বিক্ষোভের চতুর্থ রাতে নেতানিয়াহুকে বিশ্বাসঘাতক বলল বন্দীদের পরিবার
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩২
হামাসের হাতে বন্দী ইসরাইলিদের পরিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করছে। বিক্ষোভের চতুর্থ রাতে নেতানিয়াহুকে তারা বিশ্বাসঘাতক বলে মন্তব্য করেছে।
আরব নিউজ জানিয়েছে, ইসরাইলের পার্লামেন্টের সামনে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। বন্দীদের পরিবার এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক ৭ অক্টোবরের বিপর্যয়ের জন্য নেতানিয়াহুকে দায়ী করেছেন। এর ভিত্তিতে তারা নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
বিক্ষোভাকরীদের একজন আইনভ জাঙ্গাউকার। তার ছেলে মাতান এখনো হামাসের হাতে বন্দী। তিনি বলেন, আপনি হলেন ফেরাউনের মতো। আপনি আমার প্রথম সন্তানের হন্তারক। আপনার আমলেই ২৪০ ইসরাইলি অপহৃত হয়েছে। এটিই আপনার দোষ।
তিনি আরো বলেন, আপনি ৭ অক্টোবর সম্ভাব্য সব উপায়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন আপনিই বন্দীবিনিময় চুক্তির সবচেয়ে বড় বাধা।
বন্দীদের পরিবার নেতানিয়াহুর উপর ক্ষিপ্ত। তারা বলে যে বন্দীদের মুক্তির জন্য নেতানিয়াহু কার্যযত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
বন্দীদের পরিবার নিজেদেরকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সাথে জোটবদ্ধ করেছে, যারা গত বছর নয় মাস ধরে নেতানিয়াহুর বিতর্কিত বিচারিক সংস্কারকে ব্যর্থ করার জন্য মিছিল করেছিল। তারা প্রচার করেছিল যে এই আইন গণতন্ত্র হুমকিস্বরূপ।
ইসরাইলে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় আছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। বন্দীদের পরিবার অভিযোগ করছে যে তিনি তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য যুদ্ধ বাধিয়ে রাখেন।
হামাসের হামলায় মা-বাবা দুজনকেই হারিয়েছেন মেরাভ সভিরস্কি। এছাড়া তার ভাই গাজায় যুদ্ধে গিয়ে নিহত হয়। তিনি বলেন, নেতানিয়াহু বন্দীদের মুক্ত করার জন্য দ্রুত কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব অপহৃতদের ফিরিয়ে আনা নিশ্চিত করা। আমি নির্বোধ ছিলাম, আমি বুঝতে পারিনি যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে তাদের ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী নন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বারাক বলেছেন, নেতানিয়াহু যদি রাফায় স্থল আক্রমণ শুরু করেন, তবে বন্দীরা আর ফিরে আসবে না। ফিরে আসবে তাদের কফিন। যে ৭ অক্টোবর তাদের বিসর্জন দিয়েছিল সে এখন নিরঙ্কুশ বিজয়ের বেদিতে তাদের বলি দিচ্ছে।
তিনি দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বিপর্যয়ের জন্য ‘দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে’ ‘স্টিয়ারিং হুইল থেকে সরানো উচিত।’
জাঙ্গাউকার বলেন, নেতানিয়াহু দেশটিতে যুদ্ধ চলাকালীন প্রতিবাদ করার জন্য বন্দী পরিবারগুলোকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন।
তিনি বলেন, আপনি আমাদের বিশ্বাসঘাতক বলছেন। অথচ আপনিই বিশ্বাসঘাতক। আপনি জনগণের প্রতি, ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতক।’
প্রায় তিন হাজার বিক্ষোভকারী সমাবেশ থেকে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে দিতে নেতানিয়াহুর আবাসের দিকে যায়।
পুলিশ বলেছে, কিছু ‘দাঙ্গাকারী’ বাইরের বাধাগুলো অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিল। মাউন্টেড অফিসারদের ভিড়ের মধ্যে চার্জ করা হয় যাতে তাদের প্রবেশ করা বন্ধ করা যায়।
হামাস গত ৭ অক্টোবর ২৫০ ইসরাইলিকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে ৩৩ জনকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরাইলের সরকারি পরিসংখ্যানের এএফপির সমীক্ষা অনুসারে, ইসরাইলে প্রায় ১ হাজার ১৬০ জন মারা গেছে। তাদের বেশিরভাগই বেসামরিক লোক। হামাসের এই নজিরবিহীন হামলার কারণে ইসরাইলিরা মর্মাহত হয়েছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এর প্রতিশোধমূলক অভিযানে কমপক্ষে ৩২ হাজার ৯১৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই মহিলা এবং শিশু।
সূত্র : আরব নিউজ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা