২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যেভাবে হত্যা করা হয়েছে বাকৃবির অটোচালক দুলালকে

যেভাবে হত্যা করা হয়েছে বাকৃবির অটোচালক দুলালকে - সৃংগৃহীত

যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) এলাকার অটোচালক দুলালকে, জানিয়েছেন হত্যাকারীরা। শুক্রবার দুলাল হত্যা মামলার চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হলে দু’জন স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি থেকেই জানা যায় হত্যার সেই লোমহর্ষক তথ্য।

বাকৃবির আমবাগান এলাকার অটোচালক দুলাল মিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় চারজনকে। তাদের মধ্যে দু’জন শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।

জানা যায়, এলাকার মাদকাসক্ত যুবক আলমগীর। নিয়মিত নেশা করতেন তিনি। নেশার টাকা জোগাড় করতে স্ত্রীর পায়ের নুপুর বন্ধক দিয়েছেন সাত হাজার টাকায়। কিন্তু টাকা ফেরত না দেয়ায় ফিরে পাননি বন্ধক দেয়া নুপুর। আর ওই টাকা জোগাতেই হত্যা ও ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন আলমগীর। নেতৃত্ব দেন অটোচালক দুলাল হত্যার ঘটনায়।

পুলিশ জানায়, তারাকান্দার অটেচালক দুলাল মিয়া অন্য দিনের মতো গত ২৫ নভেম্বর ময়মনসিংহ নগরীর শম্ভুগঞ্জ থেকে একটি মিশুক রিকশা ভাড়ায় নিয়ে চালাতে থাকেন। রাত ৮টার দিকে মাসকান্দা থেকে যাত্রীবেশে কয়েকজন দুলালকে বাকৃবির আমবাগান এলাকায় ভাড়ায় নিয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে মিশুক রিকশাচালক দুলাল আমবাগান এলাকায় যাওয়া মাত্রই তার গলায় চিকন দড়ি দিয়ে পেচিয়ে ধরেন বাতেন। ঘটনার সবই ছিল পূর্ব পরিকল্পনার অংশ। পরে আলমগীর তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে দুলালের পিঠে আঘাত করেন ও তাকে রিকশা থেকে ফেলে দেন। একপর্যায়ে তার রিকশা ছিনিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান সবাই।

এ ঘটনায় দুলালের স্ত্রী জহুরা খাতুন কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অজ্ঞাত এই হত্যাকাণ্ডর মাত্র তিন দিনের মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূলহোতা আলমগীর, বাতেন, লিটন মিয়া ও শুক্কর আলীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আলমগীর ও বাতেন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ আরো জানায়, আলমগীর ও বাতেন একসাথে মাদকসেবন করতেন। আলমগীর তার স্ত্রীর পায়ের নুপুর সাত হাজার টাকায় বন্ধক দিয়ে মাদকের টাকা সংগ্রহ করেন। পরে আর ফেরত আনতে না পেরে অটো ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে আলমগীর তার মাদকসেবী বন্ধু বাতেনসহ অন্যদের সাথে অটো ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা শেয়ার করেন। তার কাছে চাকু ছিল। বাতেনকে দিয়ে চীকন দড়ি কিনিয়ে নেন। ঘটনার দিন মাসকান্দা থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আমবাগান এলাকায় যাওয়ার জন্য যাত্রীবেশে মিশুক নিয়ে যান। পরে তাকে হত্যা করে মিশুক নিয়ে পালিয়ে যান।

উল্লেখ্য, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাকৃবির আমবাগানে এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে টহল পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয় পথচারী দুই যুবক। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোবাইল ফোন, টাকা, অটো রিকশার টাকা রাখার ঝুড়িসহ বেশকিছু আলামত জব্দ করে পুলিশ।


আরো সংবাদ



premium cement