৪ বন্দী উদ্ধারে যেভাবে হামলা চালায় ইসরাইল
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৯ জুন ২০২৪, ১২:৪১
গাজা উপত্যকার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক হামলা চালিয়ে অন্তত ২১০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এ সময় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী চার বন্দীকে উদ্ধার করেছে। কয়েক সপ্তাহব্যাপী পরিকল্পনার পর এ হামলা চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।
এ হামলায় আহত হয়েছেন চার শতাধিক।
ইসরাইলিদের জন্য এ হামলা স্বস্তি নিয়ে এলেও ফিলিস্তিনিদের জন্য সেটা আরো দুর্ভোগ তৈরি করেছে।
‘সীডস অব সামার’ নামে অভিহিত এই হামলা অস্বাভাবিকভাবে দিনের বেলায় পরিচালনা করা হয়েছিল। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে আরো বেশি চমকে দিয়েছে।
সকালের মাঝামাঝি সময়ে সাধারণত রাস্তাগুলো ব্যস্ত থাকে। লোকজন নিকটবর্তী দোকানে কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকে। ওই এলাকায় ঢুকে অভিযান চালানো ইসরাইলি স্পেশাল ফোর্সের জন্য শুধু যে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল তা নয়, বিশেষ করে বের হওয়াটা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
স্পেশাল ফোর্সের এক কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বলে ইসরাইলি পুলিশ জানিয়েছে।
১৯৭৬ সালে উগান্ডা থেকে ১০০ জন বন্দীকে ইসরাইলের উদ্ধারের কথা উল্লেখ করে আইডিএফের প্রধান মুখপাত্র রিয়ার এডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘এটা এনটেবিতে যে রকম অভিযান ছিল সেরকমই একটা।’
তিনি জানান, স্পেশাল কমান্ডোরা একইসাথে নুসিরাত ক্যাম্পের দু’টি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে হামলা চালায় যেখানে বন্দীদের রাখা হয়েছে।
একটা অ্যাপার্টমেন্টে ২৬ বছর বয়সী একজন বন্দী নোয়া আরগামানি ছিলেন। অন্যটিতে ৪১ বছর বয়সী স্লোমি জিভ, ২৭ বছর বয়সী আন্দ্রে কজলভ এবং ২২ বছর বয়সী আলমগ মির জেন ছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া মোবাইল ফোনের ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষেপণাস্ত্রের বাঁশি এবং গোলাগুলির শব্দ শুনে লোকজন আত্মরক্ষার জন্য নিচু হয়ে পড়ে।
পরের ফুটেজে রাস্তায় লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।
এই অভিযানে স্পষ্টতই বড়সড় ফোর্স জড়িত ছিল। মধ্য গাজার দু’টি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, ৭০টিরও বেশি লাশ তারা গণনা করেছেন।
নুসিরাতে আশ্রয় নেয়া নোরা আবু খামিস কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘আমি আমার সন্তানের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করেছি, আমার প্রিয় সন্তান। আমার আরেক সন্তান জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এমনকি আমার স্বামী এবং শাশুড়ি আমার পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা একটা গণহত্যা।’
১০ বছর বয়সী আরিজ আল জাদনেহ বিমান হামলা, ট্যাঙ্ক এবং গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা শ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমার বোন রিমাজের মাথায় শার্পনেলের আঘাত লেগেছিল এবং আমার পাঁচ বছরের বোন ইয়ারাও শার্পনেলের আঘাতে আহত হয়েছে।’
ইসরাইলি হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ৪৫ বছর বয়সী জিয়াদ নামের প্যারামেডিক বলেন, ‘এটি হরর সিনেমার মতো, তবে এটি একটি সত্যিকারের গণহত্যা ছিল। ইসরাইলি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান সারারাত এলোমেলোভাবে গুলি চালিয়েছে মানুষের বাড়িতে এবং যারা এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল তাদের লক্ষ্য করে।’
তিনি বলেন, চারজনকে মুক্ত করতে ইসরাইল দুই শতাধিক নিরীহ বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে।
সূত্র : বিবিসি এবং অন্যান্য
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা