২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইসরাইলি নেসেটে আব্বাসের কমিটির ক্ষমতার বিলোপ

মানসুর আব্বাস - ছবি : মিডল ইস্ট মনিটর/ গেটি ইমেজ

ইসরাইলের নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার তদারককারী ইসরাইলি আইন পরিষদ নেসেটের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়েছে। মঙ্গলবার ইসরাইলভিত্তিক আরবি সংবাদমাধ্যম আরব ফরটি এইট ডট কমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়।

ইসরাইলি আরব রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড আরব লিস্টের প্রধান মানসুর আব্বাস এই কমিটির প্রধান ছিলেন। 'পরিবর্তনের সরকার' গঠনে পারস্পারিক সম্মতির ভিত্তিতেই এই ক্ষমতার বিলুপ্তি হয়েছে বলে খবরে জানানো হয়।

নেসেটের এই কমিটি ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, আবাসিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা এবং বিশেষভাবে ইসরাইলি আরব নাগরিকদের সংশ্লিষ্ট বিষয় তদারকি করতো। এর পরিবর্তে লাপিদ-বেনেতের জোট সরকারে কার্যকর নতুন কমিটি গঠন করা হবে। নতুন কমিটিতে ইয়ায়ির লাপিদ সভাপতিত্ব করবেন।

আগামী রোববার নেসেটে নতুন সরকার গঠনের প্রশ্নে আস্থাভোট গ্রহণ করা হবে। লাপিদ-বেনেতের জোট সরকার আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে টানা ১২ বছর ইসরাইলের ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর শাসনের অবসান হবে।

খবরে আরো বলা হয়, ইসরাইলের দক্ষিণের নেগেভ মরুভূমিতে নয় মাসের জন্য আরব বসতি উচ্ছেদ স্থগিত রাখা, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ইউনাইটেড আরব লিস্ট দল থেকে একজন উপ প্রধানমন্ত্রী এবং আরব ইসরাইলিদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে ৫০ লাখ ইসরাইলি শেকেল (বাংলাদেশী ১৩ কোটি টাকা) বরাদ্দের শর্তে মানসুর আব্বাস 'পরিবর্তনের সরকারে' যোগ দিচ্ছেন।

এর আগে ইসরাইলে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় গত ২৩ মার্চ দুই বছরের মধ্যে চতুর্থ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এই নির্বাচনেও কোনো দল বা জোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়।

দেশটিতে সরকার গঠনের জন্য ১২০ আসনবিশিষ্ট আইন পরিষদ নেসেটের ৬১ সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হয়।

প্রথম দফা আলোচনার পর নেসেটের ৫২ সদস্য প্রধানমন্ত্রী পদে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সুপারিশ করায় এপ্রিলের শুরুতে তাকে সরকার গঠনের জন্য প্রথম মনোনয়ন দেন রিভলিন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত না হলেও ওই সময় এটিই ছিল সর্বোচ্চ মনোনয়ন।

কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে নেতানিয়াহুকে সমর্থন করা জিউনিস্ট পার্টি কোনো আরব দলের সাথে সরকার গঠনের অস্বীকৃতি জানানোয় তিনি সরকার গঠনে ব্যর্থ হন।

নেতানিয়াহুর ব্যর্থতার পর ৫ মে নতুন করে নেসেট সদস্যদের সাথে আলোচনা করেন প্রেসিডেন্ট রিভলিন। নতুন আলোচনায় রক্ষণশীল ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেতের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগির এক প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে মোট ৫৬ সদস্যের সুপারিশ পান ইয়েশ আতিদ দলের প্রধান ইয়ায়ির লাপিদ।

২ জুন সরকার গঠনে নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার সামান্য আগে ইয়ায়ির লাপিদ সরকার গঠনের ঘোষণা দেন। নাফতালি বেনেত ছাড়াো অন্য আরো ছয়টি দলের প্রধানের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন সরকার গঠনের এই ঘোষণা দেন তিনি।

সমঝোতা অনুসারে ইসরাইলের নতুন গঠিত হতে যাওয়া সরকারের প্রথম দফায় বেনেত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। পরে ইয়ায়ির লাপিদ তার কাছ থেকে সরকারের নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

এদিকে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে লাপিদ-বেনেতের জোট সরকার গঠনের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে আসছেন। তিনি একে নির্বাচনী জালিয়াতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ইসরাইলে সরকার গঠনের এই নাটকিয়তার মধ্যেই ১২ বছরের ক্ষমতাসীন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলার শুনানি চলছে। মার্চে নির্বাচনের কারণে স্থগিত থাকার পর এপ্রিলে এই শুনানি আবার শুরু হয়।

২০১৯ সালে গঠিত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, সম্পদশালী বন্ধুদের কাছ থেকে উপহার ও মিডিয়া টাইকুনদের কাছে প্রশংসামূলক কভারেজের বিনিময়ে তিনি তাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়েছেন। নেতানিয়াহু এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন।

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর


আরো সংবাদ



premium cement