২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

প্রথমবারের মতো নারীদের একাকী হজ পালন

মিনায় দোয়া করছেন তিন নারী হাজী - ছবি : আল-আরাবিয়া/রয়টার্স

প্রথমবারের মতো বাধ্যতামূলকভাবে কোনো পুরুষ আত্মীয়ের সঙ্গ ছাড়াই হজ পালনের সুযোগ পেয়েছেন নারী হাজীরা। কোনো পুরুষ আত্মীয় ছাড়াই এই বছর একাকী মক্কায় এসে হজ পালন করেছেন অনেক নারী হাজী।

এর আগে সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয় নারীদের কোনো পুরুষ আত্মীয়ের সঙ্গ ছাড়াই একাকী হজ পালনের অনুমতি দেয়। সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সামাজিক সংস্কারের অংশ হিসেবে এই অনুমতি দেয় হজ মন্ত্রণালয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য ন্যাশনালকে হজে আসা ব্রিটিশ নাগরিক ইমান বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী, হজ স্বেচ্ছাসেবক ও আমাদের হজে দলীয় নেতারা আমাদের বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়েছে। তারা আমাদের সুযোগ দিয়েছে আত্মীয়ের সাথে এক বাসে চড়ার বা একই তাবুতে থাকার।’

তিনি বলেন, ‘সকলেই এতো আন্তরিক ছিলেন যে আমার মনে হয়নি আমি একাকি হজ করছি। বরং জীবনের পবিত্রতম যাত্রায় যেনো আমার নতুন এক পরিবার পেয়েছি। তাবুতে নারী স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতি সব কিছুই সহজ করে দিয়েছে।’

ইমান জানান, হজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ আগেই তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং তাদের বিষয়ে ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়।

নারী হাজীদের জন্য নারী গাইডের ব্যবস্থা করা হয়, যারা তাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাপনা বজায় রেখে হজ পালনে সহায়তা করেন।

নাম প্রকাশ না করা এক নারী গাইড দ্য ন্যাশনালকে বলেন, ‘আমাদের নারী স্বেচ্ছাসেবক ও গাইডদের একটি দল গঠন করা হয়েছে যারা তাদের (নারী হাজীদের) সহায়তা করবেন। পাশাপাশি দোভাষীর ব্যবস্থাও করা হয়েছে যারা তাদের ভাষাতেই কথা বলতে পারেন, যাতে তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে পারেন।’

বিধবা নারী নাদিরা জানান, তিনি কখনো কল্পনা করতে পারেননি হজ করার। ব্রিটিশ নাগরিক এই নারীর শুধু মেয়ে সন্তান থাকায় এবং কোনো পুরুষ অভিভাবক না থাকায় হজ করার চিন্তা করতে পারেননি তিনি।

এর আগে সৌদি আরবে হজে বাধ্যতামূলকভাবে পুরুষ আত্মীদের সাথে যেতে হতো নারীদের।

নাদিরা বলেন, ‘আমি সরকারকে ধন্যবাদ দিতে চাই আমার মতো নারীদের জন্য হজ পালন সহজ করে দেয়ার জন্য, যা ইসলামের এক স্তম্ভ এবং যা নারী-পুরুষ সকল মুসলমানের ওপর ফরজ। আমি অনুভব করছি এক নতুন যাত্রা শুরু করার, নিজেকে স্বাধীন ও শক্তিশালী হিসেবে মনে করার।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণে সতর্কতায় দ্বিতীয় বছরের মতো এবার সৌদি আরবের বাইরে থেকে কেউ হজের সুযোগ পাননি। দেশটিতে বাস করা ১৫-৬৫ বছর বয়সী সৌদি নাগরিক ও বিদেশী বাসিন্দাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে টিকা দেয়া সাপেক্ষে হজের অনুমতি দেয়া হয়। হজের অনুমতির জন্য পাঁচ লাখের বেশি আবেদন থেকে বাছাই করে সৌদি আরবে বাস করা ১৫০ দেশের মোট ৬০ হাজার আবেদনকারীকে দেশটির হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয় হজের অনুমতি দেয়।

সূত্র : দ্য ন্যাশনাল


আরো সংবাদ



premium cement