২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনায় বয়স হারাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা

করোনায় বয়স হারাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের কারণে নিয়োগ তেমন না হওয়ায় চাকরি প্রার্থীরা বয়স হারাচ্ছেন। বয়সের ব্যাপারে ছাড় ও সমন্বয়ের কথা সরকারের দিক থেকে বলা হলেও বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

তানভির হোসাইন ঢকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সার্ভিস (এমআইএস) থেকে মাস্টার্স করেছেন ২০১৯ সালে। গত বছর করেনার শুরুতে তার সরকারি চাকরির বয়স ছিলো ছয় মাস। কিন্ত এখন তার বয়স ৩১ বছর। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পার হয়ে গেছে। এখন তার হতাশা ছাড়া আর কিছুই নেই। তিনি বলেন, ‘বাবা-মায়ের মুখের দিকে লজ্জায় তাকাতে পারি না। তারাও আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।’

তার কথা, শুধু তিনি একা নন করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে দেড় লাখ চাকরিপ্রার্থী তাদের চাকরির বয়স হারিয়েছেন। করোনার শুরুতে যাদের বয়স ২৮ থেকে ৩০ এর মধ্যে ছিলো তাদের কারোই আর সরকারি চাকরির বয়স নেই।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ সাধারণ বয়সসীমা ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক আর বিশেষ কোটার ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা ৩২ বছর। সরকারি ছাড়াও আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানেও একই বয়সসীমা অনুসরণ করা হয়।

করোনার শুরুতে গত বছরের ২৫ মার্চ যাদের বয়স ৩০ বছর পেরিয়ে যায় তাদের আরো পাঁচ মাস সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেয় সরকার। এ নিয়ে একটি আদেশ জারি হলেও সেটা সব ক্ষেত্রে মানা হয়নি।
যাদের বয়স শেষ হয়ে গেছে বা শেষ হওয়ার পথে তারা সবাই মিলে আন্দোলন শুরু করেছেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাকরির বয়স ৩২ বছর করার স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাদেরই একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করা সাজিদ রহমান। তার সরকারি চাকরির বয়স আছে আর ছয় মাস।

তিনি জানান, সরকার গত বছর পাঁচ মাস বয়স সমন্বয় করার যে কথা বলেছিল তা শুধু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের ব্যাপারে মানা হয়েছে। অফিসার পদে মানা হয়নি। বাংলাদেশে ব্যাংকে গত বছর অফিসার পদে চাকরির যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় তাতে বয়স সমন্বয় করা হয়নি।

আর গত সপ্তাহে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বয়স সমন্বয় করা কথা বলার পর বিসিআইসির অফিসার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তাতে বয়স সমন্বয় করা হয়নি বলে জানান তিনি।

করোনার কারণে পরীক্ষাও পিছিয়ে গেছে। যাদের বয়স এখন ২৯ ও ৩০ তারাও বিপদে আছে। তাই সব মিলিয়ে যদি চাকরির বয়স দুই বছর ছাড় দেয়া হয় তাহলে সবাই উপকৃত হবে বলে তিনি মনে করেন।

করোনার কারণে দেশে ব্যাংকসহ বড় বড় নিয়োগ পরীক্ষা হয়নি। গত বছরের ৪২তম বিসিএস-এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়েছে চলতি বছরে। ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষা পেন্ডিং আছে। গত বছর চিকিৎসকদের একটি বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা হয়েছে। ৪১তম বিসিএস-এর লিখিত পরীক্ষা হলেও ভাইভা আটকে গেছে। আর বেসরকারি চাকরিতেও তেমন নিয়োগ নেই।

বিআইডিএস-এর অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমরা যদি জনসংখ্যার হিসেব করি যে প্রতিবছর কতজনের ৩০ বছর বয়স অতিক্রান্ত হয় তাহলে তা বছরে দেড় লাখের কম হবে না। তবে ঠিক কতজন চাকরির বয়স হারিয়েছে সেটা করোনা শেষ হলে হিসাব-নিকাশ করে বোঝা যাবে। আর যাদের বয়স ২৯ পার হয়ে গেছে তারাও শেষ পর্যায়ে আছেন। যেহেতু একটা লম্বা সময় ধরে নিয়োগ বন্ধ আছে তাই এই সময়ে কমপক্ষে দেড় লাখ চাকরিপ্রার্থী চাকরির বয়স হারিয়েছেন সেটা বলা যায় চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ সময় সীমা ৩০ বছর ধরে।

স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি বছর ২০ লাখ মানুষ কাজের বাজারে আসেন। তার মধ্যে সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশে যাওয়া মিলিয়ে ১৬ লাখের মতো চাকরি পান। করোনার কারণে গত দুই বছর তাতে ধস নেমেছে। তাই নাজনীন আহমেদ মনে করেন, এই বছর যাদের চাকরির ৩০ বছর পার হয়ে গেছে তাদের পরবর্তী এক বছর সুযোগ দেয়া উচিত। এটা আইনের মাধ্যমে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে দেয়া যায়।


আরো সংবাদ



premium cement
গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা

সকল