২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রিমান্ড শেষে কারাগারে নৃত্যশিল্পী ইভান

ইভান শাহরিয়ার সোহাগ - ফাইল ছবি

মানবপাচার আইনের মামলায় নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে সাত দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে আটক রাখার জন্য আদালতে হাজির করা হয়। ঢাকার মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইভানকে সাত দিনের রিমান্ড দেয়ার জন্য আবেদন করেন। আদালত ইভানের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য ২১ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য্য করেন। সেমতে রিমান্ড হয়। রিমান্ড শেষে সোমবার ইভানকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর ইভান শাহরিয়ার সোহাগকে গুলশান নিকেতন থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামিরা ভুক্তভোগীদের নাচ শিখিয়ে ভালো বেতনে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবে ভুক্তভোগীরা রাজি হলে তাদের থাকা-খাওয়া নিশ্চিতসহ ক্লাবে নাচ-গান করার বিনিময়ে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হবে বলে মৌখিক চুক্তি করেন। ভুক্তভোগীরা সরল বিশ্বাসে আসামিদের ওপর ভরসা করে দুবাইসহ অন্যান্য দেশে যেতে রাজি হন।

আসামি আজম খান, তার ভাই নাজিম ও এরশাদের সহায়তায় এমন এক ভুক্তভোগী ময়নার পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাজগপত্র প্রস্তুত করে দেন।

তারপর ২০১৯ সালের মে মাসে ময়নাকে দুবাইয়ের সারজায় নিয়ে যান। পরবর্তীতে আজম খান সেখানে ময়নাকে নিজেসহ বিভিন্ন লোক নিয়ে যৌন নির্যাতন চালান। কিন্তু দুবাই গমনের পর আসামিরা ময়নাকে কোনো বেতন দেননি। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিবাদী নির্মল দান, আলমগীর, আমান ও শুভসহ অজ্ঞাতনামা এজেন্টের সহায়তায় ভুক্তভোগী আলেয়া ও মনি আক্তারদের ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ড্যান্স ক্লাব থেকে প্রলোভনের মাধ্যমে নির্বাচন করেন। এভাবে বহু বাংলাদেশি নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে আসামিরা দুবাইসহ অন্যান্য দেশে পাচার করেন এবং জোরপূর্বক আটক রেখে যৌন নির্যাতন চালান।’

আসামি নির্মল চন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করা হলে গত ১৩ আগস্ট আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে তিনি বলেন, ইভান বিদেশে পারফর্ম করার জন্য অধরা ও বিথী নামে দুজন আর্টিস্ট দেন। আসামি ইয়াছিনও ২০ আগস্ট আদালতে স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দিতে একই কথা বলেন।

রিমান্ড আবেদনে আরো বলা হয়, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশি তরুণীদের দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করছেন। তাদের বিরুদ্ধে তিনজন ভুক্তভোগী ইতিমধ্যে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিরা আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য। মামলার মূল রহস্য উদঘাটন, পলাতক আসামিদের গ্রেফতার ও আসামিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দালাল চক্রের অন্যকে বা কারা জড়িত তা বের করার জন্য ইভানকে সাতদিনের পুলিশ রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন বলে আবদনে উল্লেখ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

বহু বাংলাদেশি নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে দুবাইসহ অন্যান্য দেশে পাচার এবং জোরপূর্বক আটক রেখে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গত ২ জুলাই মূলহোতা আজম খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মৃনাল কান্তি শাহ।

মামলার আসামিরা হলো- আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ড (২৬), স্বপন হোসেন (২৮), আজম খান (৪৫), নাজিম (৩৬), এরশাদ ও নির্মল দাস (এজেন্ট), আলমগীর, আমান (এজেন্ট) ও শুভ (এজেন্ট)।


আরো সংবাদ



premium cement