১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নেতানিয়াহু, ইসরাইল ও হামাসের জন্য আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানার অর্থ কী

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু - সংগৃহীত

যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি) থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে এমন খবরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

তার মতে, ‘এটি নজিরবিহীন নৈতিক অবমাননা।’

তিনি দাবি করেন, ‘ইসরাইল হামাসের বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ চালাচ্ছিল, যারা (হামাস) একটা গণহত্যাকারী সন্ত্রাসী সংগঠন এবং তারাই হলোকাস্টের পরে ইহুদি জনগণের ওপর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলা চালিয়েছে।’

আইসিসি বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি করিম খানকে ‘আধুনিক যুগের অন্যতম বড় ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন নেতানিয়াহু।

তার মতে, করিম খান অনেকটা নাৎসি অধ্যুষিত জার্মানির বিচারকদের মতো আচরণ করছেন, যারা ইহুদিদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিলেন এবং যাদের জন্যই হলোকাস্টের মতো ঘটনা সম্ভব হয়েছিল।

আইসিসিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ইহুদিবিদ্বেষের আগুনে নির্দয়ভাবে পেট্রল ঢালারই সমান।’

তার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত ওই ভিডিওতে ইংরেজিতে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এমনটা তখনই দেখা যায় যখন তিনি চান তার বার্তা বিদেশী শ্রোতাদের কাছে, বিশেষত মার্কিন মুলুকে পৌঁছাক, যা তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

ইসরাইলের রাজনৈতিক নেতৃত্বের গলাতেও একই রকম ক্ষোভের সুর পাওয়া গেছে। তাদের এই ক্ষোভের কারণ আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খানের জারি করা এক বিবৃতি। যেখানে তিনি (করিম খান) সতর্কতার সাথে আইনি ভাষা বেছে নিয়েছিলেন।

ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা প্রতিটা শব্দ, প্রতিটা লাইন ব্যবহার করে তিনি হামাসের তিন প্রভাবশালী নেতা এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা বিস্ফোরক অভিযোগের ব্যাখ্যা করেন।

করিম খানের বক্তব্যে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন এবং সশস্ত্র সঙ্ঘাতের আইন যেন সবার ওপর সমানভাবে প্রযোজ্য হয়। ওই আইনের ওপর ভিত্তি করেই তিনি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরেছেন।

করিম খান আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি হওয়ার পাশাপাশি ব্রিটেনের রাজার একজন পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন।

তার কথায়, ‘কোনো পদাতিক সৈনিক, কমান্ডার, বেসামরিক নেতা- কেউ দায় থেকে অব্যাহতি পাওয়ার শর্ত নিয়ে কাজ করতে পারে না। এই আইন বেছে বেছে প্রয়োগ করা যায় না। এবং যদি তাই হয়, তাহলে আমরা এর (এই আইনের) পতনের পরিস্থিতি তৈরি করব।’

ফলে দু’পক্ষকেই (হামাস এবং ইসরাইল) আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আনার তার এই দাবি ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তবে এতে যে শুধুমাত্র ইসরাইলই যে ক্ষুব্ধ হয়েছে এমন নয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানার জন্য আবেদন করাটা ‘অবমাননাকর’।

তার মতে, ‘ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে কোনো তুলনাই হতে পারে না।’

হামাস তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেছে, ‘আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি, ভুক্তভোগীর সাথে জল্লাদের তুলনা করেছেন।’

হামাসের আরো অভিযোগ, ইসরাইলি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ জানাতে সাত মাস দেরি হয়েছে।

হামাস বলছে, ‘ইতোমধ্যে ইসরাইলের দখলদাররা হাজার হাজার অপরাধ করে ফেলেছে।’

করিম খান কিন্তু দু’পক্ষের মধ্যে সরাসরি তুলনা করেননি। শুধুমাত্র হামাস এবং ইসরাইল দু’পক্ষই যে ধারাবাহিকভাবে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, সেই দাবির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তুলনা করেন।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক সশস্ত্র সঙ্ঘাতের মধ্যে। কিন্তু ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে চলমান সশস্ত্র সঙ্ঘাত কোনো আন্তর্জাতিক যুদ্ধ নয়।’

আদালত ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে। কারণ এটা জাতিসঙ্ঘে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পেয়েছে। আইসিসি যে রোম সংবিধি তৈরি করা হয়েছে, তাতে স্বাক্ষর করেছে ফিলিস্তিন।

অন্যদিকে, নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, তিনি থাকতে ফিলিস্তিনিরা কখনোই স্বাধীনতা পাবে না।

দু’পক্ষের তুলনাকে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্টসগ ‘এই নৃশংস সন্ত্রাসী এবং ইসরাইলের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের’ সাদৃশ্য টানা বলে মন্তব্য করেন।

তবে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘মিথ্যা সাদৃশ্য’ টানা হয়েছে বলে হার্টসগ যে অভিযোগ তোলেন তেমনভাবে এই বিষয়টিকে দেখতে নারাজ মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

বরং আইসিসির প্রসিকিউটর যেভাবে দু’পক্ষের জন্যই সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ দেখতে চেয়েছেন, তার প্রশংসা করেছে তারা।

ইসরাইলের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন বিটসেল্ম বলেছে, এই গ্রেফতারি পরোয়ানা ইসরাইলের নৈতিক অধঃপতনের প্রতীক।

ওই সংগঠন আরো বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক মহল ইসরাইলকে ইতোমধ্যে সঙ্কেত পাঠিয়েছে যে তারা (ইসরাইল) তাদের সহিংসতা, হত্যা ও ধ্বংসের নীতি বজায় রাখবে কিন্তু জবাবদিহি করবে না, এমনটা চলবে না।’

মানবাধিকার-কর্মীরা বহু বছর ধরেই অভিযোগ করে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে শক্তিশালী পাশ্চাত্যের দেশগুলো ইসরাইলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়টা দেখতেই পায় না।

অথচ তাদের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের) শিবিরে নেই এমন রাষ্ট্রের নিন্দা করতে বা তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) পিছপা হয় না।

মানবাধিকার-কর্মীরা মনে করেন করিম খান এবং তার টিম দু’পক্ষের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন তা বহুপ্রতীক্ষিত।

করিম খান বলেন, ‘হামাসের প্রধান তিন নেতা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, বন্দী করা, ধর্ষণ ও নির্যাতন।’

যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে তারা হলেন গাজার হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, কাসসাম ব্রিগেডের সামরিক শাখার কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফ এবং হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ।

তদন্তের অংশ হিসেবে করিম খান ও তার দল ৭ অক্টোবরের হামলার শিকার এবং জীবিতদের সাক্ষাৎকার নেন।

তিনি বলেন, ‘হামাস মৌলিক মানবিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত হেনেছে। একটা পরিবারের মধ্যে ভালোবাসা, মা-বাবা ও সন্তানের মধ্যে গভীরতম বন্ধনকে পরিকল্পনা মাফিক নিষ্ঠুরতার সাথে ও উদাসীনতার মাধ্যমে যন্ত্রণা দেয়া হয়েছে।’

করিম খান বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মপক্ষ রক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু তাদের বিবেকবর্জিত অপরাধ ইসরাইলকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেয় না।’

তিনি বলেন, ওই আইন মানার ক্ষেত্রে ব্যর্থতাই প্রমাণ করে যে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার বিষয়টা ন্যায্য।

তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তালিকায় রয়েছে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে বেসামরিক নাগরিকদের অনাহার করানো, হত্যা, নির্মূল এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইচ্ছাকৃত আক্রমণ।

৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরাইলের পাল্টা আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরাইলকে বারবার তিরস্কার করে এসেছেন।

একই সাথে ইসরাইল যে গাজায় বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করছে এবং বহু বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করছে সে বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

কিন্তু তাদের মিত্র গোষ্ঠী যাদের সাথে বাইডেন সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, তাদের বিষয়ে কথা বলতে বরাবরই ভারসাম্য বজায় রেখেছে মার্কিন প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বা তার প্রশাসন তাদের মন্তব্যে ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন তা প্রকাশ্যে খোলসা করে কখনোই বলেননি।

করিম খান তার ব্যাখ্যায় কিন্তু একেবারে স্পষ্ট করে বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধের সময় তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইসরাইল অপরাধমূলক উপায় বেছে নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যু ঘটানো, অনাহার, প্রচণ্ড দুর্ভোগ এবং বেসামরিক লোকজনকে গুরুতর আহত করা।’

আইসিসির বিচারকদের একটি প্যানেল এখন বিবেচনা করে দেখবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা যায় কিনা। তারপরেই আইসিসির রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলো সুযোগ পেলে অভিযুক্তদের আটক করতে বাধ্য হবে।

স্বাক্ষরকারী ১২৪টি দেশের মধ্যে রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র নেই। ইসরাইলও এতে স্বাক্ষর করেনি।

কিন্তু আইসিসি তাদের রায়ে জানিয়েছে, যুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিচারের আইনি কর্তৃত্ব তাদের রয়েছে। তার কারণ ফিলিস্তিন স্বাক্ষরকারী দেশের মধ্যে আছে।

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলে তার অর্থ হবে, ইসরাইলের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গ্রেফতারের কোনো ঝুঁকি না নিয়ে তার ঘনিষ্ঠ পাশ্চাত্যের মিত্রদের সাথে দেখা করতে পারবেন না।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, ‘আইসিসির পদক্ষেপ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো, বন্দীদের বের করে আনা বা মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সহায়ক নয়।’

কিন্তু যদি পরোয়ানা জারি করা হয়, তাহলে যুক্তরাজ্যকেই গ্রেফতার করতে হবে, যদি না প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক দায়মুক্তি রয়েছে এমনটা সফলভাবে প্রমাণ করা যায়।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও মন্ত্রী গ্যালান্টের জন্য সবচেয়ে বড় ব্যতিক্রম হলো যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস বিশ্বাস করে যে এই দ্বন্দ্বে আইসিসির এখতিয়ার নেই। যুদ্ধ নিয়ে জো বাইডেনের এই ভাবনা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরের ফাটলকে আরো প্রশস্ত করতে পারে।

প্রগতিশীলরা ইতোমধ্যেই আইসিসির এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।

ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরাইলের কট্টর মিত্ররা আইসিসির কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আইন পাশ করার জন্য রিপাবলিকানদের পদক্ষেপকে সমর্থন করতে পারে।

কয়েক সপ্তাহ আগে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে আসন্ন অভিশংসনের গুজব ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে রিপাবলিকান সেনেটরদের একটা দল করিম খান এবং তার কর্মীদের এমন হুমকি দিয়েছিল যা মূলত ‘মাফিয়া মুভি’ তাই শোনা যায়।

করিম খানদের হুমকি দিয়ে বলা হয়েছিল, ‘ইসরাইলকে টার্গেট করো, আমরা তোমাদের টার্গেট করব। তোমাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।’

ইয়োভ গ্যালান্টও স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন না। ইসরাইল গাজা অবরোধ করবে বলে ঘোষণা করার সময় তিনি যে শব্দ ব্যবহার করেছিলেন তা তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছিল।

সমালোচকেরা এখনো তার ওই মন্তব্য উদ্ধৃত করে থাকেন।

হামাসের হামলার দু’দিন পর গ্যালান্ট বলেন, ‘আমি গাজা উপত্যকায় সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দিয়েছি। বিদ্যুৎ থাকবে না, খাবার থাকবে না, জ্বালানি থাকবে না, সবকিছু বন্ধ... আমরা মানুষ রূপের প্রাণীর সাথে লড়াই করছি এবং আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করছি।’

করিম খান তার বিবৃতিতে লেখেন, ‘ইসরাইল ইচ্ছাকৃত এবং পদ্ধতিগতভাবে গাজার সমস্ত অংশে বেসামরিক নাগরিকদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু থেকে বঞ্চিত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ চলছে এবং কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।’

ইসরাইল দুর্ভিক্ষের কথা অস্বীকার করে দাবি করে যে খাদ্য ঘাটতি তাদের অবরোধের কারণে হয়নি। বরং হামাসের চুরি করা এবং জাতিসঙ্ঘের অযোগ্যতার কারণে ঘটেছে।

অন্যদিকে, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলে সিনিয়র আরব নেতাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য তার নিয়মিত সফরের বিষয়ে আরো বেশি চিন্তা করতে হবে।

তিনি অবশ্য তার কাতারের ঘাঁটিতে আরো বেশি সময় কাটাতে পারবেন, কারণ ইসরাইলের মতোই কাতারও আইসিসি প্রতিষ্ঠার রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি।

অন্য দুই অভিযুক্ত হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও মোহাম্মদ দেইফ গাজার ভেতরে কোথাও লুকিয়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা তাদের ওপর বিশেষ চাপ বাড়াবে না বলেই মনে করা হয়। গত সাত মাস ধরে তাদের হত্যার চেষ্টা করছে ইসরাইল।

আইসিসির এই পরোয়ানা জারি হলে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুরও সেই তালিকায় চলে আসবেন যেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মরহুম কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির নাম রয়েছে।

ইউক্রেন থেকে শিশুদের অবৈধভাবে রাশিয়ায় স্থানান্তরের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।

নিহত হওয়ার আগে কর্নেল গাদ্দাফির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। তার বিরুদ্ধে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ ছিল।

তবে এটা বলাই যায় যে রাষ্ট্র তার গণতন্ত্র নিয়ে এত গর্ব করে, সেই রাষ্ট্রের নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য এই পুরো বিষয়টা খুব একটা আকর্ষণীয় হবে না।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement