২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

করোনায় শঙ্কা বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের

করোনায় শঙ্কা বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের - নয়া দিগন্ত

করোনা প্রভাবে অনেকটা ফাঁকা রাজধানীর সড়কগুলো। অলিগলিতেও দেখা মিলছে না লোকজনের আনাগোনা। ফুটপাতে অবস্থানরত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয়-রোজগারে প্রভাব ফেলছে। এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দৈনিক যেখানে ইনকাম হতো ৮ থেকে ৯ শত টাকা সেখানে এখন ইনকাম হয় দুই থেকে তিনশ টাকা। তাদের ভাষ্যমতে কাঁচাবাজারগুলোতে কিছু বেচাকেনা হলেও ফুটপাতে থাকা এসব পন্যের দিকে ক্রেতাদের ঝোঁক একদমই কমে গেছে।

শুধু নিম্ন আয়ের মানুষই নয়। প্রভাব পড়েছে পরিবহন সেক্টরও। রাজধানীর পাবলিক বাস গুলোতে যাত্রীসংখ্যা একদমই নেই। রাইড শেয়ারিং অ্যাপসে মোটরসাইকেল ও কার চালকরাও পাচ্ছেন না আগের মত যাত্রী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে যদিও ২-১ জন যাত্রী পাওয়া যায় তা নিতে হয় খুব স্বল্প মূল্যে।

সোমবার সরাদিন রাজধানীর জুড়াইন, কাজলা, শনির আখড়া, মির্ধা বাড়ি এলাকায় ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে।

শনির আখড়া এলাকায় সিদ্ধ ডিম বিক্রেতা হাসিবুল হাসান নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত আমি পনেরশো টাকার ডিম বিক্রি করতাম। কিন্তু কয়েকদিন যাবত করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে না। তাই আমার বিক্রি কমেছে। গতকালকে আমি মাত্র ৩৭০ টাকার ডিম বিক্রি করেছি।

শনির আখরা বাঁশপট্টি বাজারের পাশে পেয়ারা বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, আগে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি হতো। যা থেকে আমার ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা লাভ থাকতো। এখন গত তিন দিন যাবৎ বেচা বিক্রি কমে গেছে। গতকাল ৮০০ টাকার মাল বিক্রি করেছি।

কাজলা বাজারের সামনের ডাব বিক্রেতা আমানুল্লাহ নয়া দিগন্তকে বলেন, স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন ২৮০ থেকে ৩০০ পিস ডাব বিক্রি হতো। কিন্তু করোনার প্রভাব শুরু হওয়ার পর থেকে বিশেষ করে গত তিন দিন যাবত বেচা-বিক্রি একদম কমে গেছে। গতকাল ডাব বিক্রি করেছি ৫৭ পিস। আর আজ এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৩৭ পিস। ঠিক করেছি আগামী কাল থেকে আর ডাব নিয়ে বসবো না। এই কয়েকদিন বাসায় থাকব।

যাত্রাবাড়ী মোড়ে অপেক্ষারত রাইড শেয়ারিং অ্যাপস উবারের মোটরসাইকেল চালক শুভ ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন তিনি মোটরসাইকেল চালিয়ে পনেরশ থেকে দুই হাজার টাকা ইনকাম করেন। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ তার ইনকাম একদম কমে গেছে। আজ সারা দিনে তিনি মাত্র ৭৭০ টাকা ইনকাম করেছেন। এখন তিনি বাসায় চলে যাবেন।

চিটাগাং রোড থেকে আব্দুল্লাহপুর গামী মঞ্জিল পরিবহনের কন্টাকটার আবুল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ের চাইতে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম। রাজধানীর ভেতরে খুব কম সংখ্যক লোক যাতায়াত করছে। কিন্তু আজ বিকাল থেকে রাজধানী থেকে অনেক লোক বাহির হচ্ছেন।

শনি আখরা বাঁশপট্টি বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন নয়া দিগন্তকে জানান, ২৫ তারিখ থেকে অফিস আদালত বন্ধ হয়ে যাবে। তাই কাচা বাজারে আজ প্রচুর চাপ। ২৫ তারিখের পর দোকান খোলা রাখবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে তো কোন লোক নেই। যদি ক্রেতা থাকে তবে অবশ্যই দোকান খোলা রাখবো। আর ক্রেতা না থাকলে দোকান খুলে রেখে কি লাভ।

শনির আখড়া বাসস্টান্ডের বাদাম বিক্রেতা সুমন মিয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, আজ একদম কোনো ক্রেতা নেই। দুপুর থেকে বসে আছি তেমন কোন বেচা বিক্রি করতে পারেনি। আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দোকান নিয়ে বাসায় চলে যাব।


আরো সংবাদ



premium cement