১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কুদস শহরে ইসরাইলি তাণ্ডবের ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনা ব্যর্থ

কুদস শহরে ইসরাইলি তাণ্ডবের ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনা ব্যর্থ -

পবিত্র জেরুজালেম আল-কুদস শহরে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর ব্যাপারে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক কোনো ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে। জাতিসঙ্ঘের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এমন সময় কোনো ফলাফল ছাড়াই এ বৈঠক শেষ হলো যখন যুক্তরাষ্ট্র এক বিবৃতিতে কার্যত ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করেছে।

ওয়াশিংটন তার শরীকদেরকে জানিয়েছে, আল কুদস শহরে উত্তেজনা নিরসন ও শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য পর্দার ওপার থেকে চেষ্টা চালানো উচিত। তবে এ চেষ্টা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ রক্ষা করবে কিনা সে নিশ্চয়তা দেয়নি ওয়াশিংটন। জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদও চলমান সঙ্কট ও ইসরাইলের ব্যাপারে অনেক নরম সুরে বিবৃতি প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, তিউনিশিয়া ও চীন এক যৌথ খসড়া বিবৃতি প্রস্তুত করেছে যেখানে অবৈধ ইহুদি উপশহর নির্মাণ বন্ধ, ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ধ্বংস এবং পূর্ব বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে তাদেরকে বহিষ্কার না করার জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বায়তুল মোকাদ্দাসের পবিত্রতার প্রতি সম্মান দেখানোরও আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, পবিত্র জেরুজালেম আল-কুদস শহরে ইসরাইলি সেনাদের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

আল-কুদস শহরের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লোক দেখানো উদ্বেগ প্রকাশ করলেও জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মার্কিন সরকার ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ কিংবা জোরালো বিবৃতি প্রকাশে অস্বীকৃতি জানানো থেকে বোঝা যায়, মার্কিন কর্মকর্তারা আসলে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সমালোচনা সহ্য করতেও রাজি নয়।

এ অবস্থায় বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য দায়িত্বশীল সংস্থা হিসেবে জাতিসঙ্ঘ কেন ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি বর্বর আগ্রাসন মোকাবেলায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে সেটাই বড় প্রশ্ন।

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ফিলিস্তিন, সিরিয়া ও লেবাননে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের ব্যাপারে তদন্ত কার্যক্রমে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে এসেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনকি ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপনেরও সুযোগ দেয়নি।

কেবলমাত্র সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নিরাপত্তা পরিষদে ২৩৩৪ নম্বর প্রস্তাব পাশ হয় যেখানে ইসরাইলকে ১৯৬৭ সালে দখলিকৃত ভূখণ্ডে ইহুদি উপশহর নির্মাণ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছিল। ইসরাইলের এ পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করা হলেও প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি তৎকালীন মার্কিন সরকার। এরপর ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি ইসরাইলের প্রতি সমর্থন জানায় এবং নজিরবিহীনভাবে সব রকম সাহায্য সহযোগিতা করে।

অথচ ইসরাইল বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী অবৈধ রাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরাইল আন্তর্জাতিক সমস্ত আইন লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনিদের হত্যা, তাদের ঘড়বাড়ি থেকে উচ্ছেদ ও ইহুদি উপশহর নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। ইসরাইলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের কারণে জাতিসঙ্ঘও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সূত্র : পার্সটুডে


আরো সংবাদ



premium cement