প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়নে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি কার্যকর হচ্ছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ এপ্রিল ২০২১, ২০:৩২
প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই উন্নয়নে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি কার্যকর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাণিজাত খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন করেছি। প্রাণিজাত যে খাদ্য আমরা বিদেশে রফতানি করবো অথবা বিদেশ থেকে আমদানি করবো তা মানসম্মত কি-না, পুষ্টিসম্মত কি-না এটা এ গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে। এর পাশাপাশি বিদেশ থেকে আনা প্রাণী খাদ্য মানসম্মত কি-না, এর মধ্যে বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে কি-না সেটাও মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার থেকে জানা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রাণিসম্পদ উৎপাদন উপকরণ ও প্রাণিজাত খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগারের কার্যক্রম ও বিধি-বিধান বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে দেশকে চলমান রাখতে হবে। করোনার মধ্যেও উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে, গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে। চাল, ডাল, শস্য, মাছ-গোশত, দুধ, ডিম উৎপাদন না হলে খাদ্যের সরবরাহ থাকবে না। আমাদের বিপন্ন অবস্থা সৃষ্টি হবে। সেজন্য খাদ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে। প্রতিকূলতা যতই আসুক মোকাবিলা করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ খাত উল্লেখ করে রেজাউল করিম বলেন, অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে প্রাণিসম্পদ খাতকে অব্যাহতভাবে এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকার কাজ করছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা: মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ।
এতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ্ মো: ইমদাদুল হক ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো: আব্দুল জলিল সম্মানিত অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ডা: আবদুল জব্বার শিকদারসহ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, প্রাণিসম্পদ খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজন, বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনাসভায় মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগারের কার্যক্রম ও বিধি-বিধান বিষয়ে উপস্থাপন করেন গবেষণাগার স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো: মোস্তফা কামাল।
রোববার থেকে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ শুরু
‘মুজিববর্ষে শপথ নেবো, জাটকা নয় ইলিশ খাবো’-এই স্লোগান নিয়ে রোববার থেকে শুরু হচ্ছে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২১। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের জাটকা সম্পৃক্ত ২০টি জেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করা হবে। এ উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ সামনে রেখে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সীমিত পরিসরে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সপ্তাহের উদ্বোধনী দিন রোববার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। একই দিন জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন ৫ এপ্রিল সীমিত পরিসরে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২১ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, মাছের আড়ৎ, বাজারসহ জনাকীর্ণ স্থানে জাটকা সংরক্ষণের গুরুত্ব ও এ সংক্রান্ত আইন বিষয়ে প্রচার কার্যক্রম, জাটকা সংরক্ষণে হাট-বাজার ও আড়তে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা এবং ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে বিকল্প কর্মসংস্থানের উপকরণ বিতরণসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, জাটকা সংরক্ষণের জন্য ০১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস দেশের ছয়টি জেলার পাঁচ ইলিশ অভয়াশ্রমে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় বরিশাল, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, শরীয়তপুর ও পটুয়াখালী জেলার ইলিশ অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট নদ-নদীতে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। এ বছর নিষিদ্ধ সময়ে অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট ছয়টি জেলার জাটকা আহরণে বিরত থাকা দুই লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৮ জন জেলেদের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে দুই মাসে ৮০ কেজি হারে মোট ১৯ হাজার ৫০২ মেট্টিক টন ভিজিএফ চাল প্রদান করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।