১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হত্যা ষড়যন্ত্রের কথা জেনেও কেন রক্ষা করা যায়নি ইরানি বিজ্ঞানীকে?

জেনারেল আমির হাতামি বলেছেন, ইরান শহীদ বিজ্ঞানীর পথ অনুসরণ অব্যাহত রাখবে। - ছবি : বিবিসি

ইরানের একজন নিরাপত্তা প্রধান বলছেন, পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিযাদেকে হত্যার এক পরিকল্পনা সম্পর্কে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানলেও তারা তা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপতা কাউন্সিলের সচিব আলি শামখানি বলেন, মোহসেন ফখরিযাদের ওপর ঠিক কোন জায়গায় আক্রমণ চালানো হবে তাও তারা জানতেন, কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডে ঘাতকরা একেবারে নতুন, পেশাদার এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, তাই তা ঠেকানো যায়নি।

তিনি বলেছেন, মোহসেন ফখরিযাদের হত্যার পেছনে যারা ছিল তারা দূর নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করেছিল এবং ঘটনাস্থলে কেউ উপস্থিত ছিল না।

ইরান এর আগে বলেছিল, তেহরানের কাছে আবসার্দ শহরে একদল আক্রমণকারী মোহসেন ফখরিযাদের গাড়ির ওপর গুলিবর্ষণ করে এবং এরপর দেহরক্ষীদের সাথে তাদের গুলি বিনিময় হয়।

কিন্তু এখন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী সংশ্লিষ্ট ফার্স নিউজ এজেন্সি বলছে, মোহসেন ফখরিযাদেকে একটি দূরনিয়ন্ত্রিত মেশিনগান দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল আলি শামখানি বলেছেন, ফখরিজাদেকে হত্যার ওই পরিকল্পনা সম্পর্কে ইরানি গোয়েন্দা বিভাগ জানতো কিন্তু এতে যে অভিনব পন্থা ব্যবহার করা হয়েছে - সে কারণে তারা এটা ঠেকাতে পারেনি।

‘মোহসেন ফখরিযাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছিল, কিন্তু শত্রুপক্ষ একেবারেই নতুন, পেশাদার এবং বিশেষ ধরণের পদ্ধতি ব্যবহার করেছে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা সফল হয়েছে।’

তিনি বলেছেন, এটা ছিল অত্যন্ত জটিল মিশন।

অ্যাডমিরাল শামখানি বলেন, হামলাকারীদের পরিচিতি সম্পর্কে ‘কিছু সূত্র’ পাওয়া গেছে। নির্বাসিত ইরানী দল মোজাহেদীন ই খাল্ক-এর সদস্যরা ‘নিশ্চিতভাবে’ জড়িত বলে তিনি ইঙ্গিত করেছেন। এবং বলেছেন, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদের’ সংশ্লিষ্টতার কথাও তিনি বলেছেন।

প্রেস টিভি নামে ইংরেজি টিভি চ্যানেল একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলেছে, এই হত্যাকাণ্ডে ইসরাইলি সামরিক শিল্পের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে।

এর আগেই শুক্রবার যে আক্রমণে মোহসেন ফখরিযাদে নিহত হন - তার পেছনে ইসরাইল জড়িত বলে দাবি করেন ইরানের নেতারা। তবে ইসরাইল এসব দাবির ব্যাপারে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে ইসরাইল বিশ্বাস করতো যে, মোহসেন ফখরিজাদে একটি গোপন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি কর্মসূচির তত্ত্বাবধান করছিলেন।

যদিও ইরান সবসময়ই দাবি করে এসেছে, তার পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।

সোমবার তেহরানে মোহসেন ফখরিযাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ইরানের জাতীয় পতাকায় মোড়া লাশ বহন করে সৈন্যরা।

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আমির হাতামি এক বক্তৃতায় বলেন, এই হত্যার প্রতিশোধ নেয়া হবে।

‘আমাদের শত্রুরা জানে এবং একজন সৈনিক হিসাবে আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, কোনো অপরাধ, কোনো সন্ত্রাস বা কোনো দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের উত্তর ইরানী জনগণ অবশ্যই দেবে,’ বলেন জেনারেল আমির হাতামি।

তিনি আরো বলেন, শহীদ বিজ্ঞানীর প্রদর্শিত পথ দেশ অনুসরণ করবে এবং তা করা হবে আরো দ্রুত এবং আরো জোরেসোরে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement