২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সৌদি আরবে বিরোধী দল গঠন

সৌদি আরবে গঠন করা হয়েছে বিরোধী দল - ছবি : আলজাজিরা

সৌদি আরবে বিরোধী দল গঠন করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে নির্বাসিত ভিন্ন মতাবলম্বীরা এ দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। বাদশাহ সালমানের শাসনামলে এটাই প্রথম কোনো সংগঠিত রাজনৈতিক প্রতিরোধ।

রাজতন্ত্রের অধীনে থাকা সৌদি আরবে কোনো রাজনৈতিক বিরোধিতার সুযোগ নেই। সম্প্রতি ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমনপীড়ন আরো বেড়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ২৩ সেপ্টেম্বর রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিরোধী দল গঠনের ঘোষণা দেয়া হলো।

এ খবর জানিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা লিখেছে, উপসাগরীয় এ দেশটিতে এর আগে ২০০৭ ও ২০১১ সালে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু তখন তা দমন করে দেয়া হয়েছিল এবং উদ্যোক্তা সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছিল।

নতুন দল গঠন করা গ্রুপটি বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পার্টি গঠনের ঘোষণা দিচ্ছি, যেটি সৌদি আরবে গণতান্ত্রিক সরকার গঠনে কাজ করবে।’

নতুন দল গঠনের এ ধরনের উদ্যোগ হয়তো আরব দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী শাসক পরিবারটির পতনে তেমন কোনো কাজে আসবে না তবে এটি তাদের জন্য নতুন একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই সামনে এসেছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন লন্ডনভিত্তিক প্রখ্যাত মানবাধিকারকর্মী ইয়াহইয়া আসিরি। এর সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন, সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষাবিদ মাদায়ি আল-রশিদ, গবেষক সাঈদ বিন নাসের আল-গামদি, যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত আবদুল্লাহ আলাউদ এবং কানাডায় থাকা ওমর আবদুলআজিজ।

দলটির সাধারণ সম্পাদক আসিরি এএফপিকে বলেন, ‘এক চরম সংকটময় মুহূর্তে দেশকে রক্ষা করার তাগিদ থেকে আমরা এই দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া এবং শাসনকাজে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো।’

সৌদি বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা আসিরি লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘এএলকিউএসটি’র প্রতিষ্ঠাতা। এ সংগঠনটি রাষ্ট্রীয় নিগ্রহের শিকার ব্যক্তিদের, গ্রেফতার নারী কর্মীদের, শিক্ষাবিদদের ও রাজপরিবারের সদস্যদের তালিকা করছে।

ঘোষণাটি এমন সময় এলো যখন ‘রাজনীতির সুযোগ সব দিক দিয়েই অবরুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে’, বিবৃতিতে বলেছে দলটি।

দলটির মুখপাত্র রশিদ জানান, এর প্রতিষ্ঠাতাদের কারো রাজকীয় পরিবারের সাথে ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।

‘কিন্তু স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, স্থানীয় গণমাধ্যমকে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং গণমতামত স্তব্ধ করে দেয়াই এ গ্রুপ গঠনের অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে’, বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ২০১৭ সালের জুনে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী ঘোষণা পর থেকে তা আরো বেড়ে গেছে।

বিশেষ করে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড সৌদি আরবে মানবাধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকে নাড়া দিয়েছে।

সূত্র : আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement