২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্রাদারহুডের ১২ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড আদালতে বহাল

আদালতে ব্রাদারহুড সদস্যরা - ছবি : মিডল ইস্ট আই/এএফপি

মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের ১২ সদস্যের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। সোমবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টের কোর্ট অব কেসেইশন এই আদেশ দেয়।

সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ নেতাকর্মীর আপিলের দরজা বন্ধ হয়ে গেলো। মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসির হাতেই এখন দণ্ড কার্যকরের বিষয়টি নির্ভর করছে।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ব্রাদারহুড সংশ্লিষ্ট আলেম আবদুর রহমান আল-বার, সাফওয়াত হেজাজি, মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি) সেক্রেটারি মোহাম্মদ বেলতাজি ও এফজেপি দলীয় সাবেক যুবমন্ত্রী ওসামা ইয়াসিন রয়েছেন।

মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ২০১৩ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে পুনর্বহাল করার আন্দোলনের সংশ্লিষ্টতায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে 'জনগণ ও
পুলিশকে আক্রমণ করার জন্য অপরাধী চক্রকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম সরবরাহের' অভিযোগ আনা হয়।

এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, আদালত মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট ৩১ ব্রাদারহুড সদস্যের দণ্ড কমানোর আদেশ দিয়েছে।

২০১৮ সালে মিসরের এক আদালত এই মামলায় ৭৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়।

আরব বসন্তের প্রভাবে ২০১১ সালে মিসরে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের পতন ঘটে। বিপ্লবের পরে ২০১২ অনুষ্ঠিত মিসরের প্রথম নির্বাচনে মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি (এফজেপি) বিপুল ভোটে জয় লাভ করে। ব্রাদারহুডের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ মুরসি দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

কিন্তু এক বছর পরই মোহাম্মদ মুরসির বিপক্ষে এক পাল্টা বিক্ষোভ করা হয়। বিক্ষোভের জেরে মিসরীয় সামরিক বাহিনী ২০১৩ সালের জুলাইয়ে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে।

মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রতিবাদে তার সমর্থকরা দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাজধানী কায়রোর রাবা আল-আদাবিয়া স্কয়ারে অবস্থান নিয়ে মোহাম্মদ মুরসির ক্ষমতা পুনর্বহালের দাবিতে একটানা প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করেন তারা।

ওই বছরের ১৪ আগস্ট রাবা আল-আদাবিয়ার প্রতিবাদকারীদের দমনে অভিযান চালায় মিসরীয় নিরাপত্তা বাহিনী। এক দিনের ওই অভিযানে আট শ'র বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হন।

তখন থেকে মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুডসহ সকল বিরোধীদলীয় নেতাদের ওপর দমন অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ওই সময় মুসলিম ব্রাদারহুড ও সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনকে বেআইনি ঘোষণা করে মিসরীয় প্রশাসন।

কারারুদ্ধ অবস্থায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ২০১৯ সালের ১৭ জুন কায়রোর এক আদালতে শুনানি চলাকালে মৃত্যুবরণ করেন।

সূত্র : আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement