২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মার্কিন সতর্কতা সত্ত্বেও ওপেকের সিদ্ধান্তে তেল উৎপাদন কমাবে সৌদি ও আমিরাত

- ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্তকতাকে আমলে না নিয়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তেল উৎপাদন কমানোর জন্য ওপেক এবং তার মিত্রদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে। এর আগে মার্কিন দূত বিশ্বের সামনে ‘অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা’ সম্পর্কে সতর্ক করেছিল।

সোমবার আবুধাবি আন্তর্জাতিক পেট্রোলিয়াম প্রদর্শনী ও সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবকে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোকে সমর্থন করতে দেখা যায়।

সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রী যুবরাজ আবদুল আজিজ বিন সালমান ইভেন্টের সংক্ষিপ্ত মন্তব্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আসন্ন জাতিসঙ্ঘের জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষ সম্মেলন মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে।

যুবরাজ করতালি দিয়ে বললেন, ‘আমরা আমাদের ছাড়া অন্য কারো ওপর নির্ভরশীল নই।’

আমিরাতের জ্বালানি মন্ত্রী সুহেল আল-মাজরুই সেই কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন।

আল-মাজরুই বলেছেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারে যে ওপেক ও ওপেক+ এর সহকর্মীরা বিশ্বকে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে আগ্রহী। ‘তবে আমরা বিশ্বের একমাত্র তেল উৎপাদনকারী নই।’

ওপেক ও রাশিয়ার নেতৃত্বে অন্যান্য দেশগুলোর একটি ছোট কনফেডারেশন অক্টোবরের শুরু থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত দিনে ২ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের উৎপাদন কমাতে সম্মত হয়েছিল।

সৌদি আরবের নেতৃত্বে ওপেক জোর দিয়ে বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগতা থেকেই তাদের সিদ্ধান্ত এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিশ্লেষকরা পশ্চিমের মুদ্রাস্ফীতি এবং পরবর্তী সুদের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও তেলের সরবরাহ প্রভাবিত হওয়ার কারণে মন্দার আশঙ্কা করছেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতান আহমেদ আল জাবের জোর দিয়ে বলেছেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে রয়েছে।’

আমেরিকান রাজনীতিবিদরা ইতোমধ্যে পেট্রোলের দাম বাড়ানোর সম্ভাব্য সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে এক গ্যালন গ্যাসোলিনের দাম এখন ৩ দশমিক ৭৬ ডলার, যদিও তা জুন মাসে গ্যালনপ্রতি রেকর্ড পাঁচ ডলার থেকে কম। বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেল সোমবার ব্যারেল প্রতি ৯৫ ডলারে উঠেছিল।

জ্বালানি বিষয়ক মার্কিন দূত আমোস হোচস্টেইন বলেছেন, ‘আমি মনে করি দিনের শেষে, আমরা বিশ্বব্যাপী একটি অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হচ্ছি।’

হচস্টেইন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইভেন্টের পরে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সাথে কথা বলতে অস্বীকার করেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জুলাই মাসে সৌদি আরব সফর করেছিলেন এবং একটি বৈঠকের আগে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

সম্প্রতি সৌদি আরবকে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘তারা যা করেছে, ইতোমধ্যে তার প্রভাব পড়ছে।’

সৌদি আরব পাল্টা জবাব দিয়ে প্রকাশ্যে দাবি করেছে, বাইডেন প্রশাসন ওপেক-এর তেল উৎপাদন কমাতে এক মাস সময় বাড়াতে চেয়েছে।

২০১৮ সালের সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগির জঘন্য হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রিয়াদ এবং ওয়াশিংটনের মধ্যকার সম্পর্কে দূরত্ব এসেছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করে যে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছিল।

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement