২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সদরে মুহতামিম হলেন আল্লামা শফি

সদরে মুহতামিম হলেন আল্লামা শফি - ছবি : সংগৃহীত

মজলিসে শূরার কাছে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফি। মজলিসে শূরা পদত্যাগ গ্রহণ করে সদরে মুহতামিম হিসেবে তাকে নির্বাচিত করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে মজলিসে বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন শূরার অন্যতম সদস্য মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী।

রাত সাড়ে দশটার দিকে ছাত্র সমাবেশে সিদ্ধান্তসমূহ ঘোষণায় তিনি বলেন, আল্লামা আহমদ শফি সাহেব হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামিমের পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। পরে শূরা কমিটি তাকে সদর মুহতামিম হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।

মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা নুরুল ইসলাম কক্সবাজারিকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া মাদরাসার সহকারী শিক্ষা সচিব ও হেফাজত আমীরপুত্র মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতিসহ বুধবারের সব সিদ্ধান্ত বলবত রেখেছে শূরা কমিটি। পরের মুহতামিম নির্ধারণের দায়িত্ব শূরা কমিটির ও সম্প্রতি বহিষ্কার করা তিন শিক্ষককেও পুনর্বহাল করা হবে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত আল্লামা শাহ্ আহমদ শফির সভাপতিত্বে চলা এ শূরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শাহ্ মুহিবুল্লাহ্ বাবুনগরী, মাওলানা শেখ আহমাদ, মাওলানা মাওলানা নোমান ফয়েজি, মাওলানা সালা উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা ওমর ফারুক, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা ইয়াহইয়া, মাওলানা আহমদ দিদার ও মাওলানা শোয়াইব।

এর আগে সন্ধ্যায় সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে মন্ত্রণালয় হাটহাজারী মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করেছে। ছাত্ররা ওই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে।

শতবর্ষী হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর হাটহাজারী মাদরাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। টানা দু’দিনের ছাত্র আন্দোলনে বয়োবৃদ্ধ হেফাজত আমীরের বার বার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত দিতে গিয়ে বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটে। তাই অসুস্থ হেফাজত আমীর রাতে শূরা বৈঠকে মুহতামিমের পদ হতে পদত্যাগ করার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে যে কোনো ধরণের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাদরাসার আশপাশে শান্তিপূর্ণভাবে মোতায়েন ছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য।

তিনটি সিদ্ধান্ত
গত বুধবার দুপুর থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা। এরই প্রেক্ষিতে ওইদিন রাতে জরুরি শূরা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জরুরি এ বৈঠক শেষে ছাত্র সমাবেশে এসে তিনটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে প্রথমত, দারুল উলুম হাটহাজারী থেকে মাদরাসার শিক্ষাসচিব মাওলানা আনাস মাদানীকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, আন্দোলনকারী ছাত্রদেরকে কোনো ধরণের হয়রানি করা হবে না এবং ভর্তি নিয়ে যাদের হয়রানি করা হয়েছে তারা ভর্তির সুযোগ পাবে।

তৃতীয়ত, ছাত্রদের বাকী দাবি পূরন করার জন্য আগামী ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার মাদরাসার পুর্ণাঙ্গ শূরা অধিবেশন ডাকা হবে।

শুরার এ সিদ্ধান্তের পর ছাত্র আন্দোলন শনিবার পর্যন্ত আংশিক স্থগিত করে শুধু ক্লাশ বর্জনের ঘোষণা করে ছাত্র নেতারা। কিন্তু মাদরাসা বন্ধের গোপন খবরে ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা ১০টার দিকে থেকে আবার বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা তুমুল আন্দোলনের ডাক দেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাইকে ছাত্রনেতৃবৃন্দের ঘোষণায় শোনা যায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ গোপনে বৈঠক করে মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র করছে ও ছাত্রদের প্রশাসন দিয়ে হয়রানির চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই তারা আবার মাদরাসার মাঠে নেমে এসেছে। যতক্ষণ কর্তৃপক্ষ ষড়যন্ত্র থেকে ফিরে আসবে না এবং দাবি মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করবে না ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে।

পরে এমন পরিস্থিতিতে আল্লামা শাহ আহমদ শফি বৃহস্পতিবার জরুরি এ শূরা বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন এবং বৈঠকে তিনি পদত্যাগ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement