নাতানজ পরমাণু কেন্দ্রে হামলায় সন্দেহভাজনের পরিচয় প্রকাশ করলো ইরান
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৮ এপ্রিল ২০২১, ১৪:৫৩
ইরানের ইসফাহান প্রদেশের নাতানজে অবস্থিত ভূগর্ভস্ত পরমাণু কেন্দ্রে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণ ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতায় সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ করেছে ইরান। শনিবার ইরানি গোয়েন্দা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম এই খবর জানায়।
খবরে জানানো হয়, নাতানজের পরমাণু কেন্দ্রে নাশকতার সাথে জড়িত ব্যক্তির নাম রেজা কারিমি। ৪৩ বছর বয়সী এই সন্দেহভাজন ঘটনার আগেই ইরান ত্যাগ করেন।
খবরে আরো বলা হয়, তেহরান ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ইরানে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আইনি প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তবে ওই ব্যক্তির আর কোনো পরিচয় বা নাতানজের পরমাণু কেন্দ্রে তার সংযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য খবরে জানানো হয়নি।
এর আগে ১২ এপ্রিল নাতানজে ইরানের বৃহত্তম এই পরমাণু কেন্দ্র বিস্ফোরণের ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে পরমাণু কেন্দ্রটির অজানা সংখ্যক সেন্ট্রিফিউজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পরমাণু কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের ঘটনার পরপরই এর জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করে ইরান।
ইসরাইল এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এই হামলা চালিয়েছে।
শনিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদে বলা হয়, বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত পরমাণু কেন্দ্রের সেন্ট্রিফিউজগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। নতুন করে প্রতিস্থাপনের পর বিস্ফোরণের কারণে বন্ধ থাকা ওই সেন্ট্রিফিউজগুলো আবার স্বাভাবিক কাজ শুরু করেছে।
এদিকে শুক্রবার ইরান ঘোষণা করেছে, দেশটির নাতানজ পরমাণু কেন্দ্র থেকে ৬০ ভাগ সমৃদ্ধ ইউরোনিয়ামের প্রথম ব্যাচের উৎপাদন সম্পন্ন করেছে।
এর আগে নাতানজের ঘটনার পর ইরান আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) ৬০ ভাগ হারে ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধ করার কথা জানায়। তেহরান জানিয়েছে, চিকিৎসাসহ শান্তিপূর্ণ কাজেই ইরান তার পরমাণু শক্তিকে ব্যবহার করছে।
এদিকে শনিবার থেকে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় নতুন করে জয়েন্ট কমপ্রেহেনসিভ প্লান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) শীর্ষক চুক্তি চালু করতে ইরানের সাথে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যস্থতায় ইরানের সাথে এই আলোচনায় চীন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেন অংশ নিয়েছে।
২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় ভিয়েনায় ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও জার্মানি পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে। জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা সংক্ষেপে জেসিপিওএ নামে পরিচিত এই চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এর বিনিময়ে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সীমিত পরমাণু কর্মসূচি জোরদার করে।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তিনি জানিয়েছেন, ইরানকে আগে তার পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসতে হবে। অপরদিকে ইরান আগে দেশটির ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি করছে।
সূত্র : আলজাজিরা ও প্রেসটিভি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা