২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাঝ আকাশে ককপিটে বিড়ালের আক্রমণ, তড়িঘড়ি নামল বিমান

মাঝ আকাশে ককপিটে বিড়ালের আক্রমণ, তড়িঘড়ি নামল বিমান - ছবি : সংগৃহীত

রাতের বেলা প্লেনটা বিমানবন্দরে এসে থামতেই গুটি গুটি পায়ে ভেতরে সিঁধিয়েছিল সে। সিটের তলায় বেশ একটা লম্বা ঘুমও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ কী, সকাল হতেই কাদের যেন হাঁটাচলা! কেউ হাইহিল তুলে লেজ মাড়িয়ে দিচ্ছে, তো কেউ বুটের ডগা নাকের কাছে নাচাচ্ছে! ব্যাপারটা মোটেই পছন্দ হয়নি বিড়াল মশাইয়ের। বাঘের জাত বলে কথা, তার একী অপমান!

তার মধ্যেই আবার সারা রাত থমকে থাকা বিশালাকার প্লেনটা হঠাৎ সাঁই সাঁই করে দৌড়ে উড়তে আরম্ভ করেছে। বিড়াল মশাইয়ের ঘুমটা গেল পুরো চটকে! আড়মোড়া ভেঙে, গা-ঝাড়া দিয়ে, চোখ পিটপিট করে সিটের তলা থেকে বেরিয়ে এলেন তিনি। যাত্রীদের তো চক্ষু চড়কগাছ! মাঝ আকাশে বিমানের পেটে একটা নাদুসনুদুস বিড়াল এলো কোত্থেকে? তবে কি কারো পোষ্য, নাকি বেড়ালকেই কেউ হ্যান্ডলাগেজ বানিয়ে প্লেনে উঠে পড়েছেন?

যাত্রীরা কেউ ভয়ে পা তুলে নিচ্ছেন, কেউ আবার আতঙ্কভরা দৃষ্টিতে তার গতিবিধি মাপছেন। এদিকে বিড়াল বাবাজি ততক্ষণে প্লেনজুড়ে তাণ্ডব শুরু করেছেন। রাতে ঘুমোতে গিয়েছিল থেমে থাকা প্লেনে, সকালে আচমকা যদি সেটা দৌড় লাগিয়ে তার পর উড়তে শুরু করে, কারই বা ভালো লাগে!

বিড়াল মশাইয়ের নজর ছিল ককপিটের দিকে। কোনো এক ফাঁকে ককপিটের দরজা খোলা পেয়ে সোজা সেদিকেই দৌড় লাগালেন তিনি। তার পরই লঙ্কাকাণ্ড! একবার সে বিমানচালককে কামড়াচ্ছে তো একবার বিমানসেবিকাদের। মাঝআকাশে অপ্রত্যাশিত এই আক্রমণে বিমানচালকও পর্যুদস্ত! বিড়ালের কামড় থেকে নিজেকে বাঁচাবেন, নাকি বিমান নিয়ন্ত্রণ করবেন! ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা পাইলটের। বাধ্য হয়ে ‘মে ডে’ অর্থাৎ জীবন বিপন্ন বুঝিয়ে বিপদসঙ্কেত পাঠালেন তিনি। জানালেন, ‘ক্যাট-অ্যাটাক’ সামলে বিমানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আর সম্ভব নয়, অতএব বিমান ফেরাতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।

বুধবার সকালে এমনই অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী থাকল কাতারগামী ‘টার্কো অ্যাভিয়েশন’-এর বিমান। বুধবার সকালে সুদানের খারতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাতারের পথে রওনা দিয়েছিল বিমানটি। কিন্তু আধঘন্টার মধ্যেই বাঘের মাসির এই ভয়াবহ কার্যকলাপে বিমান ফিরতে বাধ্য হলো খারতুম এয়ারপোর্টেই।

বিমানকর্মীরা জানালেন, সাফাইয়ের জন্য রাতভর বিমানবন্দরেই রাখা ছিল বিমানটি। সম্ভবত সেই সময়ই সকলের চোখ এড়িয়ে প্লেনে উঠে পড়েন বিনা টিকিটের চারপেয়ে প্যাসেঞ্জার। কিন্তু কাতারের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে কেন ঠিকমতো চেকিং হলো না, জবাব মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ 'টার্কো অ্যাভিয়েশন'-এর। এ দিকে, কাতার যাওয়া তো হলোই না, কাঁচা ঘুম ভেঙে মাঝআকাশে তাণ্ডব করা মার্জার মশাইয়েরই বা কী পরিণতি হলো, অজানা সেটাও।

 


আরো সংবাদ



premium cement