জেরুসালেমে আরেকটি গুলিবর্ষণের ঘটনায় ২ ইসরাইলি আহত

পূর্ব জেরুসালেমের এক ইহুদি সিনাগগে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীর গুলিতে সাতজন নিহত হওয়া একদিন পরই শনিবার জেরুসালেমের পুরোনো শহর এলাকার বাইরে আরো একটি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ইসরাইলি পুলিশ বলছে, ১৩ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনির ছোঁড়া গুলিতে দু’জন গুরুতর আহত হয়।

আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আহতরা বাবা ও ছেলে এবং তাদের দেহের ওপরের অংশে গুলি লেগেছে।

পুলিশ বলছে, আক্রমণকারী কিশোরকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ঘটনাস্থলে থাকা এক পথচারী ওই ফিলিস্তিনি কিশোরকে গুলি করে আহত করে।

এছাড়া আগের রাতের সিনাগগে গুলিবর্ষণের ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে ৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে শনিবার ইসরাইলি পুলিশ জানায়।

রয়টার্স আরো জানায়, প্রায় এক মাস ধরেই ফিলিস্তিনি-ইসরাইলি সংঘাত তীব্রতর হচ্ছিল, এ বছর প্রায় ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

শুক্রবার ইহুদি সিনাগগে গুলিবর্ষণের ঘটনার এক দিন আগেই পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি এক অভিযানে নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়া ঘটনায় উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। এরপর গাজা থেকে রকেট নিক্ষেপ ও ইসরাইলের পাল্টা বিমান হামলার পর আগামী দিনগুলোতে আরো রক্তপাতের আশঙ্কা বেড়ে গেছে।

আক্রমণকারীর নাম খায়রি আলকাম
পূর্ব জেরুসালেমের নেভে ইয়াকভ এলাকার সিনাগগে গুলিবর্ষণের ঘটনাটা ছিল গত কয়েক বছরের মধ্যে এ ধরনের সবচেয়ে গুরুতর আক্রমণগুলোর অন্যতম।

আক্রমণকারী ফিলিস্তিনির নাম খায়রি আলকাম, তার বয়স ২১ বছর এবং তিনি পূর্ব জেরুসালেমেরই বাসিন্দা বলে পুলিশ ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে।

ইসরাইলি পুলিশ ওই ঘটনাকে ’সন্ত্রাসী আক্রমণ’ বলে অভিহিত করে বলেছে, হামলার পর একটা গাড়িতে করে পালানোর সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ওই ঘটনাগুলোর পর ইসরাইলে সর্বোচ্চ স্তরের জাতীয় নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা পশ্চিম তীরে সৈন্য সংখ্যা বাড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসঙ্ঘ ওই আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে। এছাড়া ইসরাইলের সাথে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরকারী তিন আরব দেশ জর্ডন, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও শুক্রবারের ঘটনার নিন্দা করে।

লেবাননের ইরান-সমর্থক হেজবোল্লাহ ওই আক্রমণের প্রশংসা করেছে। গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ওই ঘটনাকে ’জেনিনে দখলদারদের করা অপরাধের জবাব’ বলে আখ্যায়িত করেছে। এছাড়া ইসলামিক জিহাদ নামে আরেকটি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী প্রশংসা করলেও আক্রমণ চালানোর দায় স্বীকার করেনি।

সম্প্রতি কট্টর ইহুদি জাতীয়তাবাদীদের সাথে মিলে সরকার গঠনকারী ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবারই তার মন্ত্রীসভার এক বৈঠক ডেকেছেন।

এর আগে জেরুসালেমে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় উগ্র-দক্ষিণপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির বলেন, সরকারকে এর প্রত্যুত্তর দিতে হবে এবং ঈশ্বর চাইলে এটাই ঘটবে।

ইসরাইল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুসালেম দখল করে এবং পুরো শহরটিকেই তারা তাদের রাজধানী বলে দাবি করে কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এক বিরাট অংশ একে স্বীকৃতি দেয় না।

অন্য দিকে ফিলিস্তিনিরা মনে করে যে পূর্ব জেরুসালেমই হবে ভবিষ্যতের স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী।

সূত্র : বিবিসি