২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসরাইলি প্রতিযোগীর সাথে হার : সমালোচনার মুখে সৌদি জুডেকা

টোকিও অলিম্পিকে সৌদি ও ইসরাইলি প্রতিযোগীর মধ্যে জুডো ম্যাচ - ছবি : মিডল ইস্ট মনিটর/গেটি ইমেজ

সৌদি আরবের জুডো খেলোয়ার তাহানি আলকাহতানি টোকিওতে চলমান অলিম্পিকের তার ইসরাইলি প্রতিপক্ষের সাথে লড়তে রাজি হয়ে হেরে যাওয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনরা ৩০ জুলাই তারিখে টোকিওতে ৭৮ কিলোগ্রাম ঊর্ধ্ব নারী প্রতিযোগীদের জুডো প্রতিযোগিতায় ইসরাইলি জুডেকা রাজ হেরশকোর সাথে লড়াইয়ে রাজি হওয়ার জন্য তাহানি আলকাহতানির সমালোচনা করছেন। খেলায় সম্পূর্ণ ০-১১ ব্যবধানে হেরে যান আলকাহতানি।

এর আগে টোকিও অলিম্পিক গেমসে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের নিপীড়নের প্রতিবাদে ইসরাইলি খেলোয়ারকে বয়কটে আলজেরিয়ার জুডেকা ফেতহি নৌওরিন ও সুদানের মোহাম্মদ আবদুর রাসুল নিজেদের নাম প্রত্যাহার করেন।

খেলা শেষে ইসরাইলি জুডেকা রাজ হেরশকো ও তাহানি আলকাহতানি হাত ধরে উঁচিয়ে সংহতি প্রর্দশন করেন।

আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন পরে এক বিবৃতিতে সৌদি আরবের জুডেকা তাহানি আলকাহতানির প্রশংসা করে। ফিলিস্তিনি সংগ্রামে সংহতি জানিয়ে ইসরাইলি খেলোয়ারকে বয়কট করার জন্য চাপ সত্ত্বেও, ইসরাইলি প্রতিপক্ষের সাথে লড়তে রাজি হওয়ায় তার প্রশংসা করা হয়।

আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন বিবৃতিতে বলে, 'আবারো ইতিহাস সৃষ্টি ও সুন্দর পৃথিবী গড়তে জুডো সাহায্য করেছে, যেখানে মানুষের সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি হবে শ্রদ্ধা।'

এতে আরো বলা হয়, 'সৌদি আরব প্রমাণ করেছে খেলার মাধ্যমে আমরা ভেদাভেদ ভুলে থাকতে পারি এবং খেলাকে এমন এক শক্তিতে পরিণত করতে পারি যা বিশ্বকে একত্রিত করবে।'

অলিম্পিক উৎসাহী হিসেবে পরিচিত টেরেন্স বার্নস তার টুইটারে তাহানি আলকাহতানি ও রাজ হেরশকোর সম্মিলিতভাবে হাত তুলে সংহতি জানানোর ছবি তার এক টুইট বার্তায় যুক্ত করে বলেছেন, বিশ্বকে দেখানো হচ্ছে যে কি করা উচিৎ।

অনেক টুইটার ব্যবহারকারী টেরেন্স বার্নসের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করেন। তারা ইসরাইলি সহিংসতা ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের অত্যাচারের বিষয়টি তুলে ধরেন। তারা তাদের টুইটারে হ্যাশট্যাগ ‘ফ্রি ফিলিস্তিন’ ব্যবহার করে এমন সমালোচনা করেন।

ইসরাইল যুদ্ধাপরাধী দেশ হওয়ার পরে অনলাইনে দেশটির প্রতি এমন সমর্থনের সমালোচনা করেন আরেকজন টুইটার ব্যবহারকারী।

সৌদি আরবের জুডো খেলোয়াড় তাহানি আলকাহতানি খেলার সময় হিজাব ব্যবহার না করায় এবং ইসরাইলি খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে জুডো খেলায় কোনো পয়েন্ট অর্জন করতে না পারায় তার তীব্র সমালোচনা করা হয়। তার সমালোচনা করে বলা হয়, তাহানি আলকাহতানি অপমানিত ও অসম্মানিত হয়েছেন। ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার এ খেলায় তিনি প্রচণ্ড খারাপ ফল করেছেন।

আরেক টুইটার ব্যবহারকারী বলেন, তাহানি আলকাহতানির কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বর্তমান সৌদি আরবের চিত্র ফুটে উঠেছে। এক সময় সৌদি আরব নামের দেশটি ইসলাম ও তার মূলনীতি পালনের প্রতীক হিসেবে অনেকের কাছেই বিবেচিত ছিল। কিন্তু এখন ইসরাইলকে খুশি করার জন্য কাজ করে।

ছায়ের হিজাজি নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী বলেন, তাহানি আলকাহতানি শুধু নিজের চত্রিকে ফুটিয়ে তুলেননি। তিনি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘৃণ্য ও জঘন্য চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছেন।

ইসরাইল তার যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডকে লুকিয়ে রাখতে বিভিন্ন খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে থাকে। এ কারণে অনেক আরব খেলোয়াড় মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের চিন্তার ও চেতনার সাথে একত্মতা ঘোষণা করে ইসরালি খেলোয়াড়দের বয়কট করে। তারা ইসরাইলের সাথে খেলা ও কূটনীতির ছদ্মবেশে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের বিরোধী।

এরই ধারাবাহিকতায় টোকিও অলিম্পিকে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনের অংশ হিসেবে ইসরাইলি খেলোয়াড়কে বয়কট করেছেন আলজেরিয়ার জুডেকা ফেতিহ নৌওরিন ও সুদানের মোহাম্মদ আবদুল রাসুল।

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর


আরো সংবাদ



premium cement