২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনি নারীর গুহায় আশ্রয়

ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনি নারীর গুহায় আশ্রয়। - ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরবর্তী ‘মুসাফির এতা’ এলাকার ‘জাম্বা’ গ্রামের বাসিন্দা নাজাহ জাব্বারিন পরিবারের ১৭ সদস্যকে সাথে নিয়ে ‘কুম্বা’ এলাকায় একটি পরিত্যাক্ত গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন। গুহাতে তাদের অত্যন্ত কঠিনভাবে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। মানুষের সংখ্যার তুলনায় গুহার জায়গা বেশি সংকীর্ণ। গুহাটিতে সূর্যের আলো প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। আশপাশ থেকে অস্বাস্থ্যকর প্রকট দুর্গন্ধ আসে। কাছে শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও খাদ্যের কোনো ব্যবস্থা-নিশ্চয়তা নেই।

আল আরাবিয়া ডটনেট সূত্রে জানা যায়, জাম্বা গ্রামটি ছোট-ছোট ২২টি আবাসিক ইউনিটের একটি। ইসরাইলি বাহিনী এই গ্রামকে ‘নিষিদ্ধ’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং ১৯৮০ সাল থেকে এখানে ফিলিস্তিনিদের নতুন ঘর নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। জাম্বা গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা অন্য কোথাও চলে যেতে বা বিকল্প বাসস্থান অনুসন্ধানে বাধ্য হয়েছেন। তবে কিছু লোক নিজেদের রুটি-রুজির আশায় জমি-পশু নিয়ে এখনো এখানে পড়ে আছেন। ইসরাইলি দখলদারিত্বের পূর্বে জাম্বা গ্রামে ১০ হাজার ফিলিস্তিনের বসবাস ছিল। সেখানে এখন হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন বাসিন্দা অবস্থান করছেন!

ইসরাইল ‘মুসাফির এতা’ এলাকাকে ১৯৮০ সালে ‘নতুন অধিভুক্ত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে। প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ ইসরাইলি আদালতে মামলা দায়ের করেন। শুনানি-পাল্টা শুনানির পর চলতি বছর ৭ মে ইসরাইলি সুপ্রিম কোর্ট তাদের আপিল বাতিল করে দেয়। আদালতের যুক্তি- ১৯৮০ সালে ইসরাইল যখন ওই এলাকায় ‘দখল আইন’ জারি করে, তখন সেখানে কোনো বসতি ছিল না! অথচ অসংখ্য সাক্ষী এখনো জীবিত, যারা বলছেন, ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠারও বহু বছর পূর্ব থেকে জাম্বায় ফিলিস্তিনিরা বসবাস করে আসছেন। ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেঁচে যাওয়া ৪টি পুরাতন ইমারত ওসমানিয়া খেলাফত ও বৃটিশ আমলে নির্মিত।

গুহায় আশ্রয় গ্রহণকারী নারী নাজাহ জাব্বরিন বলেন, ‘আমার দাদা ১৯০১ সালে এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আমার চাচার ঘর এখনো বিদ্যমান আছে, যেটা ইহুদিদের আগমনের পূর্বে নির্মিত!’

‘মুসাফির এতা’ গ্রাম কাউন্সিলের প্রধান নাজাল ইউনুস বলেন, ‘ইসরাইলের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। পশ্চিম তীরের ইহুদি বসতিগুলোকে তারা ইসরাইলে অবস্থিত ইহুদি ‘কম্পাউন্ডের’ সাথে মিলাতে চায়। তারা ‘গ্রিন লাইন’ ধ্বংস করে দিতে চায়। অথচ গ্রিন লাইন-ই ফিলিস্তিন-ইসরাইল এলাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। ইসরাইল ‘মুসাফির এতা’ এলাকায় ১০টি ইহুদি বসতি নির্মাণ করছে। নিরাপত্তা বেষ্টনির সাহায্যে তাদের সংরক্ষণ করা হচ্ছে। বেষ্টনির ভেতরে স্কুল ও হাসপাতালসহ অন্যান্য সেবামূলক ব্যবস্থা রয়েছে।’

সূত্র: আল আরাবিয়া ডটনেট


আরো সংবাদ



premium cement