২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সৌদি অবকাঠামোতে হামলায় বেড়েছে তেলের দাম

রাস তান্নুরার তেল পরিশোধনাগার - ছবি : ব্লুমবার্গ

করোনা মহামারির শুরুর পরে সোমবার প্রথমবারের মতো ব্রেন্টের অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারেল প্রতি ৭০ ডলার। সৌদি আরবের তেল অবকাঠামোতে হামলার পরপরই দুই বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে।

এশিয়ান বাজারে ব্রেন্টের অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে ব্যারেল প্রতি দাঁড়াতে পারে ৭১.৩৮ ডলার, যা ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। তখন তেলের দাম দাঁড়িয়েছিল ৭১.১১ ডলার, যা থেকে বর্তমানের মূল্য এক দশমিক সাত পাঁচ ডলার তথা দুই দশমিক পাঁচ ভাগ বেশি।

মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউ টি আই) অপরিশোধিত তেলের দাম এপ্রিলে বাড়বে এক দশমিক ছয় ডলার তথা দুই দশমিক চার ভাগ। এর ফলে ব্যারেল প্রতি দাম হবে ৬৭.৬৯ ডলার। এর আগে ২০১৮ সালে অক্টোবরে ডব্লিউ টি আইয়ের তেলের দাম বেড়ে ৬৭.৯৮ ডলার দাঁড়িয়েছিল।

রোববার থেকে ইয়েমেনের হাউছি বাহিনী সৌদি আরবের তেলশিল্পের কেন্দ্রভূমিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করছে। তারা পেট্রোলিয়াম রফতানির জন্য গুরত্বপূর্ণ অবকাঠামো পূর্বাঞ্চলীয় রাস তান্নুরায় সৌদি আরামকোর অবকাঠামোতে হামলা করেছে। যদিও রিয়াদ বলছে, বিশ্বের জ্বালানি নিরাপত্তার ওপর এটা একটা ব্যর্থ আক্রমণ।

রাস তান্নুরা হলো বিশ্বে সবচেয়ে বড় তেল টার্মিনাল। প্রতিদিন এ টার্মিনালের মাধ্যমে কমপক্ষে ছয় দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রফতানি করা হয়, যা বিশ্বের তেলের চাহিদার সাত ভাগ। তাই এই টার্মিনালটির নিরাপত্তা ব্যবস্থাও কঠোর। এ বন্দরটিতে বিপুল সংখ্যাক তেলের ট্যাঙ্কও মজুদ রাখা হয়। এই ট্যাঙ্কগুলো থেকেই অপরিশোধিত তেল বিভিন্ন সুপার ট্যাঙ্কারগুলোতে পাইপের মাধ্যমে ভর্তি করা হয়।

ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত এবং তেল উৎপাদন তাতে ব্যাহত না হলেও, ইরান সমর্থিত হাউছি বিদ্রোহীদের দাবি করা এই হামলাগুলোর পরপরই তেলের দাম বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭০ ডলার বেড়েছে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের পর সৌদি তেল স্থাপনার ওপর এই হামলার প্রভাব মারাত্মক। ওই সময় দেশটির প্রধান এক তেল প্রক্রিয়াকরণ অবকাঠামো ও দুইটি তেলক্ষেত্র আক্রমণের শিকার হয়। এর ফলে কিছু দিনের জন্য তেল উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং সৌদির তেলশিল্পের নিরাপত্তাব্যবস্থায় দুর্বলতা প্রকাশিত হয়ে পড়ে। ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা বিদ্রোহীরা হামলার দায়িত্ব স্বীকার করলেও রিয়াদ হামলার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী তেহরানকে দায়ী করেছিল।

সৌদি তেল মজুদের ওপর এসব আক্রমণ খুবই মারাত্মক। তেল প্রক্রিয়াকরণ অবকাঠামো এবং দুটি তেল ক্ষেত্র ২০১৯ সালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্যে পড়ে। এর ফলে কিছু দিনের জন্য তেল উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং সৌদির তেল শিল্পর নিরাপত্তাহীনতা সবার সামনে প্রকাশিত হয়। এসব হামলার দায়িত্ব হাউছি বিদ্রোহীরা নিয়েছিল। যদিও সৌদি আরব তাদের প্রতিদ্বন্দ্বি ইরানকে এসব হামলার জন্য দায়ী করে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের হামলায় তেলের দাম আরো বাড়বে।

সূত্র : আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement