২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন ও বিপর্যয়ের ২০ বছর

- ছবি : সংগৃহীত

ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের ২০ বছর হয়ে গেল। যে কারণ দেখিয়ে এই আগ্রাসন হয়েছিল, তা ছিল মিথ্যা। তার ফল এখনো ভোগ করতে হচ্ছে।

দুই দশক পরেও ইরাকে সহিংসতা-হত্যা থামেনি। গত ফেব্রুয়ারিতেও বোমা, গুলি ও অন্য সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ৫২ জন। ২০০৩ সালের ১৮ থেকে ১৯ মার্চে যে আগ্রাসন শুরু হয়েছিল এ হলো তারই প্রভাব।

মার্কিন জোটের আগ্রাসন ও প্রচারের সামনে ইরাক কিছুই করতে পারেনি। ওই জোটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ছিল অস্ট্রেলিয়া ও পোল্যান্ড।

তিন সপ্তাহের মধ্যে সাদ্দামের শাসনের পতন ঘটে। এয়ারক্রাফট কেরিয়্যার ইউএসএস আব্রাহাম লিংকনের ডেকে দাঁড়িয়ে ওই সময়ের প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ঘোষণা করেন, মিশন সফল।

ওই সময় পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার জোটসঙ্গীরা ২৯ হাজার ১৬৬টি বোমা ও রকেট ইরাকে ফেলেছিল। ইরাকি পরিকাঠামোর বড় অংশ মাটিতে মিশে যায়। ব্রিটিশ এনজিও বেবিকাউন্টের হিসাবে সাত হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষ মারা যান। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দুই লাখ থেকে ১০ লাখের মধ্যে।

২০১১ সালে মার্কিন সেনা ইরাক ছাড়ে। পরে তারা ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আবার ফিরে আসে।

যুদ্ধ জয়ের পরেও শান্তি ফিরল না
ইরাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধাঁচে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ইরাকের পরিস্থিতি ও সামাজিক অবস্থান ছিল আলাদা। সেখানে ধর্মীয় ও জাতিগত জটিলতা ছিল প্রবল। মার্কিন অধিকারে থাকা প্রশাসনের সেই প্রস্তুতিও ছিল না। ২০০৩ সালের ১৯ আগস্ট বাগদাদে জাতিসঙ্ঘের অফিস চত্বরে বিস্ফোরণে ২২ জনের মৃত্যু হয়।

সাবেক ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল জাবিয়ার সোলানা বলেছিলেন, যদি এই অভিযানের লক্ষ্য থাকে ইরাককে সন্ত্রাসমুক্ত করা, তার পুনর্গঠন ও সর্বস্তরে সুরক্ষা বাড়ানো, তাহলে এই লক্ষ্যপূরণ হয়নি।

আন্তর্জাতিক আইনভঙ্গ
আইন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কাই অ্যামবোস জানিয়েছেন, ‘যেভাবে ইরাক আক্রমণ করা হয়েছে, তা জাতিসঙ্ঘের চার্টার ও আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব মেনে এই আগ্রাসন হয়নি। তাহলে একমাত্র আত্মরক্ষার জন্যই এই ধরনের আগ্রাসন করা যেতে পারে ‘

অ্যামবোস জানিয়েছেন, ‘এখানে আত্মরক্ষার কোনো বিষয় ছিল না।’ তা ছাড়া ওই সময়ে জাতিসঙ্ঘের সেক্রেটারি জেনারেল কফি আনান বলেছিলেন, ওই আগ্রাসন ‘বেআইনি’।

জার্মানি এই যুদ্ধে অংশ নেয়নি। তবে জার্মানি এই আগ্রাসন সমর্থন করেছিল এবং গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছিল এবং অর্থও দিয়েছিল। এভাবে তারা বেআইনি আগ্রাসনকে সমর্থন করেছিল বলে অ্যামবোস জানিয়েছেন।

অত্যাচার ও যুদ্ধাপরাধ
২০০৪-এর প্রথম দিকের মধ্যে যুদ্ধাপরাধ ও অত্যাচারের যে খবর সামনে আসে, তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভাবমূর্তি আরো ক্ষুণ্ণ হয়। সাদ্দামের আমলে কুখ্যাত জেলে মার্কিন আগ্রাসনের সময়কার যে ছবি সামনে আসে তাতে শিউরে উঠতে হয়।

মার্কিন সেনা বেসামরিক মানুষের উপরও অত্যাচার করে। ২০০৫-এ হাদিথাতে মার্কিন নৌসেনা গুলি করে ২৪ জন নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে। ২০০৭-এ মার্কিন কনট্রাক্টর গুলি করে ১৭ জনকে মারে। উইকিলিকসের ফাঁস করা তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন হেলিকপ্টার নিরপরাধ মানুষের উপর আক্রমণ চালিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ইরাকের হাতে এমন অস্ত্র আছে, যা দিয়ে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালানো সম্ভব। দেখা গেছে, এমন কোনো অস্ত্র ইরাকের হাতে ছিল না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই যুক্তি মিথ্যা ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি ছিল, সাদ্দামের সাথে আল কায়দা ও ওসামা বিন লাদেনের সম্পর্ক ছিল। এই যুক্তিও মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

হার্ভার্ডের অধ্যাপক স্টিফেন ওয়াল্ট বলেছেন, ‘আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে ঠিক করে নিয়েছিল তারা কী করবে। তারপর তারা যুক্তি সাজিয়েছিল। এমন নয়, গোয়েন্দারা এই সব তথ্য দিয়েছিলেন। এই সব যুক্তি তৈরি করা হয়েছিল‘।
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement
ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর কালিয়াকৈরে ছিনতাইকারীর অস্ত্রের আঘাতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে আহত কাপাসিয়ায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২ রাশিয়ার ২৬টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র মাগুরায় বজ্রপাতে ২ যুবকের মৃত্যু মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ‘অস্থায়ীভাবে’ ক্ষমতায় রয়েছে : জান্তা প্রধান গাজীপুরে কাভার্ডভ্যানের চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত উত্তরপ্রদেশে কারাগারে মুসলিম রাজনীতিবিদের মৃত্যু : ছেলের অভিযোগ বিষপ্রয়োগের দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস খাদে, নিহত ৪৫, বাঁচল একটি শিশু ইসরাইলের রাফা অভিযান পরিকল্পনা স্থগিত

সকল