২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

তাহিরপুরে বিলুপ্ত প্রজাতির বানর উদ্ধার

তাহিরপুরে বিলুপ্ত প্রজাতির বানর উদ্ধার - নয়া দিগন্ত

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্ধ গ্রাম থেকে বিলুপ্ত প্রজাতির এ প্রাণিটিকে উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্ধ গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মনজুরুল আলমের পরিত্যক্ত বাড়ির বেল গাছে মঙ্গলবার দুপুরে বানরটিকে দেখতে পায় গ্রামবাসী। তবে তারা এই প্রাণিটির সাথে পরিচিত না বলে অনেকের মনে ভয়ও কাজ করতে থাকে। পরে গ্রামবাসীর কয়েকজন মিলে কৌশলে বানরটিকে আটক করেন।

সিলেট বন বিভাগের রেঞ্জার হাসমত আলী জানান, লজ্জাবতী বানর ইবহমধষ ঝষড়ি খড়ৎরং নামে পরিচিত। লজ্জাবতী বানর ছোট নিশাচর ও চুপচাপ প্রজাতির একটি প্রাণী। তাদের এই লাজুক স্বভাবের কারণেই এদের নাম লজ্জাবতী বানর। আমাদের দেশে এদের অবস্থা খুব খারাপ। তাই আইইউসিএন এদের মহাবিপন্ন প্রাণিদের তালিকায় রেখেছে। লজ্জাবতী বানর বা বাংলা লজ্জাবতী বানর অন্যান্য লজ্জাবতী বানর প্রজাতিদের থেকে অনেক বেশি বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও এরা বিশ্বে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে।

জানা যায়, দেশে লজ্জাবতী প্রজাতির যে বানর আছে তা 'বেঙ্গল স্লো লরিস' নামে পরিচিত। অন্যান্য লজ্জাবতী বানর প্রজাতি থেকে লজ্জাবতী বানর আকারে সব থেকে বড় হয়ে থাকে। দৈর্ঘ্যে ২৬-৩৮ সেমি পর্যন্ত হয়। এরা ওজনে ১-২ কেজি হয়। লজ্জাবতী বানরদের মাথা গোলাকার, মুখ চ্যাপ্টা, মায়াবী চোখগুলো তুলনামূলক বড়। কান ছোট ,লেজ ও ছোট। শরীর ঘন ময়লা সাদাটে-বাদামি লোমে ঢাকা। মাথার উপর একটা গাঢ় রঙের দাগ রয়েছে যা পিঠের উপর দিয়ে শরীরের পিছন পর্যন্ত গিয়েছে। শরীরের উপরের অংশ বাদামী বর্ণের। ঋতু ভেদে এদের গায়ের রং কিছুটা পরিবর্তন হয়।

একাকী নীরবে বাস করতে পছন্দ করা এই নিশাচর বানররা সাধারণত রাতেই সক্রিয় হয়। সারাদিন গাছের কোটরে বা গাছের পাতায় ভরা ঘন ডালে ঘুমিয়ে কাটায় যেখানে সূর্যের আলো পৌছায় না। আঁধার ঘনিয়ে এলে একা বা জোড়ায় খাবারের সন্ধানে বেড় হয়। লজ্জাবতী বানর গাছের উঁচু শাখায় থাকতে পছন্দ করে। চিরসবুজ ও বৃষ্টিপাতপূর্ণ ঘন বন এদের পছন্দের আবাসস্থল তবে আর্দ্র পত্রঝরা বন, বাঁশবনেও এরা থাকে।এরা বছরে একবার একটি বাচ্চা প্রসব করে। লজ্জাবতী বানর প্রায় ২০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। লজ্জাবতী বানর বনাঞ্চল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পরাগায়নেও এদের ভূমিকা আছে। গাছের পাতা ও ছোট ছোট ফলমূল এদের প্রধান খাদ্য।

আমাদের দেশে গত দুই দশকে লজ্জাবতী বানরের সংখ্যা প্রায় ৫০ % কমে গেছে শুধুমাত্র আবাসস্থল ধ্বংস ও শিকারের কারণে। আন্তর্জাতিক চোরা বাজারে লজ্জাবতী বানরের অনেক চাহিদা রয়েছে। এই কারণে সারা বিশ্বতেই এরা হুমকির মধ্যে পরেছে। আমাদের দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণপূর্বের বনাঞ্চলে এরা খুব কম সংখ্যায় টিকে আছে। এছাড়া ভারত, মিয়ানমার, চীন, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এরা রয়েছে।

স্থানীয় শফিক মিয়া জানান, এমন প্রাণী এর আগে কেউ দেখেননি। এই বণ্যপ্রানী আটকের সংবাদ পেয়ে উৎসুক জনতা প্রাানীটিকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় করেছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা বিজেন ব্যানার্জি জানান, লজ্জাবতী বানরটি আটককের সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বণ্যপ্রানীটিকে উদ্ধার করে বণ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরের বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা বিরেন্দ্র কিশোর রায় বলেন, আমি সন্ধ্যায় দিকে এ ব্যাপারে অবগত হই। সেখানে আমাদের লোক পাঠানো হয়েছে। এটিকে উদ্ধার করে আমরা বিট অফিসে নিয়ে আসবো।


আরো সংবাদ



premium cement
রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি!

সকল