২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইরান, নিহত ৯

হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইরান, নিহত ৯ - ছবি : সংগৃহীত

ইরানে পুলিশের হেফাজতে মাশা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুর পর হিজাব এবং নৈতিকতা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৯ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন পুলিশও রয়েছে। অন্তত ১৫টি শহরে বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, বিক্ষোভকারীদের পুলিশকে ধাওয়া করা, গুলির শব্দ এবং মেয়েদের হিজাবে আগুন লাগানো- ইত্যাদি দৃশ্য দেখা গেছে।

আর এই ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভে একেবারে সামনের কাতারে রয়েছেন ইরানের নারীরা।

এই বিক্ষোভের টানা পঞ্চম দিনে মঙ্গলবার যখন নারীরা সারি শহরে আগুন দিয়ে তাদের হিজাব জ্বালিয়ে দেন তখন সেখানে উপস্থিত জনতা উল্লাস করেন।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, উরমিয়া, পিরানশাহর ও কেরমানশাহে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত তিন বিক্ষোভকারীর মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন।

ইরানি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কেরমানশাহে দু'জন বেসামরিক নাগরিকের পাশাপাশি শিরাজে একজন পুলিশ সহকারীকে হত্যার অভিযোগ করেছে।

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সাকেজ থেকে আসা ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাশা আমিনি কোমায় তিন দিন কাটানোর পর শুক্রবার হাসপাতালে মারা যান।

তেহরানে তার ভাইয়ের সাথে থাকার সময় ইরানের কঠোর নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল।

তারা আমিনির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল যে তিনি নারীদের হিজাব বা চাদর দিয়ে চুল ঢেকে রাখা এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরার আইন ভঙ্গ করেছেন।

পুলিশের একটি ডিটেনশন সেন্টারে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরপরই তিনি কোমায় চলে যান।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদা আল-নাশিফ বলেছেন, পুলিশ আমিনির মাথায় লাঠি দিয়ে বাড়ি মারে এবং তাদের একটি গাড়ির সাথে আঘাত করার পর তার মাথা ফেটে যায়।

তবে পুলিশ তার সাথে দুর্ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে 'হঠাৎ করে হৃদরোগো আক্রান্ত' হয়েছিল। তবে তার পরিবার বলেছে, তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন।

'মাশা আমিনির মর্মান্তিক মৃত্যু এবং নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগগুলি অবশ্যই একটি স্বাধীন ও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দ্বারা অবিলম্বে, নিরপেক্ষভাবে এবং কার্যকরভাবে তদন্ত করা উচিত এবং নিশ্চিত করতে হবে তার পরিবার সত্য ঘটনা জানতে পারবে এবং তারা ন্যায়বিচার পাবে,' - বলছেন নাশিফ।

তিনি উল্লেখ করেন যে জাতিসঙ্ঘ 'নারীদের প্রতি সহিংস আচরণের অসংখ্য এবং যাচাইকৃত ভিডিও' পেয়েছে কারণ নৈতিকতা পুলিশ সাম্প্রতিক মাসগুলিতে 'ঢিলেঢালা হিজাব' পরা মহিলাদের দমন করতে রাস্তায় টহল বাড়িয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির এক সহযোগী সোমবার আমিনির পরিবারের সাথে দেখা করেছেন এবং তাদের বলেছেন যে 'যেসব প্রতিষ্ঠান অধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে,' বলছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।

ইরানের সিনিয়র এমপি জালাল রশিদি কুচি প্রকাশ্যে নৈতিকতা পুলিশের সমালোচনা করে বলেছেন, এ বাহিনী তৈরি একটি 'ভুল' কাজ, কারণ এটি ইরানের জন্য শুধু ক্ষতিই বয়ে এনেছে।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement