২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সন্ত্রাসী তালিকা থেকে হাউছিদের প্রত্যাহার করছে বাইডেন প্রশাসন

রাজধানী সানায় সমবেত হাউছি বিদ্রোহীরা - ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীদের নাম সন্ত্রাসী তালিকা থেকে প্রত্যাহার করছে। তবে ওয়াশিংটন তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে এবং সহিংসতার সাথে সংশ্লিষ্টতায় তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান অ্যান্থনি ব্লিনকেন।

এর আগে জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হওয়ার অল্প কিছুদিন আগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইয়েমেনে সংঘাতরত হাউছি বিদ্রোহীদের ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী’ ও ‘বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন। এই তালিকাভুক্তির ফলে দেশটিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় ইয়েমেনে বড় ধরনের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হতে পারে বলে জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর সতর্কতা সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিয়েছিল।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বিবৃতিতে বলেন, ‘ইয়েমেনের মানবেতর অবস্থার বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

তবে বিবৃতিতে তিনি হাউছিদের তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্রের সহশীলতার মাত্রার বিষয়ে সতর্ক করেন।

হাউছি বিদ্রোহীদের সাংগঠনিক নাম উল্লেখ করে বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা আনসার আল্লাহ ও তার নেতাদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং তাদের ধরার জন্য লক্ষ্যের অনুসন্ধান করছি।’

তিনি সতর্ক করে দেন, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে ও সৌদি আরবে ড্রোন ও মিসাইল হামলায় দায়ী হলে তার জন্য সংগঠনটিকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে।

একইসাথে বিবৃতিতে তিনি ‘ইয়েমেনের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় হুমকিমূলক কাজের সংশ্লিষ্টতায়’ শীর্ষ তিন হাউছি নেতা আবদুল মালিক আল-হাউছি, আবদুল খালিক বদর আল-হাউছি ও আবদুল্লাহ ইয়াহইয়া আল-হাকিমের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকার কথা জানান।

হাউছিদের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে প্রত্যাহারের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে ইয়েমেনে সৌদি জোটের অভিযানে মার্কিন সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আরব উপদ্বীপের দরিদ্রতম দেশ ইয়েমেনের দীর্ঘকালীন একনায়ক আলী আবদুল্লাহ সালেহ সরকারের পতন হয়। পরে দেশটিতে বিবাদমান বিভিন্ন পক্ষের মতবিরোধে ইরান সমর্থিত দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় হাউছি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করলে প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদির সরকার এডেনকে কেন্দ্র করে দেশটির দক্ষিণের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ২০১৫ সালে হাদির সরকারকে রাজধানী সানার নিয়ন্ত্রণ নিতে সৌদি আরবের নেতৃত্বে জোট বাহিনী ইয়েমেনে আগ্রাসন চালালে দেশটিতে পাঁচ বছরের চলমান গৃহযু্দ্ধ শুরু হয়।

গৃহযুদ্ধের ফলে দেশটিতে জাতিসঙ্ঘের ভাষায় ’বিশ্বের ভয়াবহতম মানবিক সংকট’ শুরু হয়, যার ফলে ইয়েমেনের ৮০ ভাগ লোকই কোনো না কোনোভাবে মানবিক সহায়তার মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েছে।

সূত্র : আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement