিভাগে রোগী তিনজন।

গত বুধবার ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩ । তার আগের দিন মঙ্গলবার ছিল ৬৫ । ঈদের পরদিনের পরিসংখ্যান দেয়া হয়নি।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বলছে এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭৪ জনে। এর মধ্যে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ১৪৯ জন। ডেঙ্গুজনিত সমস্যা নিয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘জুন মাসে আমরা গবেষণা করে দেখেছি, ঢাকায় এডিস মশার ঘনত্ব অনেক বেশি। তখন আমরা জানিয়েছিলাম, এ বছর ডেঙ্গু রোগী অনেক বেশি হবে।’

জুন মাসের গবেষণার কথা উল্লেখ করে এই কীটতত্ত্ববিদ বলেন, ‘আমরা ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জরিপ করেছি। সেখানে এডিস মশার লার্ভা ও পূর্ণবয়স্ক মশার ঘনত্ব ২০-এর ওপরে। এই পরীক্ষাকে ব্রুটো ইনডেক্স বলা হয়।’

কবিরুল বাশার জানান, জরিপে প্রতি ১০০ প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি এডিস মশার লার্ভা ও পূর্ণবয়স্ক মশা পাওয়া যায়, তাহলে সেটাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়। সেখান থেকে এডিস মশাজনিত রোগ হতে পারে। ১০ থেকে ২০-এর মধ্যে থাকলে সেখানে মশার মোটামুটি উপস্থিতি আছে বলে ধরে নেয়া যায়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ শাখা থেকে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশা নিধনে এপ্রিলের ১ তারিখ থেকেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশিত সব জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া, নিয়মিত লার্ভিসাইডিং (মশার লার্ভা ধ্বংস) ও এডাল্টিসাইডিং (পূর্ণবয়স্ক মশা ধ্বংস) নিয়ম অনুযায়ী করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান জানান, গত বছর যেসব বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেছে এপ্রিল থেকে তাদের মোবাইল ফোনে বার্তা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি, আধা সরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়েও চিঠি দেয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় যেন মানুষকে সচেতন করতে মসজিদের ইমামদের যুক্ত করে।


আরো সংবাদ



premium cement