২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ভিয়েনা আলোচনা

নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে, প্রত্যাশা ইরানের

ভিয়েনা আলোচনায় মিলিত বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধি - ছবি : এএফপি

ইরানের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিশ্বশক্তির ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি পুনর্বহালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় চলমান আলোচনায় সকল পক্ষের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী ইরানের তেল, ব্যাংক ও অন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং বেশিরভাগ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রত্যাশা করছে তেহরান। ভিয়েনা আলোচনায় ইরানি প্রতিনিধি দলের প্রধান ও দেশটির পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি শনিবার তৃতীয় দফার বৈঠকে শেষে ইরানি সংবাদমাধ্যমের কাছে এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'ইরানের জ্বালানি খাত যার মধ্যে তেল ও গ্যাস অন্তর্ভুক্ত, অথবা গাড়িনির্মাণ শিল্প, অর্থনীতি, ব্যাংকিং ও বন্দরের ওপর নিষেধাজ্ঞা এই পর্যন্ত আলোচনায় সমঝোতার ভিত্তিতে তুলে নেয়া উচিত।'

তবে কোন প্রক্রিয়ায় ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে বা তেহরান ওয়াশিংটনের কী দাবি পূর্ণ করবে এবং এর বিনিময়ে কী লাভ করবে, তা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

আরাকচি বলেন, 'দুই পক্ষের অবস্থান নিকটে আসার এবং আমাদের দাবি পূরণের আগ পর্যন্ত আলোচনা চালিয়ে যাবো।'

তিনি বলেন, 'যদি তা পূরণ হয় তবে চুক্তি হবে, যদি পূরণ না হয় সাধারণভাবেই কোনো চুক্তি হবে না।'

আগামী শুক্রবার চতুর্থ দফায় আলোচনা আবার শুরু হওয়ার আশা করা হচ্ছে।

এর আগে মঙ্গলবার ভিয়েনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তত্ত্বাবধানে চীন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেন ইরানের সাথে তৃতীয় দফার আলোচনায় বসে। ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি কোনো বৈঠকে বসতে অস্বীকার করেছে।

বৈঠকের বিষয়ে শনিবার জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের কূটনীতিকরা এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, 'আমাদের হাতে অনেক কাজ কিন্তু সময় কম। এই অবস্থা সত্ত্বেও আমরা আশা করি এই সপ্তাহে আলোচনায় আরো উন্নতি হবে।'

কর্মকর্তারা আগামী ২১ মে নতুন করে চুক্তিতে পৌঁছার প্রত্যাশা করেন।

এর আগে গত ৬ এপ্রিল থেকে নিয়মিত ব্যবধানে ভিয়েনায় ইরানের সাথে ২০১৫ স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি পুনরায় চালুর বিষয়ে আলোচনা শুরু করে চুক্তির অংশীদার দেশগুলো।

২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় ভিয়েনায় ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও জার্মানি ওই পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে। জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা সংক্ষেপে জেসিপিওএ নামে পরিচিত এই চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এর বিনিময়ে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সীমিত পরমাণু কর্মসূচি জোরদার করে।

বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তিনি জানিয়েছেন, ইরানকে আগে তার পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসতে হবে। অপরদিকে ইরান আগে দেশটির ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি করছে।

সূত্র : আলজাজিরা ও প্রেস টিভি


আরো সংবাদ



premium cement