২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘টিকা পাওয়াসহ বাংলাদেশের এখন আরো অনেক চ্যালেঞ্জ আছে’

- ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ টিকা কবে পাবে তা নিয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, এমন সময়ে মার্কিন এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, টিকা উৎপাদনের সীমাবদ্ধতার জন্য বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশের বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যাশার চেয়ে আরো কিছু বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মাইকেল ফ্রিডম্যান এক সাক্ষাত্কারে ইউএনবিকে বলেন, ‘টিকা উৎপাদন একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে কিছুটা সময় লাগবে। তারপরই আপনি টিকার প্রভাবটা বুঝতে পারবেন।’

তিনি বলেন, বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে কিছুটা দীর্ঘ সময় জুড়ে অপেক্ষা করতে হবে। এটি খানিকটা দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটাই বিশ্বের বাস্তবতা।

যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব পর্যায়ে কাজ করার ২৭ বছরের বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা নিরিক্ষে ডা. ফ্রিডম্যান বলেন, বিশ্বব্যাপী টিকা আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠছে এবং করোনা প্রতিরোধে তিনটি টিকার খুব ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এটি বিশ্বের জন্য অত্যন্ত সুখবর। দুর্ভাগ্যক্রমে, ভিন্নতার কারণে আমি বিশ্বাস করি যে প্রথম ছয় মাসে পর্যাপ্ত টিকা পেতে কিছুটা সময় লাগবে।’

ডা. ফ্রিডম্যান বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। কারণ সক্ষমতা উন্নয়নে সময় লাগে।

বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৭৮০ কোটি এবং সেজন্য বিশ্বব্যাপী ১৫০০ কোটিরও বেশি টিকার প্রয়োজন।

মার্কিন এ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, তিনটি সম্ভাবনাময় টিকার উৎপাদন ক্ষমতা বিবেচনা করলে দেখা যায় প্রথম ছয় মাসে মাত্র ৭ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা উৎপাদন সম্ভব।

বাংলাদেশের জন্য সত্যিকার অর্থেই একটি চ্যালেঞ্জ দেখছেন জানিয়ে ডা. মাইকেল ফ্রিডম্যান বলেন, আমাদেরকে এখানে খুব বাস্তববাদী হতে হবে। বিশ্বের বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা পাওয়ার জন্য এক বছরও অপেক্ষা করতে হতে পারে।

প্রথম দিককার উৎপাদিত টিকার বেশিরভাগ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে চলে যাবে। কেননা টিকা কেনার জন্য আগে থেকে অর্থলগ্নির (প্রিপেইড) বিষয় থাকায় এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পেতে ওইসব দেশ টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোতে বিনিয়োগ করেছে।

তিনি আরো বলেন, ওইসব দেশের অনেক দেশই করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের হারকে কারণ হিসেবে দেখাবে। তাই অনেক দেশের পক্ষেই প্রথম ছয় মাসে পর্যাপ্ত টিকা পাওয়া সহজ হবে না।

মার্কিন এ বিশেষজ্ঞ বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকা পাওয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো নিজেদের সক্ষমতার উন্নয়ন ও সহযোগিতা।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশ সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে। তবে এ জাতীয় সক্ষমতা উন্নয়নে সময় লাগবে। প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জসহ এটি খুবই কৌশলগত প্রক্রিয়া।’

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাদের আগে টিকার ডোজ পাওয়া উচিত সে সম্পর্কেও কথা বলেছেন ডা. ফ্রিডম্যান।

বেশি ঝুঁকিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী, নিরপত্তা কাজে নিয়োজিত বাহিনী, নীতি প্রণয়নকারী সরকারের আমলা এবং অসহায় মানুষকে আগে টিকা দেয়ার সুপারিশ করেন তিনি।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ভারতীয় সংস্করণের তিন কোটি ডোজ সংগ্রহের জন্য ইতোমধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এসআইআই) সাথে সমঝোতা স্মারক সই করেছে সরকার।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান।

সাশ্রয়ী মূল্যে কোভিড -১৯ টিকা সহজলভ্য করা এবং দেশের প্রয়োজনীয়তার নিরিক্ষে বিতরণ করার বিষয়টির উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ।

করোনাভাইরাসের চিকিত্সার জন্য কোভিড -১৯ টিকাকে ‘বিশ্বের জনসাধারণের সম্পদ’ হিসেবে মূল্যায়ন করার জন্য বিশ্বব্যাপী দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ও সহযোগিতা অপরিহার্য বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ এরইমধ্যে টিকা দ্রুত, নিরাপদ এবং কার্যকরভাবে বিতরণ নিশ্চিতে সিরিঞ্জ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে।

কোভিড -১৯ টিকা বিশ্বের মানুষের জন্য যত ডোজ প্রয়োগ করা হবে সে হিসেবে ততগুলো সিরিঞ্জের প্রয়োজন হবে।

২০২১ সালের মধ্যে ১০০ কোটি সিরিঞ্জ সংগ্রহের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শুরুতে এ বছর ৫২ কোটি সিরিঞ্জ সংগ্রহ করবে ইউনিসেফ। কোভিড -১৯ এর টিকা আসার আগে সিরিঞ্জগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পৌঁছানো নিশ্চিত করবে সংস্থাটি।

২০২১ সালের মধ্যে কোভিড -১৯ এর পর্যাপ্ত টিকা পাওয়া যাবে ধরে নিয়ে ইউনিসেফ কোভিড -১৯ টিকা প্রয়োগের জন্য ১০০ কোটি সিরিঞ্জ সরবরাহ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যা হাম, টাইফয়েড ও অন্যান্য রোগের টিকা কর্মসূচির জন্য ইউনিসেফের কেনা ৬২ কোটির চেয়ে অনেক বেশি।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিটা ফোর বলেন, ‘কোভিড -১৯ এর প্রতিরোধে টিকা প্রদান কর্মসূচি মানব ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ উদ্যোগ হবে এবং আমাদেরকে টিকা উৎপাদনের সাথে সাথে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে তাড়াহুড়া করার চেয়ে আমাদেরকে এখনই দ্রুত এগোতে হবে। ইতোমধ্যে টিকার দ্রুত, নিরাপদ ও কার্যকর বিতরণ নিশ্চিতে ৫০ কোটিরও বেশি সিরিঞ্জ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রাক-সরবরাহ করেছি। যা (সিরিঞ্জগুলো) বিশ্ব জুড়ে দেড়বার টিকা দেয়ার জন্য যথেষ্ট হবে।’

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ২৪ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এ সংখ্যা বেড়ে ৬ হাজার ৭৭২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে, একদিনে নতুন করে ২ হাজার ২৫২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯১ জনে পৌঁছেছে।

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement
বগুড়ায় গ্যাসের চুলার আগুনে বৃদ্ধা নিহত বগুড়ায় ধানের জমিতে পানি সেচ দেয়া নিয়ে খুন জিআই স্বীকৃতির সাথে গুণগত মানের দিকেও নজর দিতে হবে : শিল্পমন্ত্রী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ সখীপুরে সাবেক ও বর্তমান এমপির সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার অন্যতম দায়ী : মির্জা আব্বাস সৈয়দপুরে জামায়াতের উদ্যোগে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে না থাকার কারণ জানালেন সাকিব ঝালকাঠিতে গ্রাম আদালত কার্যক্রম পরিদর্শনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল চুয়াডাঙ্গায় বাতাসে আগুনের হল্কা : গলে যাচ্ছে সড়কের পিচ বৃষ্টির নামাজ আদায়ের নিয়ম

সকল