২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দুর্যোগ না হলে, ধান ঘরে তুলতে পারলে খাদ্য সঙ্কট হবে না : কৃষিমন্ত্রী

দুর্যোগ না হলে, ধান ঘরে তুলতে পারলে খাদ্য সঙ্কট হবে না : কৃষিমন্ত্রী - ছবি : সংগৃহীত

কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার বোরো ধানের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। প্রকৃতি যদি বিরূপ না হয়, যদি দুর্যোগ না হয়, যদি ধান কেটে ঘরে তুলতে পারি, ইনশাআল্লাহ খাদ্য নিয়ে সঙ্কট হবে না।

বৃহস্পতিবার অনলাইনে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ জানান, হাওরের ৪০ ভাগ ধান ইতোমধ্যেই কর্তন করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংস্থা প্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকবৃন্দ অংশ নেন।

এ বছর সারা দেশে বোরোতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৮ লাখ ৫ হাজার ২০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে গত বছরের তুলনায় এবছর এক লাখ ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। একই সাথে গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন লাখ হেক্টরেরও বেশি জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে। আশা করা যায়, গত বছরের তুলনায় এবছর বোরোতে ৯ থেকে ১০ লাখ টন বেশি উৎপাদন হবে।

ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গতবছর হাওরের ধান কাটার জন্য যেভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল, এ বছরও সেভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদেরকে নিয়ে আসা হয়েছে। এ মূহূর্তে হাওরে ধান কাটার জন্য শ্রমিকের কোনো সঙ্কট নেই। পর্যাপ্ত শ্রমিক রয়েছে। একই সাথে, কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ পর্যাপ্ত ধান কাটার যন্ত্র হাওরে এ বছর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবছর ধান চালের উৎপাদন বাড়াতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। বেশি জমি চাষের আওতায় আনা, উন্নত জাতের ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। বীজ, সারসহ বিভিন্ন প্রণোদনা কৃষকদেরকে দেয়া হয়েছে। হাইব্রিড ধানের বীজ সহায়তা বাবদ ৭৬ কোটি টাকার প্রণোদনা কৃষকদেরকে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া, কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মীরা করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কঠোর পরিশ্রম করেছেন, কৃষকের পাশে থেকেছেন। নতুন উন্নত জাতের ধান চাষের জন্য চাষিদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছেন।

কৃষিমন্ত্রী এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ধান কাটায় এগিয়ে আসার ও এ বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসেব অনুযায়ী, এবছর হাওরভুক্ত সাতটি জেলা- কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু হাওরে আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে। ২১ এপ্রিল পর্যন্ত হাওরভুক্ত সাতটি জেলায় ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ২৫ ভাগ।

অন্য দিকে শুধু হাওরের ১ লাখ ৮০ হাজার ৭২৯ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৪০ ভাগ।

সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের আরএডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৮২টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। মার্চ ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি হয়েছে ৪৯.১০ শতাংশ, যেখানে জাতীয় গড় অগ্রগতি ৪১.৯২ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement