ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বৈরুতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৭ আগস্ট ২০২০, ১১:৩৫
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বৃহস্পতিবার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
বৈরুতের সংসদ ভবনের কাছে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে কর্মকর্তারা।
বিক্ষোভকারীদের অনেকের মতে, মঙ্গলবার বৈরুতে হওয়া বিস্ফোরণের কারণ সরকারের অবহেলা।
ওই বিস্ফোরণে অন্তত ১৩৭ জন মারা যান এবং প্রায় ৫ হাজার মানুষ আহত হন।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন প্রায় ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বন্দরের কাছে অনিরাপদভাবে মজুদ করে রাখা ছিল ২০১৩ সাল থেকে।
ওই বিস্ফোরণে রাজধানী বৈরুতের কিছু এলাকা সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, এই ঘটনার তদন্তের কাজে এরই মধ্যে ১৬ জনকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
বিস্ফোরণের পর থেকে দুইজন কর্মকর্তা ও একজন এমপি পদত্যাগ করেছেন।
বুধবার জর্ডানে নিযুক্ত লেবাননের রাষ্ট্রদূতও পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ করার সময় তিনি মন্তব্য করেন, এই বিপর্যয় বুঝিয়ে দিয়েছে যে নেতৃত্বে বড় ধরণের পরিবর্তন প্রয়োজন।
অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কোথা থেকে এলো?
ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৩ সালে একটি জাহাজে করে এই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বৈরুত বন্দরে এসেছিল।
মলডোভিয়ার পতাকাবাহী মালবাহী জাহাজ এমভি রোসাস এই একই পরিমাণ রাসায়নিক- অর্থাৎ ২ হাজার ৭৫০ টন রাসায়নিক নিয়ে ২০১৩ সালে বৈরুত বন্দরে নোঙর করে।
জর্জিয়া থেকে জাহাজটি যাচ্ছিল মোজাম্বিকে এবং কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়ার কারণে সেটি বৈরুতে নোঙর করে।
রোসাস জাহাজটি পরিদর্শনের পর সেটিকে ওই বন্দর থেকে যাবার অনুমতি দেয়া হয়নি। এর কিছুদিন পরে জাহাজের মালিক জাহাজটি সেখানে পরিত্যাগ করে চলে যায় বলে জানাচ্ছে শিপঅ্যারেস্টেডডটকম নামের একটি ওয়েবসাইট।
আদালতের নির্দেশে ওই জাহাজের মালামাল ১২ নম্বর গুদামঘরে চালান করা হয়। ওই গুদামে মজুত রাসায়নিক নষ্ট করে ফেলার বা বিক্রি করে দেবার কথা ছিল।
বন্দরের প্রধান এবং কাস্টমস বিভাগের প্রধান বলেন, তারা বিচার বিভাগের কাছে একাধিকবার এই রাসায়নিক, বিদেশে রফতানি করার বা বন্দর এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়ার আবেদন জানিয়ে চিঠি লেখেন।
বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার হাসান কোরায়তেম ওটিভি'কে বলেন, মজুদ করা মালামাল বিপজ্জনক, তবে তা যে এই মাত্রার বিপজ্জনক তা জানা ছিল না তাদের।
উদ্ধারকার্যের সবশেষ কী অবস্থা?
বৈরুতে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে দুর্ঘটনার ভুক্তভোগীদের উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। বিস্ফোরণের জায়গার আশেপাশের একটা বড় অংশ বদ্ধ করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিস্ফোরণের দুই দিন পর ফরাসি একটি উদ্ধারকারী দল জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরো ভুক্তভোগী উদ্ধার করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর মধ্যে বৈরুতের হাসপাতালগুলো অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।
বৈরুতের গভর্নর মারওয়ান আবোউদ জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের ফলে শহরে তিন লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘বৈরুতের খাবার প্রয়োজন, বৈরুতের কাপড় প্রয়োজন। ঘরবাড়ি তৈরির উপকরণ প্রয়োজন। বৈরুতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জায়গা প্রয়োজন, নিজের লোকেদের জন্যও আশ্রয় প্রয়োজন।’
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা